০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল পাকিস্তান

প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা: নিহত ৮ ও আটক ১৯০০

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৪৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
  • / ৪২৪০ বার দেখা হয়েছে

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে লাহোরের মডেল টাউনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। ভোররাতে এই আক্রমণ হয়। তখন বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। প্রায় পাঁচশ বিক্ষোভকারী সেখানে গিয়ে বাড়ির সামনে পার্ক করে রাখা গাড়িগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

দেশটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন তার সমর্থকরা। দেশব্যাপী বিক্ষোভে কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৯০ জনেরও বেশি। বিক্ষোভ-সহিংসতার মধ্যে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। ইতোমধ্যে এক হাজার ৯০০ বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ইমরান খান গ্রেপ্তার হওয়ার পর রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে খাইবার পাখতুনখোয়া সেনাবাহিনী আহ্বান করেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, ইমরানের সমর্থকেরা যেভাবে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছে, আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, যেভাবে হিংসাশ্রয়ী বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তাতে তিনি সেনা নামাতে বাধ্য হলেন। আপাতত ইসলামাবাদ শহর এবং পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়াতে সেনা নামানো হয়েছে।

সেনার তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইমরানের সমর্থকেরা সেনার সদরদপ্তর, বিভিন্ন শিবির আক্রমণ করেছে। পরিকল্পনামাফিক আক্রমণ হচ্ছে। সেনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া হচ্ছে। তারা সংযত থেকেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে সেনাকে বদনাম করা হচ্ছে। কারা এর পিছনে আছে তা সেনা জানে। এবার কড়াহাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে।

এক বিবৃতিতে পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, প্রদেশে সরকারি সম্পত্তি, পুলিশ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রদেশজুড়ে সহিংস কর্মকাণ্ড, ভাঙচুর, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতিতে জড়িত দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের হামলায় ১৩০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ প্রদেশজুড়ে ৯৪৫ জন আইন ভঙ্গকারী ও দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করেছে।

বিবিসি বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের অনেক এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ জনতা সামরিক সম্পত্তিতে হামলার পর কঠোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে ইমরান খানের গ্রেপ্তার নাটকীয়ভাবে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এবং সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।

জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গুতেরেস বলেছেন, তিনি পাকিস্তানের সব রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন করছেন, তারা যাতে শান্তিপূর্ণ পথে বিক্ষোভ দেখায়। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ইমরানের ক্ষেত্রেও যেন আইনি পথেই চলা হয়।

আরও পড়ুন: ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল টোঙ্গা

ইমরান খানকে গত মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ইমরানকে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার মাথায় ও পায়ে আঘাত করা হয়েছে। তার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাকিস্তান।

রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা অমান্য করে বিক্ষোভ করেন পিটিআই দলের সমর্থকরা। এ ছাড়া করাচি, লাহোর, পেশোয়ারসহ ছোট-বড় সব শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেছে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। সূত্র :ডিডাব্লিউ, এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডন

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল পাকিস্তান

প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা: নিহত ৮ ও আটক ১৯০০

আপডেট: ০৪:৪৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে লাহোরের মডেল টাউনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। ভোররাতে এই আক্রমণ হয়। তখন বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। প্রায় পাঁচশ বিক্ষোভকারী সেখানে গিয়ে বাড়ির সামনে পার্ক করে রাখা গাড়িগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

দেশটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন তার সমর্থকরা। দেশব্যাপী বিক্ষোভে কমপক্ষে আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৯০ জনেরও বেশি। বিক্ষোভ-সহিংসতার মধ্যে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। ইতোমধ্যে এক হাজার ৯০০ বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ইমরান খান গ্রেপ্তার হওয়ার পর রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে খাইবার পাখতুনখোয়া সেনাবাহিনী আহ্বান করেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, ইমরানের সমর্থকেরা যেভাবে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছে, আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, যেভাবে হিংসাশ্রয়ী বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তাতে তিনি সেনা নামাতে বাধ্য হলেন। আপাতত ইসলামাবাদ শহর এবং পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়াতে সেনা নামানো হয়েছে।

সেনার তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ইমরানের সমর্থকেরা সেনার সদরদপ্তর, বিভিন্ন শিবির আক্রমণ করেছে। পরিকল্পনামাফিক আক্রমণ হচ্ছে। সেনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া হচ্ছে। তারা সংযত থেকেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে সেনাকে বদনাম করা হচ্ছে। কারা এর পিছনে আছে তা সেনা জানে। এবার কড়াহাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে।

এক বিবৃতিতে পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, প্রদেশে সরকারি সম্পত্তি, পুলিশ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রদেশজুড়ে সহিংস কর্মকাণ্ড, ভাঙচুর, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতিতে জড়িত দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের হামলায় ১৩০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ প্রদেশজুড়ে ৯৪৫ জন আইন ভঙ্গকারী ও দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করেছে।

বিবিসি বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের অনেক এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ জনতা সামরিক সম্পত্তিতে হামলার পর কঠোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে ইমরান খানের গ্রেপ্তার নাটকীয়ভাবে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এবং সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।

জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গুতেরেস বলেছেন, তিনি পাকিস্তানের সব রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন করছেন, তারা যাতে শান্তিপূর্ণ পথে বিক্ষোভ দেখায়। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ইমরানের ক্ষেত্রেও যেন আইনি পথেই চলা হয়।

আরও পড়ুন: ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল টোঙ্গা

ইমরান খানকে গত মঙ্গলবার বিকেলে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় ইমরানকে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার মাথায় ও পায়ে আঘাত করা হয়েছে। তার গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাকিস্তান।

রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা অমান্য করে বিক্ষোভ করেন পিটিআই দলের সমর্থকরা। এ ছাড়া করাচি, লাহোর, পেশোয়ারসহ ছোট-বড় সব শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেছে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। সূত্র :ডিডাব্লিউ, এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডন

ঢাকা/এসএ