০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে দুই হাজার কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:৩০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১০৩৪২ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

গত বছর ২০২২ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছে ১২ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। যা এর আগের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা বেশি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা। ২০২২ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৩০০ কোটি টাকা। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই লেনদেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৮২৫ কোটি টাকা।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি সময়ে অনলাইন কেনাকাটায় ১০ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এরপরের বছরের একইসময়ে লেনদেন হয় ১২ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এসময় কার্ডে অনলাইন কেনকাটায় লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া উন্মুক্তের দাবি

করোনার সময়ে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয় ই-কমার্স। তবে ২০২১ সাল থেকে ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ ও কিউকমের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসতে থাকে। এতে এই খাত থেকে আস্থা হারান গ্রাহকরা। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে আস্থা ফিরতে শুরু করে খাতটিতে। এর ফলে ই-কমার্সে কেনাবেচা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ই-কমার্স খাতে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এলে এই খাতে গ্রাহকদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অগ্রিম টাকা নিয়ে দীর্ঘদিনেও পণ্য বা সেবা সরবরাহ করছে না। এ নিয়ে ২০২১ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশিকা জারি করে। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নির্দেশনার আলোকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসেবে ধারণ করবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহের পর দাম পাবে। লেনদেন নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যাংক, এমএফএস বা ই-ওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের জুনে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়ে রেকর্ড ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা হয়েছিল। কিন্তু ই-কমার্স প্রতারণার প্রভাবে এক মাসের ব্যবধানে তা কমে দাঁড়ায় ৭৪২ কোটি টাকায়। তবে সরকারের ডিজিটাল কমার্স আইন ২০২১ প্রণয়নের পর গত বছরের এপ্রিলে আবার হাজার কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে এই খাতের বেচা-কেনা। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) ২ হাজার ২৫১ কোটি টাকার লেনদেন হয়।

ই-কমার্স খাত জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করলে ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ ও কিউকমের মতো প্রতিষ্ঠান অস্বাভাবিক ডিসকাউন্টের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর কেনাকাটা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আর এ সুযোগেই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে। এছাড়া গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানগুলো। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার হস্তক্ষেপ করে। গ্রেপ্তার হতে থাকেন একে একে প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিরা। এতে দেশের ই-কমার্স খাতের জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাঁটা পড়ে। তবে বর্তমানে খাতটিতে আবারও লেনদেন বাড়তে শুরু করেছে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x

ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে দুই হাজার কোটি টাকা

আপডেট: ০২:৩০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩

গত বছর ২০২২ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকের কার্ডে ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছে ১২ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। যা এর আগের একই সময়ের তুলনায় ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা বেশি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ই-কমার্সে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা। ২০২২ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৩০০ কোটি টাকা। আর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই লেনদেনের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন বছরের ব্যবধানে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়েছে ৮২৫ কোটি টাকা।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি সময়ে অনলাইন কেনাকাটায় ১০ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এরপরের বছরের একইসময়ে লেনদেন হয় ১২ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এসময় কার্ডে অনলাইন কেনকাটায় লেনদেন বেড়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া উন্মুক্তের দাবি

করোনার সময়ে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয় ই-কমার্স। তবে ২০২১ সাল থেকে ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ ও কিউকমের মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসতে থাকে। এতে এই খাত থেকে আস্থা হারান গ্রাহকরা। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে আস্থা ফিরতে শুরু করে খাতটিতে। এর ফলে ই-কমার্সে কেনাবেচা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ই-কমার্স খাতে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য বেরিয়ে এলে এই খাতে গ্রাহকদের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অগ্রিম টাকা নিয়ে দীর্ঘদিনেও পণ্য বা সেবা সরবরাহ করছে না। এ নিয়ে ২০২১ সালের জুনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশিকা জারি করে। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই নির্দেশনার আলোকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসেবে ধারণ করবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহের পর দাম পাবে। লেনদেন নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যাংক, এমএফএস বা ই-ওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কাজ করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের জুনে ই-কমার্সে লেনদেন বেড়ে রেকর্ড ১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা হয়েছিল। কিন্তু ই-কমার্স প্রতারণার প্রভাবে এক মাসের ব্যবধানে তা কমে দাঁড়ায় ৭৪২ কোটি টাকায়। তবে সরকারের ডিজিটাল কমার্স আইন ২০২১ প্রণয়নের পর গত বছরের এপ্রিলে আবার হাজার কোটির মাইলফলক স্পর্শ করে এই খাতের বেচা-কেনা। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) ২ হাজার ২৫১ কোটি টাকার লেনদেন হয়।

ই-কমার্স খাত জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করলে ইভ্যালি, ধামাকা শপিং, ই-অরেঞ্জ ও কিউকমের মতো প্রতিষ্ঠান অস্বাভাবিক ডিসকাউন্টের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর কেনাকাটা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আর এ সুযোগেই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে। এছাড়া গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানগুলো। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার হস্তক্ষেপ করে। গ্রেপ্তার হতে থাকেন একে একে প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিরা। এতে দেশের ই-কমার্স খাতের জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাঁটা পড়ে। তবে বর্তমানে খাতটিতে আবারও লেনদেন বাড়তে শুরু করেছে।

ঢাকা/টিএ