০৮:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে তেল পরিশোধন তিনগুণ করতে চায় বিপিসি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:৩২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪১৮৯ বার দেখা হয়েছে

টানা ১০ বছরের বেশি সময় নানা উদ্যোগ গ্রহণ আর বাতিলের পর আবারও আলোচনায় এসেছে দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের দ্বিতীয় ইউনিট (ইআরএল-২)। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ইআরএল ইউনিট-২ উৎপাদনে আনতে চায় তারা। এটি চালু হলে দেশেই তেল পরিশোধনের সক্ষমতা তিনগুণ বাড়বে। এখন সেভাবেই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

জ্বালানি বিভাগের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ক্রড বা অপরিশোধিত তেল আমদানি করে দেশে পরিশোধন করলে প্রতি লিটারে অন্তত ১০ টাকা সাশ্রয় সম্ভব। এতে প্রতি ১০ লিটারে অন্তত ১ ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব। দেশে তেল পরিশোধন করলে বিপুল পরিমাণ সাশ্রয় সম্ভব। আবার তেল পরিশোধন করলে উপজাত হিসেবে যেসব পেট্রোলিয়াম পণ্যও পাওয়া যাবে। সেগুলো দিয়ে দেশের অন্য চাহিদা মেটানো সম্ভব। সেক্ষেত্রেও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় সম্ভব হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সূত্র বলছে, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইআরএল, যা বছরে মাত্র ১৫ লাখ টন তেল পরিশোধন করতে পারে। কিন্তু এখন দেশের মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা ৭০ লাখ টন। বিদেশ থেকে সরাসরি পরিশোধিত তেল কিনে এনেই চাহিদা মেটাতে হয় বিপিসিকে।

বিপিসি সূত্র বলছে, দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিশোধিত জ্বালানি আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং দেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রক্রিয়াকরণ করে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদনের জন্য ইআরএল ইউনিট-২ নামে একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পরিশোধনে বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা ৪৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এর বাইরে সরকার ভারত থেকে ১০ লাখ টন ডিজেল কেনার পরিকল্পনা করছে। সব মিলিয়ে তখন ৫৫ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়া দেশের গ্যাস ক্ষেত্র থেকে পাওয়া উপজাতও পরিশোধন করতে পারলে অবশিষ্ট চাহিদার সামান্য পরিমাণ পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করলেই চলবে।

সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিকে ইআরএল ইউনিট-২ নির্মাণের অগ্রগতি জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এতে বিপিসির তরফ থেকে এই পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।

বিপিসির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন নিশ্চিত করতে না পারায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে নানা সময়ে নানা সংকটের কারণে প্রকল্পটি আর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে এবার বিপিসি এবং ইআরএল এর নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার চিন্তা করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন: উপ-পরিচালক হলেন দুদকের আট কর্মকর্তা

২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এবং ফ্রেঞ্চ প্রকৌশল কোম্পানি টেকনিপের মধ্যে প্রস্তাবিত ইআরএল ইউনিট-২ এর ফ্রন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন (ফিড)-এর চুক্তি সই হয়। চুক্তিটিতে ৩৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পর নকশা প্রণয়নের কাজ দেওয়া হয়। ১৯৬৮ সালে এই প্রতিষ্ঠানটিই ইআরএল-এর বর্তমান ইউনিটের নকশা প্রণয়ন এবং নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছিল।

জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সৌদি আর দুবাই-এর কিছু পরিশোধনাগার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছিল। পরে তাদের বেশিরভাগই বলছে, এত ছোট আকারের পরিশোধনাগার তারা নির্মাণ করে না। এজন্য প্রকল্পটি তাদের কাছে গুরুত্ব পায়নি।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে তেল পরিশোধন তিনগুণ করতে চায় বিপিসি

আপডেট: ০২:৩২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩

টানা ১০ বছরের বেশি সময় নানা উদ্যোগ গ্রহণ আর বাতিলের পর আবারও আলোচনায় এসেছে দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের দ্বিতীয় ইউনিট (ইআরএল-২)। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ইআরএল ইউনিট-২ উৎপাদনে আনতে চায় তারা। এটি চালু হলে দেশেই তেল পরিশোধনের সক্ষমতা তিনগুণ বাড়বে। এখন সেভাবেই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

জ্বালানি বিভাগের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ক্রড বা অপরিশোধিত তেল আমদানি করে দেশে পরিশোধন করলে প্রতি লিটারে অন্তত ১০ টাকা সাশ্রয় সম্ভব। এতে প্রতি ১০ লিটারে অন্তত ১ ডলার সাশ্রয় করা সম্ভব। দেশে তেল পরিশোধন করলে বিপুল পরিমাণ সাশ্রয় সম্ভব। আবার তেল পরিশোধন করলে উপজাত হিসেবে যেসব পেট্রোলিয়াম পণ্যও পাওয়া যাবে। সেগুলো দিয়ে দেশের অন্য চাহিদা মেটানো সম্ভব। সেক্ষেত্রেও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় সম্ভব হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সূত্র বলছে, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইআরএল, যা বছরে মাত্র ১৫ লাখ টন তেল পরিশোধন করতে পারে। কিন্তু এখন দেশের মোট জ্বালানি তেলের চাহিদা ৭০ লাখ টন। বিদেশ থেকে সরাসরি পরিশোধিত তেল কিনে এনেই চাহিদা মেটাতে হয় বিপিসিকে।

বিপিসি সূত্র বলছে, দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিশোধিত জ্বালানি আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং দেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রক্রিয়াকরণ করে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদনের জন্য ইআরএল ইউনিট-২ নামে একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পরিশোধনে বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা ৪৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এর বাইরে সরকার ভারত থেকে ১০ লাখ টন ডিজেল কেনার পরিকল্পনা করছে। সব মিলিয়ে তখন ৫৫ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়া দেশের গ্যাস ক্ষেত্র থেকে পাওয়া উপজাতও পরিশোধন করতে পারলে অবশিষ্ট চাহিদার সামান্য পরিমাণ পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করলেই চলবে।

সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিকে ইআরএল ইউনিট-২ নির্মাণের অগ্রগতি জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এতে বিপিসির তরফ থেকে এই পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।

বিপিসির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন নিশ্চিত করতে না পারায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে নানা সময়ে নানা সংকটের কারণে প্রকল্পটি আর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে এবার বিপিসি এবং ইআরএল এর নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার চিন্তা করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন: উপ-পরিচালক হলেন দুদকের আট কর্মকর্তা

২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এবং ফ্রেঞ্চ প্রকৌশল কোম্পানি টেকনিপের মধ্যে প্রস্তাবিত ইআরএল ইউনিট-২ এর ফ্রন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন (ফিড)-এর চুক্তি সই হয়। চুক্তিটিতে ৩৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পর নকশা প্রণয়নের কাজ দেওয়া হয়। ১৯৬৮ সালে এই প্রতিষ্ঠানটিই ইআরএল-এর বর্তমান ইউনিটের নকশা প্রণয়ন এবং নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছিল।

জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সৌদি আর দুবাই-এর কিছু পরিশোধনাগার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখিয়েছিল। পরে তাদের বেশিরভাগই বলছে, এত ছোট আকারের পরিশোধনাগার তারা নির্মাণ করে না। এজন্য প্রকল্পটি তাদের কাছে গুরুত্ব পায়নি।

ঢাকা/এসএ