০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ব্যাংকের সংখ্যা না বাড়িয়ে শাখা বাড়ালে ভালো হতো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:২৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৮
  • / ৪৪৫৩ বার দেখা হয়েছে

?????????????????????????????????????????????????????????

দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে প্রায় ৫৭টির মতো ব্যাংক রয়েছে। দেশের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক। আবার নতুন করে তিন থেকে চারটি ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংক খাতে অস্থিরতা বিরাজ করবে। তাই ব্যাংকের সংখ্যা না বাড়িয়ে বিদ্যমান ব্যাংকগুলো ও শাখার সংখ্যা বাড়ালেই ভালো হতো। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকালের বিজনেস এডিটর জাকির হোসেন এবং দি ডেইলি স্টারের বিজনেস এডিটর সাজ্জাদুর রহমান।
জাকির হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় বাজারের সূচক ৫০ শতাংশ কমেছে। এক বছরে অর্থনীতির সূচক বেড়েছে প্রায় আট শতাংশ। অথচ সে তুলনায় বাজার মূলধন বাড়েনি বরং কমেছে। আগের তুলনায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন অনেকটাই ভালো। তবে নির্বাচন সামনে এলে সব দেশেই অস্থিরতা কাজ করে। বর্তমানে বাজারের অবস্থা শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা মনে করি না। বাজারে যখন সূচক ও শেয়ারের দাম কমতে থাকে, তখন বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রে এটাই বেশি দেখা যায়। বর্তমানে লভ্যাংশ ও বিভিন্ন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন ঘোষণা করা হচ্ছে। লভ্যাংশ ও আর্থিক প্রতিবেদন সবারই যে ভালো হচ্ছে তা কিন্তু নয়, এর একটি প্রভাব হয়তো বাজারে পড়েছে। দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে প্রায় ৫৭টির মতো ব্যাংক রয়েছে। দেশের তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক। আবার নতুন করে তিন থেকে চারটি ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংক খাতে অস্থিরতা বিরাজ করবে। ব্যাংকের সংখ্যা না বাড়িয়ে বর্তমানে যে ব্যাংকগুলো আছে, তাদের শাখার সংখ্যা বাড়ালেই ভালো হতো মনে হয়।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বছরের শুরুতে সূচকের অবস্থান ছয় হাজার ৫০ পয়েন্টে ছিল। বর্তমানে তা থেকে নেমে পাঁচ হাজার ৩০০ পয়েন্টে এসেছে। গত এক বছরে ১১ থেকে ১২টি কোম্পানি আইপিও’র মাধ্যমে বাজারে এসেছে। আবার দেশের সব অর্থনীতির সূচকগুলোও ইতিবাচক। অথচ বাজার তেমন গতিশীল নয়। সামনে নির্বাচন। পাঁচ বছরে একবার ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুত থাকেন যে, নির্বাচনের আগে অস্থিরতা আসবে। কিন্তু সেটি এবার লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
১৯৯৬, ২০০১, ২০০৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল; কিন্তু তখন বেশিরভাগ সময়ই বাজার ইতিবাচক ছিল। ২০১৮ সালে সেটি নেতিবাচক দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে; এ কারণেই বাজার এখন এরকম আচরণ করছে। সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বাজারের জন্য তেমন কিছুই করেনি বলে মনে করি। বছরজুড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারী লোকসান করে যাচ্ছেন, স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে যাচ্ছে; অন্যদিকে মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যাচ্ছে, ভালো মানের কোম্পানির তুলনায় স্বল্প মূলধনি কোম্পানি বেশি অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। বহুজাতিক ও সরকারি কোম্পানি বাজারে তেমন অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না; এতে কী নির্দেশ করে। আসলে বাজার দেখার মতো কেউ নেই। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য একমাত্র জায়গা হচ্ছে পুঁজিবাজার। তাই পুঁজিবাজারের সেভাবে উন্নয়ন করতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের পণ্য আনতে হবে। সেজন্য কোনো উদ্যোগ নিতে দেখছি না। গত ১০ বছরে পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করে বড় কোনো প্রকল্প হয়েছে বলে মনে হয় না। আবার গত আট থেকে ১০ বছরে একটিও বহুজাতিক বা সরকারি কোম্পানি পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্তের জন্য সরকার, বিএসইসি ও ডিএসইর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে বলে মনে হয় না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাংকনির্ভর। এর ফলে একসময় ব্যাংক থমকে যাবে। বাজার ইতিবাচক থাকার কারণ হতে পারে চীনা ফান্ড ও আইসিবির টাকা পুঁজিবাজারে আসছে এবং সরকার নির্বাচন ইস্যু নিয়ে সংলাপে বসছে-এসব কারণে।

শেয়ার করুন

x
English Version

ব্যাংকের সংখ্যা না বাড়িয়ে শাখা বাড়ালে ভালো হতো

আপডেট: ০৬:২৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে প্রায় ৫৭টির মতো ব্যাংক রয়েছে। দেশের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক। আবার নতুন করে তিন থেকে চারটি ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংক খাতে অস্থিরতা বিরাজ করবে। তাই ব্যাংকের সংখ্যা না বাড়িয়ে বিদ্যমান ব্যাংকগুলো ও শাখার সংখ্যা বাড়ালেই ভালো হতো। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকালের বিজনেস এডিটর জাকির হোসেন এবং দি ডেইলি স্টারের বিজনেস এডিটর সাজ্জাদুর রহমান।
জাকির হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় বাজারের সূচক ৫০ শতাংশ কমেছে। এক বছরে অর্থনীতির সূচক বেড়েছে প্রায় আট শতাংশ। অথচ সে তুলনায় বাজার মূলধন বাড়েনি বরং কমেছে। আগের তুলনায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন অনেকটাই ভালো। তবে নির্বাচন সামনে এলে সব দেশেই অস্থিরতা কাজ করে। বর্তমানে বাজারের অবস্থা শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা মনে করি না। বাজারে যখন সূচক ও শেয়ারের দাম কমতে থাকে, তখন বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রে এটাই বেশি দেখা যায়। বর্তমানে লভ্যাংশ ও বিভিন্ন প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন ঘোষণা করা হচ্ছে। লভ্যাংশ ও আর্থিক প্রতিবেদন সবারই যে ভালো হচ্ছে তা কিন্তু নয়, এর একটি প্রভাব হয়তো বাজারে পড়েছে। দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলে প্রায় ৫৭টির মতো ব্যাংক রয়েছে। দেশের তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক। আবার নতুন করে তিন থেকে চারটি ব্যাংককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংক খাতে অস্থিরতা বিরাজ করবে। ব্যাংকের সংখ্যা না বাড়িয়ে বর্তমানে যে ব্যাংকগুলো আছে, তাদের শাখার সংখ্যা বাড়ালেই ভালো হতো মনে হয়।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বছরের শুরুতে সূচকের অবস্থান ছয় হাজার ৫০ পয়েন্টে ছিল। বর্তমানে তা থেকে নেমে পাঁচ হাজার ৩০০ পয়েন্টে এসেছে। গত এক বছরে ১১ থেকে ১২টি কোম্পানি আইপিও’র মাধ্যমে বাজারে এসেছে। আবার দেশের সব অর্থনীতির সূচকগুলোও ইতিবাচক। অথচ বাজার তেমন গতিশীল নয়। সামনে নির্বাচন। পাঁচ বছরে একবার ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুত থাকেন যে, নির্বাচনের আগে অস্থিরতা আসবে। কিন্তু সেটি এবার লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
১৯৯৬, ২০০১, ২০০৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল; কিন্তু তখন বেশিরভাগ সময়ই বাজার ইতিবাচক ছিল। ২০১৮ সালে সেটি নেতিবাচক দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে; এ কারণেই বাজার এখন এরকম আচরণ করছে। সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বাজারের জন্য তেমন কিছুই করেনি বলে মনে করি। বছরজুড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারী লোকসান করে যাচ্ছেন, স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে যাচ্ছে; অন্যদিকে মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যাচ্ছে, ভালো মানের কোম্পানির তুলনায় স্বল্প মূলধনি কোম্পানি বেশি অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। বহুজাতিক ও সরকারি কোম্পানি বাজারে তেমন অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না; এতে কী নির্দেশ করে। আসলে বাজার দেখার মতো কেউ নেই। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য একমাত্র জায়গা হচ্ছে পুঁজিবাজার। তাই পুঁজিবাজারের সেভাবে উন্নয়ন করতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের পণ্য আনতে হবে। সেজন্য কোনো উদ্যোগ নিতে দেখছি না। গত ১০ বছরে পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করে বড় কোনো প্রকল্প হয়েছে বলে মনে হয় না। আবার গত আট থেকে ১০ বছরে একটিও বহুজাতিক বা সরকারি কোম্পানি পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্তের জন্য সরকার, বিএসইসি ও ডিএসইর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে বলে মনে হয় না। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাংকনির্ভর। এর ফলে একসময় ব্যাংক থমকে যাবে। বাজার ইতিবাচক থাকার কারণ হতে পারে চীনা ফান্ড ও আইসিবির টাকা পুঁজিবাজারে আসছে এবং সরকার নির্বাচন ইস্যু নিয়ে সংলাপে বসছে-এসব কারণে।