আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এ সময়ে ‘খুব বেশি প্রয়োজন না হলে’ চলাচল সীমিত করার অনুরোধ করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।

সোমবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে শিক্ষাবৃত্তি দিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা বাংলাদেশে আসবেন। তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। ১৭-২৬ তারিখ পর্যন্ত খুব বেশি প্রয়োজন না হলে চলাচল সীমিত করার অনুরোধ করা হচ্ছে। এ কয়দিন রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনো কর্মসূচি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান আইজিপি।

এর আগে সকালে তিনি বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি তুলে দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. বেনজীর বলেন, ইসলাম কখনও জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। জঙ্গিবাদ ইসলামের শত্রু। তাদের হাতেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানরা নিগৃহীত হয়েছে, সবচেয়ে বেশি মুসলমানদের রক্ত ঝরেছে, সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে। ছাত্রদের জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে।

আইজিপি বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই সচেতন হওয়া জরুরি। জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। বাবা-মাকে সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের মাদক থেকেও দূরে থাকতে হবে। অংকুরেই শেষ করে দেয় মাদক। আমাদের ভেতরে আত্মমর্যাদা থাকতে হবে। দেশের প্রতি সম্মান থাকতে হবে৷ দেশের অতীত ইতিহাসকে জানতে হবে। বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের অহংকার করার মতো অনেক কিছু আছে।

বাংলাদেশে যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে মন্তব্য করে পুলিশ প্রধান বলেন, গত ১২ বছরে শিক্ষায় বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ানো হচ্ছে। বই ফ্রি পাচ্ছে। আমরা বই পেতাম তিন-চার মাস পর। এখন এ পরিস্থিতি নেই। আর আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে দরিদ্রতা বিদায় নেবে। দরিদ্রতা যে কত ভয়ানক তা যারা না দেখছে, তারা বিশ্বাস করবে না। অর্ধাহার-অনাহারের কী জীবন, তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। এক সময় বস্তিবাসী ডাস্টবিন থেকে খাবার কুড়িয়ে খেত। এগুলো এখন নেই।

যৌথ পরিবার ভেঙে যাওয়ায় শিশুদের একাকিত্ব বেড়েছে উল্লেখ করে ড. বেনজীর বলেন, অর্থনৈতিক কারণে আমাদের যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে। যৌথ পরিবারের একটা সুবিধা ছিল এখানে মুরুব্বিদের কাছ থেকে অনেক কাউন্সিলিং পেত শিশুরা। এটা এখন হয় না। আমি আমার সন্তানের মাধ্যমে বুঝি সে কত একাকিত্ব বোধ করে। যদি যৌথ পরিবার থাকত তাহলে তার দাদা-দাদি, নানা-নানি ও চাচা-চাচি একসঙ্গে থাকত। তখন তাদের সঙ্গ পেত।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান। এতে ১১৩ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি তুলে দেওয়া হয়।