০২:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়ার সিদ্ধান্ত কাল

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৫৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৪১৭৭ বার দেখা হয়েছে

নামিতে বিধ্বস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়ার কথা আগে থেকেই জানিয়ে আসছিল জাপান। তবে, কবে থেকে এই পানি ছাড়া হবে সেই ব্যাপারে কিছুই জানাচ্ছিল না সূর্যোদয়ের দেশটি। তেজস্ক্রিয় পানি ছাড়া নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বৈঠকে বসবে দেশটির সরকার। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কবে তারা পানি সাগরে ছাড়বে। সংশ্লিষ্ট এক জাপানি মন্ত্রীর বরাতে আজ সোমবার (২১ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউভ

২০১১ সালে ভূমিকম্প ও সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় টোকিওর ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লিকে শীতল রাখার জন্য ওই পানি ব্যবহার করা হয়। হিসেব অনুযায়ী, চুল্লি শীতল করতে ব্যবহৃত হওয়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার টন তেজস্ক্রিয় পানি সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা দিয়ে ৫০০টিরও বেশি অলিম্পিক গেমসের সুইমিং পুল ভরে ফেলা সম্ভব।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা করা সংস্থা টেপকো বলছে, তেজস্ক্রিয় পানিতে পরিপূর্ণ রয়েছে এক হাজার ইস্পাতের ট্যাংক। স্থানের সংকটে তারা ক্রমান্বয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলতে চায়।

আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, ‘আগামীকাল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নিয়ে আমরা একটি বৈঠক করব। নিরাপত্তা বজায় রেখে কীভাবে ও কবে বিধ্বস্ত ফুকুশিমার পানি সাগরে ফেলা যায় সেই সিদ্ধান্ত বৈঠকে নেওয়া হবে। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে কথা হবে।’

আরেক সংবাদ সম্মেলনে টেপকোর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই পানি সাগরে ফেলা হবে।’ জাপান সরকারের ভাষ্যমতে, ফুকুশিমার পানি চলতি গ্রীষ্ম শেষ হওয়ার আগেই সাগরে ফেলার পরিকল্পনা করছে তারা।

সাগরে ফেলা পানি দূষিত বা তেজস্ক্রিয় নয়, এমনটা অনেক আগে থেকেই আশ্বস্ত করে আসছে জাপান সরকার। তারা বলছে, সাগরে ফেলার আগেই পানি থেকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে, পানি থেকে হাইড্রোজেন আইসোটোপ আলাদা করা খুবই দুরূহ কাজ।

সর্বশেষ ১২ বছর ধরে উত্তর-পশ্চিম জাপানের ভূগর্ভস্থে তিন স্তরে শীতল করে রাখা হয়েছে ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি। টেপকো বলছে, ভূগর্ভস্থে রাখা সমস্ত পানির তেজস্ক্রিয় পদার্থ অপসারণের জন্য ফিল্টার করা হয়েছে। তবে, ট্রিটিয়াম পরিশোধনের ব্যবস্থা করেনি তারা।

আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় হিলারি

গত জুলাইয়ে তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ফেলার অনুমতি দেয় আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। ওই সময় সংস্থাটি থেকে বলা হয়, জাপান ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়ার যে পরিকল্পনা করেছে, তা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার মানদণ্ড অনুযায়ী করা হয়েছে। এতে মানুষ ও পরিবেশের ওপর তেমন ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়বে না।

বিষয়টি নিয়ে অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ে পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ টনি হুকার এএফপিকে বলেন, ‘কয়েক দশক ধরেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ট্রিটিয়াম সাগরে ছাড়া হচ্ছে। এর পরিবেশগত বা স্বাস্থ্যগত কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই।’

ঢাকা/এসএম

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x

ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়ার সিদ্ধান্ত কাল

আপডেট: ০৭:৫৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩

নামিতে বিধ্বস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়ার কথা আগে থেকেই জানিয়ে আসছিল জাপান। তবে, কবে থেকে এই পানি ছাড়া হবে সেই ব্যাপারে কিছুই জানাচ্ছিল না সূর্যোদয়ের দেশটি। তেজস্ক্রিয় পানি ছাড়া নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বৈঠকে বসবে দেশটির সরকার। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কবে তারা পানি সাগরে ছাড়বে। সংশ্লিষ্ট এক জাপানি মন্ত্রীর বরাতে আজ সোমবার (২১ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউভ

২০১১ সালে ভূমিকম্প ও সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় টোকিওর ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লিকে শীতল রাখার জন্য ওই পানি ব্যবহার করা হয়। হিসেব অনুযায়ী, চুল্লি শীতল করতে ব্যবহৃত হওয়া ১৩ লাখ ৪০ হাজার টন তেজস্ক্রিয় পানি সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা দিয়ে ৫০০টিরও বেশি অলিম্পিক গেমসের সুইমিং পুল ভরে ফেলা সম্ভব।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা করা সংস্থা টেপকো বলছে, তেজস্ক্রিয় পানিতে পরিপূর্ণ রয়েছে এক হাজার ইস্পাতের ট্যাংক। স্থানের সংকটে তারা ক্রমান্বয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলতে চায়।

আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, ‘আগামীকাল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নিয়ে আমরা একটি বৈঠক করব। নিরাপত্তা বজায় রেখে কীভাবে ও কবে বিধ্বস্ত ফুকুশিমার পানি সাগরে ফেলা যায় সেই সিদ্ধান্ত বৈঠকে নেওয়া হবে। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে কথা হবে।’

আরেক সংবাদ সম্মেলনে টেপকোর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই পানি সাগরে ফেলা হবে।’ জাপান সরকারের ভাষ্যমতে, ফুকুশিমার পানি চলতি গ্রীষ্ম শেষ হওয়ার আগেই সাগরে ফেলার পরিকল্পনা করছে তারা।

সাগরে ফেলা পানি দূষিত বা তেজস্ক্রিয় নয়, এমনটা অনেক আগে থেকেই আশ্বস্ত করে আসছে জাপান সরকার। তারা বলছে, সাগরে ফেলার আগেই পানি থেকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে, পানি থেকে হাইড্রোজেন আইসোটোপ আলাদা করা খুবই দুরূহ কাজ।

সর্বশেষ ১২ বছর ধরে উত্তর-পশ্চিম জাপানের ভূগর্ভস্থে তিন স্তরে শীতল করে রাখা হয়েছে ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি। টেপকো বলছে, ভূগর্ভস্থে রাখা সমস্ত পানির তেজস্ক্রিয় পদার্থ অপসারণের জন্য ফিল্টার করা হয়েছে। তবে, ট্রিটিয়াম পরিশোধনের ব্যবস্থা করেনি তারা।

আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় হিলারি

গত জুলাইয়ে তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ফেলার অনুমতি দেয় আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। ওই সময় সংস্থাটি থেকে বলা হয়, জাপান ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়ার যে পরিকল্পনা করেছে, তা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার মানদণ্ড অনুযায়ী করা হয়েছে। এতে মানুষ ও পরিবেশের ওপর তেমন ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়বে না।

বিষয়টি নিয়ে অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ে পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ টনি হুকার এএফপিকে বলেন, ‘কয়েক দশক ধরেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ট্রিটিয়াম সাগরে ছাড়া হচ্ছে। এর পরিবেশগত বা স্বাস্থ্যগত কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই।’

ঢাকা/এসএম