০৮:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে দেড় শতাধিক কোম্পানি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:২৯:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৪২৩১ বার দেখা হয়েছে

শফিউল সুমন: পুঁজিবাজারে প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে ফ্লোর প্রাইসের কোম্পানির সংখ্যা। আজ বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছে আরও ১৭ কোম্পানির শেয়ার। এসব কোম্পানিসহ বর্তমানে ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে মোট ১৬৩টি কোম্পানি। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আজ নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে আসা ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জুট স্পিনার্স, সিমটেক্স, ওয়াইম্যাক্স, খুলনা প্রিন্টিং, উসমানিয়া গ্লাস, এসকে ট্রিমস, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্স, ইসলামি ব্যাংক, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ডেসকো, মতিন স্পিনিং, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, গ্রামীণফোন এবং স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, মূলত তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানিই টানছে বাজারকে। কেননা আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার টাকা লেনদেন হয়। যার অর্ধেকের বেশি অবদান এই ১০ কোম্পানির লেনদেন। কোম্পানিগুলো হলো: ওরিয়ান ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসসি, জেএমআই হসপিটাল, শাহজিবাজার পাওয়ার, লাফার্জ হোলমি, ওরিয়ন ইনফিউশন, একমি ল্যাবরেটরিজ, বসন্ধুরা পেপার মিলস এবং শাইনপুকুর সিরামিকস।

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন ডিএসই নির্ধারিত কোন কোম্পানির চূড়ান্ত ফ্লোর প্রাইস কতো!

বাজার সংশ্নিষ্টদের মতে, বর্তমান পুঁজিবাজারের লেনদেন ও সূচকের ওঠানামার সিংহভাগ গুটিকয়েক শেয়ারকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। সূচক বাড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো বেশিরভাগ শেয়ার দর হারানোয় তারা আর্থিক ক্ষতিতে পড়ছেন।

তাদের মতে, সূচক একদিকে আর বেশিরভাগ শেয়ারদর অন্যদিকে, যা সুষ্ঠু বাজারের চিত্র নয়। এ বাজারে অল্প কিছু মানুষ ব্যবসা করছেন। রাতারাতি কয়েকটি শেয়ারের দর হু-হু করে বাড়ছে। অথচ বেশিরভাগ শেয়ার দর হারাচ্ছে। সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচায় স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত লেনদেনের মাধ্যমে এমন দরের উত্থান ঘটছে- এমন কেউই মনে করছেন না। তারপরও এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন করছেন না।

দায়িত্বশীলরা যদি মনে করেন, গুটিকয়েক ব্যক্তির লেনদেন ও তাঁদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের জন্য এ বাজার, তাহলে সিংহভাগ বিনিয়োগকারী এ বাজার থেকে ফের মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। এখন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে দরপতন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে, যা কোনো টেকসই পদক্ষেপ নয়।

গত শনিবার এক সেমিনারে ফ্লোর প্রাইস ইস্যুতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিরবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, ফ্লোর প্রাইস দেওয়া বিষয়টি আমিও পছন্দ করি না। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এটি আমাদের দিতে হয়েছে। তা না হলে বাজারের দরপতন হয়ে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন বলেন, করোনার মহামারি থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় দেশে প্রথমবার ২০২০ সালে ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সীমা) দিয়েছি। এরপর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আশা করছি বাজার স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৪৬টি। যা প্রতিদিনেই বেড়ে চলছে। এমতাবস্থায় দেখার বিষয় হচ্ছে এই ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কততে যেয়ে থামে। যার বর্তমান অবস্থান ১৬৩টি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারের দরপতন ঠেকাতে সর্বনিম্ন বাজার মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপর শেয়ার দাম বাড়ায়-কমায় ফ্লোর প্রাইসের নিচে থাকা কোম্পানির সংখ্যাও ওঠানামা করতে থাকে।

আরও পড়ুন: মিডল্যান্ড ব্যাংকের আইপিও অনুমোদন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক/ঢাকা

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x

ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে দেড় শতাধিক কোম্পানি

আপডেট: ০৮:২৯:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

শফিউল সুমন: পুঁজিবাজারে প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে ফ্লোর প্রাইসের কোম্পানির সংখ্যা। আজ বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছে আরও ১৭ কোম্পানির শেয়ার। এসব কোম্পানিসহ বর্তমানে ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে মোট ১৬৩টি কোম্পানি। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আজ নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে আসা ১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জুট স্পিনার্স, সিমটেক্স, ওয়াইম্যাক্স, খুলনা প্রিন্টিং, উসমানিয়া গ্লাস, এসকে ট্রিমস, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্স, ইসলামি ব্যাংক, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ডেসকো, মতিন স্পিনিং, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, গ্রামীণফোন এবং স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, মূলত তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানিই টানছে বাজারকে। কেননা আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ হাজার ৮০৮ কোটি ১৯ লাখ ১২ হাজার টাকা লেনদেন হয়। যার অর্ধেকের বেশি অবদান এই ১০ কোম্পানির লেনদেন। কোম্পানিগুলো হলো: ওরিয়ান ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএসসি, জেএমআই হসপিটাল, শাহজিবাজার পাওয়ার, লাফার্জ হোলমি, ওরিয়ন ইনফিউশন, একমি ল্যাবরেটরিজ, বসন্ধুরা পেপার মিলস এবং শাইনপুকুর সিরামিকস।

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন ডিএসই নির্ধারিত কোন কোম্পানির চূড়ান্ত ফ্লোর প্রাইস কতো!

বাজার সংশ্নিষ্টদের মতে, বর্তমান পুঁজিবাজারের লেনদেন ও সূচকের ওঠানামার সিংহভাগ গুটিকয়েক শেয়ারকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। সূচক বাড়ছে। কিন্তু অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো বেশিরভাগ শেয়ার দর হারানোয় তারা আর্থিক ক্ষতিতে পড়ছেন।

তাদের মতে, সূচক একদিকে আর বেশিরভাগ শেয়ারদর অন্যদিকে, যা সুষ্ঠু বাজারের চিত্র নয়। এ বাজারে অল্প কিছু মানুষ ব্যবসা করছেন। রাতারাতি কয়েকটি শেয়ারের দর হু-হু করে বাড়ছে। অথচ বেশিরভাগ শেয়ার দর হারাচ্ছে। সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনাবেচায় স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত লেনদেনের মাধ্যমে এমন দরের উত্থান ঘটছে- এমন কেউই মনে করছেন না। তারপরও এ নিয়ে কেউ প্রশ্ন করছেন না।

দায়িত্বশীলরা যদি মনে করেন, গুটিকয়েক ব্যক্তির লেনদেন ও তাঁদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের জন্য এ বাজার, তাহলে সিংহভাগ বিনিয়োগকারী এ বাজার থেকে ফের মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। এখন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে দরপতন ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে, যা কোনো টেকসই পদক্ষেপ নয়।

গত শনিবার এক সেমিনারে ফ্লোর প্রাইস ইস্যুতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিরবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, ফ্লোর প্রাইস দেওয়া বিষয়টি আমিও পছন্দ করি না। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এটি আমাদের দিতে হয়েছে। তা না হলে বাজারের দরপতন হয়ে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন। বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন বলেন, করোনার মহামারি থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় দেশে প্রথমবার ২০২০ সালে ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সীমা) দিয়েছি। এরপর বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আশা করছি বাজার স্বাভাবিক হলে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১৪৬টি। যা প্রতিদিনেই বেড়ে চলছে। এমতাবস্থায় দেখার বিষয় হচ্ছে এই ফ্লোর প্রাইসে ফেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কততে যেয়ে থামে। যার বর্তমান অবস্থান ১৬৩টি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারের দরপতন ঠেকাতে সর্বনিম্ন বাজার মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপর শেয়ার দাম বাড়ায়-কমায় ফ্লোর প্রাইসের নিচে থাকা কোম্পানির সংখ্যাও ওঠানামা করতে থাকে।

আরও পড়ুন: মিডল্যান্ড ব্যাংকের আইপিও অনুমোদন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক/ঢাকা