১০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

‘মন্দ’ ছেলের তুলনায় ‘মন্দ’ মেয়ে বেশি বিপজ্জনক

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৩২:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
  • / ৪১৫৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ‘মন্দ’ মেয়ে ‘মন্দ’ ছেলের চেয়ে বেশি বিপজ্জনক বলে সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।  গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৭৪ জন উত্তরদাতা এটাই মনে করেন বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির সহজ বিস্তার এবং নারীর প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নারীর প্রতি সহিংসতা কর্মসূচির আওতায় বেসরকারি সংস্থা ডি-নেট দেশব্যাপী এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে গবেষণার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে ডি-নেটের ইনোভেশন অ্যাডভাইজার সিরাজুল ইসলাম।

এ সময় তিনি বলে, দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার পাশাপাশি পর্নোগ্রাফি দেখার হারও বেড়েছে। গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৭৯ জন উত্তরদাতা বিশ্বাস করে সমাজে ‘ভালো’ ও ‘মন্দ’ মেয়ে আছে। গবেষণা প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মন্দ মেয়ের মতো আচরণ সমাজে অনাকাঙ্ক্ষিত।  কারণ সেই  আচরণ অন্য ছেলেমেয়েদের নষ্ট করে ফেলবে বলে মনে করে শতকরা ৭৯ জন উত্তরদাতা। 

‘মন্দ’ মেয়ে কারা
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মতে যারা নায়িকাদের মতো যৌন আবেদনময়ী আচরণ অথবা পশ্চিমা সংস্কৃতির পোশাক পরে ও আচরণ করে বা টিকটক, লাইকি ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে অনলাইনে ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে, তারাই মন্দ মেয়ে। অন্যদিকে যারা ধর্মীয় নিয়ম মেনে চলে তারা ভালো মেয়ে বলে মনে করে গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৬৬ জন।

‘মন্দ মেয়েদের প্রতি অপমানজনক আচরণ করা সমাজের জন্য উপকারী’
যারা অনলাইনে মন্দ মেয়ের মতো যারা আচরণ  করে, তাদের সেই আচরণ থেকে বিরত রাখার জন্য হেয় করা, খারাপ কথা বলা ও তাদের প্রতি অপমানজনক আচরণ করা সমাজের জন্য উপকারী বলে মনে করে গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৪৪ জন উত্তরদাতা। 

মেয়েরা খোলামেলা পোশাক পরলে, অশালীন আচরণ করলে, খারাপ ভাষা ব্যবহার করলে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও মেলামেশা করলে, সেই মেয়েদের নানাভাবে হেয় ও তাদের প্রতি অপমানজনক আচরণ করা যায় বলে মনে করেন শতকরা ৮১ জন উত্তরদাতা। এসব উত্তরদাতার মধ্যে শতকরা ৩৯ জন নারী ও ৪২ জন পুরুষ।

মেয়েদের গণমাধ্যম, চলচ্চিত্রে কাজ করা, পুরুষের সঙ্গে রাতের শিফটে কাজ করা বা পুরুষের সঙ্গে দূরে কোথাও ভ্রমণ বা কাজে যাওয়া ঠিক নয় বলে মনে করে শতকরা ৫২ জন। এমন ধারণা পোষণকারীদের মধ্যে শতকরা ২১ জন নারী ও ৩১ জন পুরুষ এবং উত্তরদাতাদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি।

ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও মেয়েদের নিজেদেরও দোষ রয়েছে বলে ভাবে শতকরা ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা। শতকরা ৭৩ জন মনে করে যে একটি মেয়ের জীবন তখনই সফল হয়, যখন একটি উপযুক্ত ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শতকরা ৬৩ জন মনে করে মেয়েদের বেশি স্বাধীনতা দিলে তারা পুরুষদের নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে এবং শতকরা ৫৮ জন মনে করে মেয়েরা প্রায়ই ছেলেদের নির্দোষ আচরণকেও নির্যাতন মনে করে।

গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ৮টি বিভাগের ১৬টি জেলায় ৫১৮ জন ব্যক্তির (পুরুষ ৫৩ শতাংশ) কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণাটি করা হয়েছে। 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মেয়েদের ভালো হতে উৎসাহী করা ও মন্দ বিষয়ে বাধা দেওয়া ও তাদের নিরাপদে রাখা পুরুষের দায়িত্ব বলে মনে করে শতকরা ৮০ ভাগ উত্তরদাতা। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নারী উত্তরদাতা ছিলো ৩৫ শতাংশ।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

‘মন্দ’ ছেলের তুলনায় ‘মন্দ’ মেয়ে বেশি বিপজ্জনক

আপডেট: ০৬:৩২:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ‘মন্দ’ মেয়ে ‘মন্দ’ ছেলের চেয়ে বেশি বিপজ্জনক বলে সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।  গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৭৪ জন উত্তরদাতা এটাই মনে করেন বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির সহজ বিস্তার এবং নারীর প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নারীর প্রতি সহিংসতা কর্মসূচির আওতায় বেসরকারি সংস্থা ডি-নেট দেশব্যাপী এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে গবেষণার সারসংক্ষেপ তুলে ধরে ডি-নেটের ইনোভেশন অ্যাডভাইজার সিরাজুল ইসলাম।

এ সময় তিনি বলে, দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার পাশাপাশি পর্নোগ্রাফি দেখার হারও বেড়েছে। গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৭৯ জন উত্তরদাতা বিশ্বাস করে সমাজে ‘ভালো’ ও ‘মন্দ’ মেয়ে আছে। গবেষণা প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মন্দ মেয়ের মতো আচরণ সমাজে অনাকাঙ্ক্ষিত।  কারণ সেই  আচরণ অন্য ছেলেমেয়েদের নষ্ট করে ফেলবে বলে মনে করে শতকরা ৭৯ জন উত্তরদাতা। 

‘মন্দ’ মেয়ে কারা
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মতে যারা নায়িকাদের মতো যৌন আবেদনময়ী আচরণ অথবা পশ্চিমা সংস্কৃতির পোশাক পরে ও আচরণ করে বা টিকটক, লাইকি ও ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে অনলাইনে ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে, তারাই মন্দ মেয়ে। অন্যদিকে যারা ধর্মীয় নিয়ম মেনে চলে তারা ভালো মেয়ে বলে মনে করে গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৬৬ জন।

‘মন্দ মেয়েদের প্রতি অপমানজনক আচরণ করা সমাজের জন্য উপকারী’
যারা অনলাইনে মন্দ মেয়ের মতো যারা আচরণ  করে, তাদের সেই আচরণ থেকে বিরত রাখার জন্য হেয় করা, খারাপ কথা বলা ও তাদের প্রতি অপমানজনক আচরণ করা সমাজের জন্য উপকারী বলে মনে করে গবেষণায় অংশ নেওয়া শতকরা ৪৪ জন উত্তরদাতা। 

মেয়েরা খোলামেলা পোশাক পরলে, অশালীন আচরণ করলে, খারাপ ভাষা ব্যবহার করলে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও মেলামেশা করলে, সেই মেয়েদের নানাভাবে হেয় ও তাদের প্রতি অপমানজনক আচরণ করা যায় বলে মনে করেন শতকরা ৮১ জন উত্তরদাতা। এসব উত্তরদাতার মধ্যে শতকরা ৩৯ জন নারী ও ৪২ জন পুরুষ।

মেয়েদের গণমাধ্যম, চলচ্চিত্রে কাজ করা, পুরুষের সঙ্গে রাতের শিফটে কাজ করা বা পুরুষের সঙ্গে দূরে কোথাও ভ্রমণ বা কাজে যাওয়া ঠিক নয় বলে মনে করে শতকরা ৫২ জন। এমন ধারণা পোষণকারীদের মধ্যে শতকরা ২১ জন নারী ও ৩১ জন পুরুষ এবং উত্তরদাতাদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি।

ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও মেয়েদের নিজেদেরও দোষ রয়েছে বলে ভাবে শতকরা ৫৩ শতাংশ উত্তরদাতা। শতকরা ৭৩ জন মনে করে যে একটি মেয়ের জীবন তখনই সফল হয়, যখন একটি উপযুক্ত ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শতকরা ৬৩ জন মনে করে মেয়েদের বেশি স্বাধীনতা দিলে তারা পুরুষদের নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে এবং শতকরা ৫৮ জন মনে করে মেয়েরা প্রায়ই ছেলেদের নির্দোষ আচরণকেও নির্যাতন মনে করে।

গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ৮টি বিভাগের ১৬টি জেলায় ৫১৮ জন ব্যক্তির (পুরুষ ৫৩ শতাংশ) কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণাটি করা হয়েছে। 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মেয়েদের ভালো হতে উৎসাহী করা ও মন্দ বিষয়ে বাধা দেওয়া ও তাদের নিরাপদে রাখা পুরুষের দায়িত্ব বলে মনে করে শতকরা ৮০ ভাগ উত্তরদাতা। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নারী উত্তরদাতা ছিলো ৩৫ শতাংশ।

ঢাকা/এসএ