০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

প্রত্যাশা পূরণের ইতিহাস গড়লো ব্যাংক খাত!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৯:১৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মে ২০২১
  • / ৪৩২০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণে ইতিহাস গড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো। বর্তমান সময়ে এ খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণের প্রবণতা আরও বেড়েছে। এর আগে কখনও কোনো খাতের এমনকি ব্যাংকিং খাতেরও এত বিপুল পরিমাণে ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণের ইতিহাস নেই। এদিকে আলোচ্য সময়ে বেশকিছু ব্যাংক যে পরিমাণ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে সেটি সঞ্চয়ের সুদহারের চেয়ে বেশি। এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারদর এখন অভিহিত মূল্যের কাছাকাছি বা অর্ধেকেরও কম হওয়ায় এখন ব্যাংকে টাকার রাখার চেয়ে শেয়ার কিনে রাখাই বেশি লাভজনক হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

ব্যাংকগুলোর ডিভিডেন্ডের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২৩টি ব্যাংক ২ হাজার ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪৮ টাকা ২০ পয়সা ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১৬টি ব্যাংক ক্যাশ ডিভিডেন্ডের পাশাপাশি স্টক ডিভিডেন্ডও দিতে যাচ্ছে। আর সাতটি ব্যাংক কেবল ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

আর তিনটি ব্যাংক কেবল স্টক ডিভিডেন্ড এবং একটি ব্যাংক ডিভিডেন্ড না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এছাড়াও আরো দুটি ব্যাংক গত বছর ২০০ কোটি টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণ করেছিল, যেগুলো এখনও ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত সভা করেনি। তারা গত বছরের মতোই ডিভিডেন্ড দিলে শেষ পর্যন্ত ক্যাশ ডিভিডেন্ড আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এখন পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মোট ২৭টি ব্যাংক। আরও চারটির ডিভিডেন্ড ঘোষণা সংক্রান্ত সভা বাকি আছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, এবার করোনা পরিস্থিতিতে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সার বেশি ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এই সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে তিনটি ব্যাংক। এগুলো হলো সিটি, ইবিএল ও যমুনা ব্যাংক।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে যাচ্ছে সিটি ব্যাংক। তারা ১৭৭ কোটি টাকারও বেশি বিতরণ করবে। এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংক ১৬৯ কোটি, ইসলামী ব্যাংক, ইবিএল ১৪২ কোটি, ব্র্যাক ১৩২ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৩০ কোটি টাকা ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে যাচ্ছে।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো- এখন ব্যাংকে টাকা রাখলে বছরে সাড়ে ৪ থেকে ৬ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। অথচ শেয়ারমূল্যের তুলনায় ক্যাশ ডিভিডেন্ড পাওয়া যাচ্ছে এর চেয়ে বেশি হারে।

গত এক বছরে প্রাইম ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ১৪.২০ টাকা থেকে ১৮.৬০ টাকা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা এবার দেড় টাকা করে ডিভিডেন্ড পেতে যাচ্ছেন। অর্থাৎ শেয়ারদরের তুলনায় ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ৮ থেকে সাড়ে ১০ শতাংশ।

প্রিমিয়ার ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি ১.২৫ টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। গত এক বছরে এই ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ৯.৯০ টাকা থেকে ১৪.২০ টাকা। এই হিসাবে এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা ৯ থেকে ১২.৬০ শতাংশ মুনাফা পাবেন।

গত এক বছরে মার্কেন্টাইলে ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ১০.৬০ টাকা থেকে ১৪.২০ টাকা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা এক টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেতে যাচ্ছেন। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীদের ডিভিডেন্ড ইল্ড ৭ থেকে ৯.৪০ শতাংশ।

গত ছয় বছর ধরে যমুনা ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে।
যমুনা ব্যাংকের দাম গত এক বছরে সর্বনিম্ন ছিল ১৬ টাকা, আর সর্বোচ্চ ২০.৪০ টাকা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেতে যাচ্ছেন ১.৭৫ টাকা।

যাদের শেয়ার কেনা ১৬ টাকায়, তারা শেয়ারমূল্যের প্রায় ১১ শতাংশ পাচ্ছেন ডিভিডেন্ড হিসেবে, আর যাদের কেনা ২০.৪০ টাকায়, তারা পাচ্ছেন ৮.৫০ শতাংশ।

এ রকম আরও অন্তত ১০টি ব্যাংক আছে যেগুলোর ডিভিডেন্ড ইল্ড বাজারে বর্তমানে সুদহারের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি পাওয়া গেছে স্টক ডিভিডেন্ড।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তবে এতো বেশি হারে ডিভিডেন্ড বিতরণ করলেও ব্যাংকের শেয়ারের দর একেবারে তলানিতে। ডিএসই’র তথ্যানুযায়ী, নিয়মিত ডিভিডেন্ড দিয়ে আসা তিনটি ব্যাংকের শেয়ারদর এখন ১০ টাকার নিচে, একটি ব্যাংকের ১০ টাকা, ১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে দাম আছে নয়টির, সাতটি ব্যাংকের শেয়ারদর এখন ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। আরও একটি লোকসানি ব্যাংকের শেয়ারদর ৫ টাকার নিচে। এর মধ্যে একটি কেবল এবার ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বাকি সবগুলোই ১০ বা তার চেয়ে বেশি হারে ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ২০ ও একটি ১৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর মধ্যে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি দেড় টাকা করে ডিভিডেন্ড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ব্যাংকটির শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৪৯ লাখ ২ হাজার ১৮৫টি। এই হিসাবে ব্যাংকটি ডিভিডেন্ড দেবে ১৫৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ টাকা ৫০ পয়সা।

ব্যাংক এশিয়া শেয়ার প্রতি ডিভিডেন্ড দিচ্ছে ১ টাকা করে। এই হিসাবে ব্যাংকটি বিতরণ করবে ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ ৬ হাজার ৮৬০ টাকা।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক ডিভিডেন্ড বিতরণ করবে ১৩২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৪৭৬ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি ডিভিডেন্ড দিচ্ছে সিটি ব্যাংক। শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা হিসেবে তারা বিতরণ করবে ১৭৭ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৬ টাকা ৭৫ পয়সা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি স্টক ডিভিডেন্ডও দেবে ব্যাংকটি।
ঢাকা ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা করে বিতরণ করবে মোট ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬ টাকা। পাশাপাশি ৬ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে ছয়টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি দেড় টাকা করে ডাচ বাংলা ব্যাংক দিচ্ছে ৯৪ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাশাপাশি ১৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দিয়েছে ব্যাংকটি।

ইবিএল শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা করে বিতরণ করবে মোট ১৪২ কোটি ৬ লাখ ৪৯ হাজার ২০৬ টাকা। পাশাপাশি ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ৩৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

এক্সিম ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা করে ডিভিডেন্ড দেবে মোট ১০৫ কোটি ৯১ লাখ ৮৮ হাজার ৩০১ টাকা। পাশাপাশি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

ইসলামী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা করে বিতরণ করবে মোট ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮ টাকা।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা করে ক্যাশ ও প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ার দিতে যাচ্ছে। এই হিসেবে এই ব্যাংকটি বিতরণ করবে মোট ৪৭ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ১০১ টাকা ৫০ পয়সা।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা করে মোট ১৩১ কোটি ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮৭ টাকা ৫০ পয়সা বিতরণ করবে যমুনা ব্যাংক।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা করে বিতরণ করবে মোট ১০৩ কোটি ৩২ লাখ ১৭ হাজার ২৮ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা করে মোট ৭০ কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬০ টাকা ৭৫ পয়সা ডিভিডেন্ড দেবে এনসিসি ব্যাংক। পাশাপাশি ৭.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

নতুন তালিকাভুক্ত এনআরবিসি ব্যাংক বিতরণ করবে ৫২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৮ টাকা ৫০ পয়সা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা হিসেবে ওয়ান ব্যাংক দিচ্ছে মোট ৫৩ কোটি ১২ লাখ সাত হাজার ৮৪৩ টাকা। সঙ্গে সাড়ে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ারও দেয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। এই হিসাবে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১১টি বোনাস শেয়ার পাওয়া যাবে।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা হারে ১৩০ কোটি টাকা ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার ৪০৮ টাকা ৭৫ পয়সা ডিভিডেন্ড দেবে প্রিমিয়ার ব্যাংক। পাশাপাশি ৭.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

প্রাইম ব্যাংক শেয়ার প্রতি দেড় টাকা হারে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ১৬৯ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ২১৫ টাকা ৫০ পয়সা।

পূবালী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা হারে মোট ১২৮ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭৩ কোটি ৭৫ পয়সা ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে যাচ্ছে।

শেয়ার প্রতি ৭০ পয়সা করে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে মোট ৬৮ কোটি ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৩ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দিয়েছে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা করে এসআইবিএল ডিভিডেন্ড দেবে মোট ৪৬ কোটি ৯০ লাখ চার হাজার ২১২ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি টাকা হারে সাউথ ইস্ট ব্যাংক দিতে যাচ্ছে মোট ১১৮ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২২ টাকা।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে কম ডিভিডেন্ড দিতে যাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। এই ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি ২৫ পয়সা করে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ২৫ কোটি ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৯৭ টাকা। পাশাপাশি ২.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

উত্তরা ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা করে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ৬২ কোটি ৭৪ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। পাশাপাশি ১২.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ২৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

আরও তিনটি ব্যাংক এখন পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে যারা কেবল বোনাস শেয়ার দেবে। এর মধ্যে এবি ও আইএফআইসি ব্যাংক কেবল ৫ শতাংশ হারে (প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি) এবং মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে (প্রতি ১০ শেয়ারে একটি) বোনাস শেয়ার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কেবল স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে এমটিবি, এবি ও আইএফআইসি ব্যাংক
টানা লোকসানে থাকা আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবারও শেয়ারধারীদের মধ্যে কোনো ডিভিডেন্ড বিতরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ন্যাশনাল, রূপালী, ট্রাস্ট ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবি এখনও ডিভিডেন্ড ঘোষণা সংক্রান্ত সভার কথাই জানায়নি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ব্যাংকিং খাতের বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাইলে তালিকাভুক্ত ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যার আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজারে অন্যান্য খাতের তুলনায় ব্যাংক খাত এখনও বিনিয়োগযোগ্য। ডিভিডেন্ডের তুলনায় ব্যাংকের চেয়ে কম দামে অন্য কোনো শেয়ার নেই বললেই চলে। কিন্তু এরপরেও বিনিয়োগকারীরা সেদিকে যেতে চান না। অনেকে গুজবনির্ভর বিনিয়োগে যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের মনোবল ধরে রাখতে প্রায় প্রতিটি ব্যাংক ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ব্যাংকের আর্থিক হিসাব অনেকটাই স্বচ্ছ। যে কারণে এ খাত থেকে প্রতি বছর ভালো ডিভিডেন্ড দেয়া হয়।’

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ড. আবু আহমেদ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে যে লেনদেন হয় তার অধিকাংশই কারসাজি করে হয়। ব্যাংকে কারসাজি করার সুযোগ কম, কারণ তাদের ইক্যুইটি বেশি। বিনিয়োগকারীরা এখন স্বল্প সময়ের লেনদেন করে মুনাফা তুলে নেয়ার পক্ষে, যা ব্যাংকে হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, , ‘ব্যাংকগুলো যখন বেশি বেশি স্টক দিচ্ছিল, তখন ক্যাশ ডিভিডেন্ডের বিষয়টি এসেছিল। এতে পুঁজিবাজারের জন্য ভালো হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা অন্তত ডিভিডেন্ড পাওয়ার আশায় ব্যাংকে বিনিয়োগ করবেন।’

ঢাকা/জেএইচ

শেয়ার করুন

x
English Version

প্রত্যাশা পূরণের ইতিহাস গড়লো ব্যাংক খাত!

আপডেট: ০৯:১৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মে ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণে ইতিহাস গড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো। বর্তমান সময়ে এ খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণের প্রবণতা আরও বেড়েছে। এর আগে কখনও কোনো খাতের এমনকি ব্যাংকিং খাতেরও এত বিপুল পরিমাণে ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণের ইতিহাস নেই। এদিকে আলোচ্য সময়ে বেশকিছু ব্যাংক যে পরিমাণ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে সেটি সঞ্চয়ের সুদহারের চেয়ে বেশি। এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারদর এখন অভিহিত মূল্যের কাছাকাছি বা অর্ধেকেরও কম হওয়ায় এখন ব্যাংকে টাকার রাখার চেয়ে শেয়ার কিনে রাখাই বেশি লাভজনক হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

ব্যাংকগুলোর ডিভিডেন্ডের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২৩টি ব্যাংক ২ হাজার ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪৮ টাকা ২০ পয়সা ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১৬টি ব্যাংক ক্যাশ ডিভিডেন্ডের পাশাপাশি স্টক ডিভিডেন্ডও দিতে যাচ্ছে। আর সাতটি ব্যাংক কেবল ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

আর তিনটি ব্যাংক কেবল স্টক ডিভিডেন্ড এবং একটি ব্যাংক ডিভিডেন্ড না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

এছাড়াও আরো দুটি ব্যাংক গত বছর ২০০ কোটি টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণ করেছিল, যেগুলো এখনও ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত সভা করেনি। তারা গত বছরের মতোই ডিভিডেন্ড দিলে শেষ পর্যন্ত ক্যাশ ডিভিডেন্ড আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এখন পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মোট ২৭টি ব্যাংক। আরও চারটির ডিভিডেন্ড ঘোষণা সংক্রান্ত সভা বাকি আছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, এবার করোনা পরিস্থিতিতে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সার বেশি ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এই সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে তিনটি ব্যাংক। এগুলো হলো সিটি, ইবিএল ও যমুনা ব্যাংক।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে যাচ্ছে সিটি ব্যাংক। তারা ১৭৭ কোটি টাকারও বেশি বিতরণ করবে। এ ছাড়া প্রাইম ব্যাংক ১৬৯ কোটি, ইসলামী ব্যাংক, ইবিএল ১৪২ কোটি, ব্র্যাক ১৩২ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৩০ কোটি টাকা ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে যাচ্ছে।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো- এখন ব্যাংকে টাকা রাখলে বছরে সাড়ে ৪ থেকে ৬ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। অথচ শেয়ারমূল্যের তুলনায় ক্যাশ ডিভিডেন্ড পাওয়া যাচ্ছে এর চেয়ে বেশি হারে।

গত এক বছরে প্রাইম ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ১৪.২০ টাকা থেকে ১৮.৬০ টাকা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা এবার দেড় টাকা করে ডিভিডেন্ড পেতে যাচ্ছেন। অর্থাৎ শেয়ারদরের তুলনায় ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ৮ থেকে সাড়ে ১০ শতাংশ।

প্রিমিয়ার ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি ১.২৫ টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। গত এক বছরে এই ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ৯.৯০ টাকা থেকে ১৪.২০ টাকা। এই হিসাবে এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা ৯ থেকে ১২.৬০ শতাংশ মুনাফা পাবেন।

গত এক বছরে মার্কেন্টাইলে ব্যাংকের শেয়ারদর ছিল ১০.৬০ টাকা থেকে ১৪.২০ টাকা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা এক টাকা ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেতে যাচ্ছেন। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীদের ডিভিডেন্ড ইল্ড ৭ থেকে ৯.৪০ শতাংশ।

গত ছয় বছর ধরে যমুনা ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে।
যমুনা ব্যাংকের দাম গত এক বছরে সর্বনিম্ন ছিল ১৬ টাকা, আর সর্বোচ্চ ২০.৪০ টাকা। এই ব্যাংকের শেয়ারধারীরা ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেতে যাচ্ছেন ১.৭৫ টাকা।

যাদের শেয়ার কেনা ১৬ টাকায়, তারা শেয়ারমূল্যের প্রায় ১১ শতাংশ পাচ্ছেন ডিভিডেন্ড হিসেবে, আর যাদের কেনা ২০.৪০ টাকায়, তারা পাচ্ছেন ৮.৫০ শতাংশ।

এ রকম আরও অন্তত ১০টি ব্যাংক আছে যেগুলোর ডিভিডেন্ড ইল্ড বাজারে বর্তমানে সুদহারের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি পাওয়া গেছে স্টক ডিভিডেন্ড।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তবে এতো বেশি হারে ডিভিডেন্ড বিতরণ করলেও ব্যাংকের শেয়ারের দর একেবারে তলানিতে। ডিএসই’র তথ্যানুযায়ী, নিয়মিত ডিভিডেন্ড দিয়ে আসা তিনটি ব্যাংকের শেয়ারদর এখন ১০ টাকার নিচে, একটি ব্যাংকের ১০ টাকা, ১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে দাম আছে নয়টির, সাতটি ব্যাংকের শেয়ারদর এখন ১৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। আরও একটি লোকসানি ব্যাংকের শেয়ারদর ৫ টাকার নিচে। এর মধ্যে একটি কেবল এবার ৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বাকি সবগুলোই ১০ বা তার চেয়ে বেশি হারে ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ২০ ও একটি ১৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর মধ্যে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এবার শেয়ার প্রতি দেড় টাকা করে ডিভিডেন্ড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ব্যাংকটির শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৪৯ লাখ ২ হাজার ১৮৫টি। এই হিসাবে ব্যাংকটি ডিভিডেন্ড দেবে ১৫৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ টাকা ৫০ পয়সা।

ব্যাংক এশিয়া শেয়ার প্রতি ডিভিডেন্ড দিচ্ছে ১ টাকা করে। এই হিসাবে ব্যাংকটি বিতরণ করবে ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ ৬ হাজার ৮৬০ টাকা।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক ডিভিডেন্ড বিতরণ করবে ১৩২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৮ হাজার ৪৭৬ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি ডিভিডেন্ড দিচ্ছে সিটি ব্যাংক। শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা হিসেবে তারা বিতরণ করবে ১৭৭ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৬ টাকা ৭৫ পয়সা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি স্টক ডিভিডেন্ডও দেবে ব্যাংকটি।
ঢাকা ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা করে বিতরণ করবে মোট ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬ টাকা। পাশাপাশি ৬ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে ছয়টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি দেড় টাকা করে ডাচ বাংলা ব্যাংক দিচ্ছে ৯৪ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাশাপাশি ১৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দিয়েছে ব্যাংকটি।

ইবিএল শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা করে বিতরণ করবে মোট ১৪২ কোটি ৬ লাখ ৪৯ হাজার ২০৬ টাকা। পাশাপাশি ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ৩৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

এক্সিম ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা করে ডিভিডেন্ড দেবে মোট ১০৫ কোটি ৯১ লাখ ৮৮ হাজার ৩০১ টাকা। পাশাপাশি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

ইসলামী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা করে বিতরণ করবে মোট ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮ টাকা।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা করে ক্যাশ ও প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ার দিতে যাচ্ছে। এই হিসেবে এই ব্যাংকটি বিতরণ করবে মোট ৪৭ কোটি ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ১০১ টাকা ৫০ পয়সা।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা করে মোট ১৩১ কোটি ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮৭ টাকা ৫০ পয়সা বিতরণ করবে যমুনা ব্যাংক।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা করে বিতরণ করবে মোট ১০৩ কোটি ৩২ লাখ ১৭ হাজার ২৮ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৭৫ পয়সা করে মোট ৭০ কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬০ টাকা ৭৫ পয়সা ডিভিডেন্ড দেবে এনসিসি ব্যাংক। পাশাপাশি ৭.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

নতুন তালিকাভুক্ত এনআরবিসি ব্যাংক বিতরণ করবে ৫২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৮ টাকা ৫০ পয়সা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা হিসেবে ওয়ান ব্যাংক দিচ্ছে মোট ৫৩ কোটি ১২ লাখ সাত হাজার ৮৪৩ টাকা। সঙ্গে সাড়ে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ারও দেয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। এই হিসাবে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১১টি বোনাস শেয়ার পাওয়া যাবে।

শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা হারে ১৩০ কোটি টাকা ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার ৪০৮ টাকা ৭৫ পয়সা ডিভিডেন্ড দেবে প্রিমিয়ার ব্যাংক। পাশাপাশি ৭.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ১৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

প্রাইম ব্যাংক শেয়ার প্রতি দেড় টাকা হারে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ১৬৯ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার ২১৫ টাকা ৫০ পয়সা।

পূবালী ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা হারে মোট ১২৮ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭৩ কোটি ৭৫ পয়সা ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে যাচ্ছে।

শেয়ার প্রতি ৭০ পয়সা করে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে মোট ৬৮ কোটি ৪৩ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৩ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দিয়েছে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা করে এসআইবিএল ডিভিডেন্ড দেবে মোট ৪৬ কোটি ৯০ লাখ চার হাজার ২১২ টাকা। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

শেয়ার প্রতি টাকা হারে সাউথ ইস্ট ব্যাংক দিতে যাচ্ছে মোট ১১৮ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২২ টাকা।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে কম ডিভিডেন্ড দিতে যাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। এই ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি ২৫ পয়সা করে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ২৫ কোটি ১৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৯৭ টাকা। পাশাপাশি ২.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে পাঁচটি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

উত্তরা ব্যাংক শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৫ পয়সা করে বিতরণ করতে যাচ্ছে মোট ৬২ কোটি ৭৪ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। পাশাপাশি ১২.৫ শতাংশ হারে প্রতি ২০০ শেয়ারে ২৫টি বোনাস শেয়ারও দেবে ব্যাংকটি।

আরও তিনটি ব্যাংক এখন পর্যন্ত ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে যারা কেবল বোনাস শেয়ার দেবে। এর মধ্যে এবি ও আইএফআইসি ব্যাংক কেবল ৫ শতাংশ হারে (প্রতি ১০০ শেয়ারে পাঁচটি) এবং মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে (প্রতি ১০ শেয়ারে একটি) বোনাস শেয়ার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কেবল স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে এমটিবি, এবি ও আইএফআইসি ব্যাংক
টানা লোকসানে থাকা আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবারও শেয়ারধারীদের মধ্যে কোনো ডিভিডেন্ড বিতরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ন্যাশনাল, রূপালী, ট্রাস্ট ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবি এখনও ডিভিডেন্ড ঘোষণা সংক্রান্ত সভার কথাই জানায়নি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ব্যাংকিং খাতের বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাইলে তালিকাভুক্ত ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যার আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজারে অন্যান্য খাতের তুলনায় ব্যাংক খাত এখনও বিনিয়োগযোগ্য। ডিভিডেন্ডের তুলনায় ব্যাংকের চেয়ে কম দামে অন্য কোনো শেয়ার নেই বললেই চলে। কিন্তু এরপরেও বিনিয়োগকারীরা সেদিকে যেতে চান না। অনেকে গুজবনির্ভর বিনিয়োগে যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের মনোবল ধরে রাখতে প্রায় প্রতিটি ব্যাংক ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ব্যাংকের আর্থিক হিসাব অনেকটাই স্বচ্ছ। যে কারণে এ খাত থেকে প্রতি বছর ভালো ডিভিডেন্ড দেয়া হয়।’

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ড. আবু আহমেদ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে যে লেনদেন হয় তার অধিকাংশই কারসাজি করে হয়। ব্যাংকে কারসাজি করার সুযোগ কম, কারণ তাদের ইক্যুইটি বেশি। বিনিয়োগকারীরা এখন স্বল্প সময়ের লেনদেন করে মুনাফা তুলে নেয়ার পক্ষে, যা ব্যাংকে হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, , ‘ব্যাংকগুলো যখন বেশি বেশি স্টক দিচ্ছিল, তখন ক্যাশ ডিভিডেন্ডের বিষয়টি এসেছিল। এতে পুঁজিবাজারের জন্য ভালো হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা অন্তত ডিভিডেন্ড পাওয়ার আশায় ব্যাংকে বিনিয়োগ করবেন।’

ঢাকা/জেএইচ