০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাজেট থেকে কী পাচ্ছে শেয়ারবাজার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:০৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১
  • / ১০৪৪৮ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর আড়াই শতাংশ হারে কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর বাইরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎসে কর ও ভ্যাট ছাড় আছে অনেক কোম্পানির জন্য।

ফলে যেসব কোম্পানি কর ছাড় পেতে যাচ্ছে, তাদের বিক্রিসহ অন্যান্য বিষয় বর্তমান বছরের সমান থাকলেও কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফা ও শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। মুনাফা বাড়লে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষমতাও বাড়বে।

তবে শেয়ারবাজারের ছয় খাত করপোরেট কর ছাড় সুবিধা পাচ্ছে না। বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৩৩৬ কোম্পানির মধ্যে কর ছাড় পেতে যাচ্ছে ১৭৩ কোম্পানি, পাচ্ছে না ১৬৩টি।

মোটা দাগে উৎপাদন ও সেবাখাতের কোম্পানি কর ছাড় পাচ্ছে। কর ছাড় পাচ্ছে না আর্থিক ও বীমা খাত। যে ছয়খাতে করপোরেট করে ছাড় নেই, অর্থাৎ অপরিবর্তিত থাকছে, সেগুলো হলো, ব্যাংক (৩১টি), ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (২৩টি), বীমা (৫০টি), বস্ত্র (৫৬টি), মোবাইল অপারেটর (২টি) এবং সিগারেট (১টি)। শেয়ারবাজারে এ ছয় খাতের তালিকাভুক্ত মোট কোম্পানি ১৬৩টি।

তালিকাভুক্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা কোম্পানির করপোরেট কর হার বর্তমানে ৩৭.৫০ শতাংশ। এ হার আগামী অর্থবছরেও বহাল থাকছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুনফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বস্ত্র খাতের করপোরেট কর হার বর্তমানে ১২ শতাংশ এবং গ্রিন ফ্যাক্টরি হলে ১০ শতাংশ। এ হারও বহাল থাকছে। এর বাইরে চলতি বছরের মতো রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা ১ শতাংশ বহাল থাকায় এক্ষেত্রেও কোনো পরিবর্তন নেই।

এছাড়া তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটর কোম্পানির করপোরেট কর বর্তমানের মতো ৪৫ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত সিগারেট কোম্পানির করপোরেট কর ৪০ শতাংশ বহাল থাকছে।

কর ছাড়ের বাইরেও আছে সুবিধা:

অর্থমন্ত্রী এ বাজেটে দেশীয় শিল্পকে প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বেশকিছু ক্ষেত্রে ভ্যাট কমিয়েছেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার কমানোর প্রস্তাব করেছেন। এতে উৎপাদনমুখী বেশকিছু খাতের কোম্পানির কর বাবদ খরচ কমবে। এতে মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে।

ওষুধখাত:

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সংক্রমণ ঠেকাতে কার্যকরী পণ্য; যেমন হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, পিপিই ইত্যাদি সহজলভ্য ও সুলভ মূল্য নিশ্চিত করতে চায়। এ কারণে যেসব কোম্পানি এসব পণ্য উৎপাদন করে, তাদের এসব পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় অব্যাহত থাকবে। এতে এমন পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানির পণ্য বিক্রি ও মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে বর্তমানে এ ধরনের পণ্য উৎপাদন করছে বেক্সিমকো লিমিটেড, এসিআই, রেকিট বেনকিজার।

অটোমোবাইল:

দেশে থ্রি ও ফোর হুইলার গাড়ি উৎপাদনে সহায়তা দিতে চায় সরকার। এ জন্য দেশে উৎপাদন বা সংযোজনের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন হলে, অর্থাৎ দেশের কোনো যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও সংযোজন হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ও কর ছাড় পাবে। এতে এ ব্যবসায় থাকা কোম্পানিগুলোর মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে।

এতে সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তালিকাভুক্ত ইফাদ অটোস, রানার অটোমোবাইলস, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন এবং আফতাব অটোস।

প্রকৌশলখাত:

দেশে হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের উৎপাদনেও সরকার সহযোগিতা দিতে চায়। বিশেষত রেফ্রিজারেটর, ওয়াসিং মেশিন, মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন, ব্লেন্ডার, জুসার, প্রেসার কুকার ইত্যাদি পণ্য দেশেই উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে উৎসে আগাম কর ১ শতাংশ কমানো হচ্ছে। এতে এসব পণ্যের খুরচা মূল্য কমার সম্ভাবনা থাকবে। এতে বিক্রি বাড়লে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিট মুনাফা বাড়বে। এ সুবিধা পেতে পারে, তালিকাভুক্ত ওয়ালটন, সিঙ্গার বাংলাদেশ।

সিমেন্ট এবং স্টিলখাত:

সিমেন্ট ও স্টিল খাতের কাঁচামাল আমদানিতে উৎসে আগাম কর ১ শতাংশ কমানো হচ্ছে। এ সুবিধা পাবে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের সব কোম্পানি এবং প্রকৌশলখাতের বিএসআরএম, জিপিএইচ ইস্পাত, আরএসআরএম।

লাফার্জ হোলসিম নিজের খনির ক্লিংকার ব্যবহার করে। ফলে অন্যদের থেকে অপেক্ষাকৃত কম সুবিধা পাবে কোম্পানিটি। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দর বৃদ্ধির ফলে এমনিতেই সিমেন্টের বাজার মূল্য বাড়ছে। আপাত দৃষ্টিতে সিমেন্ট খাতের মুনাফা বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত হিসাব পরিস্কার নয়।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন্:

শেয়ার করুন

বাজেট থেকে কী পাচ্ছে শেয়ারবাজার

আপডেট: ০২:০৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর আড়াই শতাংশ হারে কমানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এর বাইরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎসে কর ও ভ্যাট ছাড় আছে অনেক কোম্পানির জন্য।

ফলে যেসব কোম্পানি কর ছাড় পেতে যাচ্ছে, তাদের বিক্রিসহ অন্যান্য বিষয় বর্তমান বছরের সমান থাকলেও কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফা ও শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। মুনাফা বাড়লে কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষমতাও বাড়বে।

তবে শেয়ারবাজারের ছয় খাত করপোরেট কর ছাড় সুবিধা পাচ্ছে না। বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৩৩৬ কোম্পানির মধ্যে কর ছাড় পেতে যাচ্ছে ১৭৩ কোম্পানি, পাচ্ছে না ১৬৩টি।

মোটা দাগে উৎপাদন ও সেবাখাতের কোম্পানি কর ছাড় পাচ্ছে। কর ছাড় পাচ্ছে না আর্থিক ও বীমা খাত। যে ছয়খাতে করপোরেট করে ছাড় নেই, অর্থাৎ অপরিবর্তিত থাকছে, সেগুলো হলো, ব্যাংক (৩১টি), ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (২৩টি), বীমা (৫০টি), বস্ত্র (৫৬টি), মোবাইল অপারেটর (২টি) এবং সিগারেট (১টি)। শেয়ারবাজারে এ ছয় খাতের তালিকাভুক্ত মোট কোম্পানি ১৬৩টি।

তালিকাভুক্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বীমা কোম্পানির করপোরেট কর হার বর্তমানে ৩৭.৫০ শতাংশ। এ হার আগামী অর্থবছরেও বহাল থাকছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুনফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বস্ত্র খাতের করপোরেট কর হার বর্তমানে ১২ শতাংশ এবং গ্রিন ফ্যাক্টরি হলে ১০ শতাংশ। এ হারও বহাল থাকছে। এর বাইরে চলতি বছরের মতো রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা ১ শতাংশ বহাল থাকায় এক্ষেত্রেও কোনো পরিবর্তন নেই।

এছাড়া তালিকাভুক্ত মোবাইল অপারেটর কোম্পানির করপোরেট কর বর্তমানের মতো ৪৫ শতাংশ এবং তালিকাভুক্ত সিগারেট কোম্পানির করপোরেট কর ৪০ শতাংশ বহাল থাকছে।

কর ছাড়ের বাইরেও আছে সুবিধা:

অর্থমন্ত্রী এ বাজেটে দেশীয় শিল্পকে প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বেশকিছু ক্ষেত্রে ভ্যাট কমিয়েছেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার কমানোর প্রস্তাব করেছেন। এতে উৎপাদনমুখী বেশকিছু খাতের কোম্পানির কর বাবদ খরচ কমবে। এতে মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে।

ওষুধখাত:

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সংক্রমণ ঠেকাতে কার্যকরী পণ্য; যেমন হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, পিপিই ইত্যাদি সহজলভ্য ও সুলভ মূল্য নিশ্চিত করতে চায়। এ কারণে যেসব কোম্পানি এসব পণ্য উৎপাদন করে, তাদের এসব পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় অব্যাহত থাকবে। এতে এমন পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানির পণ্য বিক্রি ও মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে বর্তমানে এ ধরনের পণ্য উৎপাদন করছে বেক্সিমকো লিমিটেড, এসিআই, রেকিট বেনকিজার।

অটোমোবাইল:

দেশে থ্রি ও ফোর হুইলার গাড়ি উৎপাদনে সহায়তা দিতে চায় সরকার। এ জন্য দেশে উৎপাদন বা সংযোজনের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন হলে, অর্থাৎ দেশের কোনো যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও সংযোজন হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ও কর ছাড় পাবে। এতে এ ব্যবসায় থাকা কোম্পানিগুলোর মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকবে।

এতে সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তালিকাভুক্ত ইফাদ অটোস, রানার অটোমোবাইলস, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন এবং আফতাব অটোস।

প্রকৌশলখাত:

দেশে হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের উৎপাদনেও সরকার সহযোগিতা দিতে চায়। বিশেষত রেফ্রিজারেটর, ওয়াসিং মেশিন, মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন, ব্লেন্ডার, জুসার, প্রেসার কুকার ইত্যাদি পণ্য দেশেই উৎপাদনে কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে উৎসে আগাম কর ১ শতাংশ কমানো হচ্ছে। এতে এসব পণ্যের খুরচা মূল্য কমার সম্ভাবনা থাকবে। এতে বিক্রি বাড়লে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিট মুনাফা বাড়বে। এ সুবিধা পেতে পারে, তালিকাভুক্ত ওয়ালটন, সিঙ্গার বাংলাদেশ।

সিমেন্ট এবং স্টিলখাত:

সিমেন্ট ও স্টিল খাতের কাঁচামাল আমদানিতে উৎসে আগাম কর ১ শতাংশ কমানো হচ্ছে। এ সুবিধা পাবে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের সব কোম্পানি এবং প্রকৌশলখাতের বিএসআরএম, জিপিএইচ ইস্পাত, আরএসআরএম।

লাফার্জ হোলসিম নিজের খনির ক্লিংকার ব্যবহার করে। ফলে অন্যদের থেকে অপেক্ষাকৃত কম সুবিধা পাবে কোম্পানিটি। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দর বৃদ্ধির ফলে এমনিতেই সিমেন্টের বাজার মূল্য বাড়ছে। আপাত দৃষ্টিতে সিমেন্ট খাতের মুনাফা বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত হিসাব পরিস্কার নয়।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন্: