০৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

মামুনুল-ফয়জুলের বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুই মাদ্রাসাছাত্র: পুলিশ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:২৫:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ৪১৩৫ বার দেখা হয়েছে

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দু’জন মাদ্রাসার শিক্ষক ও দু’জন মাদ্রাসার ছাত্র। 

পুলিশ বলছে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্য শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই দুই মাদ্রাসাছাত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন (২৭) ও মো. ইফসুফ আলী (২৬) এবং একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)। 

শিক্ষক মো. আল আমিনের বাড়ি জেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামে, বাবার নাম আবদুর রহমান ও অপর শিক্ষক মো. ইফসুফ আলীর বাড়ি পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকায়, বাবার নাম আজিজুল মণ্ডল। মাদ্রাসাছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুনের বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামে, বাবার নাম সমসের মৃধা ও মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের বাড়ি জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকায়, বাবার নাম মো. সামছুল আলম।

রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান। এসময় অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম নাহিদুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসাছাত্র আবু বক্কর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম নাহিদ তাদের মাদ্রাসা থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় সাদা পাঞ্জাবী, পাজামা ও কালো কোট পরা ওই দুই ছাত্র মই বেয়ে ভাস্কর্যের বেদিতে ওঠে। পরে একজনের ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালায়। মিশন শেষ করে তারা একইভাবে হেঁটে মাদ্রাসায় ফিরে বিষয়টি দুই শিক্ষককে (গ্রেপ্তার হওয়া) জানায়। এ সময় শিক্ষকরা ওই ছাত্রদের মাদ্রাসায় না থেকে বাড়ি চলে যেতে বলেন।

গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে জানান ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ওই মাদ্রাসা থেকে হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে, যাতে সাদা রঙ লেগেছিল।’ 

ডিআইজি আরও বলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি দল অভিযান পরিচালনা করে আবু বক্কর ওরফে মিঠুন এবং একই মাদরাসার শিক্ষার্থী দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গোলাবাড়ীয়া এলাকার সামছুল আলমের ছেলে সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদকে তাদের নিজ নিজ গ্রাম থেকে রোববার গ্রেপ্তার করে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশে ভাঙচুর করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে দেশব্যাপী ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদের মধ্যেই কুষ্টিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘটনায় কুষ্টিয়াসহ দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

শেয়ার করুন

x
English Version

মামুনুল-ফয়জুলের বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুই মাদ্রাসাছাত্র: পুলিশ

আপডেট: ০৭:২৫:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দু’জন মাদ্রাসার শিক্ষক ও দু’জন মাদ্রাসার ছাত্র। 

পুলিশ বলছে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্য শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই দুই মাদ্রাসাছাত্র বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিন (২৭) ও মো. ইফসুফ আলী (২৬) এবং একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) ও মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)। 

শিক্ষক মো. আল আমিনের বাড়ি জেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামে, বাবার নাম আবদুর রহমান ও অপর শিক্ষক মো. ইফসুফ আলীর বাড়ি পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকায়, বাবার নাম আজিজুল মণ্ডল। মাদ্রাসাছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুনের বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামে, বাবার নাম সমসের মৃধা ও মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদের বাড়ি জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকায়, বাবার নাম মো. সামছুল আলম।

রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান। এসময় অতিরিক্ত ডিআইজি কে এম নাহিদুল ইসলাম, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাতসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসাছাত্র আবু বক্কর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম নাহিদ তাদের মাদ্রাসা থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় সাদা পাঞ্জাবী, পাজামা ও কালো কোট পরা ওই দুই ছাত্র মই বেয়ে ভাস্কর্যের বেদিতে ওঠে। পরে একজনের ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালায়। মিশন শেষ করে তারা একইভাবে হেঁটে মাদ্রাসায় ফিরে বিষয়টি দুই শিক্ষককে (গ্রেপ্তার হওয়া) জানায়। এ সময় শিক্ষকরা ওই ছাত্রদের মাদ্রাসায় না থেকে বাড়ি চলে যেতে বলেন।

গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে জানান ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ওই মাদ্রাসা থেকে হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে, যাতে সাদা রঙ লেগেছিল।’ 

ডিআইজি আরও বলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি দল অভিযান পরিচালনা করে আবু বক্কর ওরফে মিঠুন এবং একই মাদরাসার শিক্ষার্থী দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গোলাবাড়ীয়া এলাকার সামছুল আলমের ছেলে সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদকে তাদের নিজ নিজ গ্রাম থেকে রোববার গ্রেপ্তার করে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশে ভাঙচুর করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে দেশব্যাপী ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদের মধ্যেই কুষ্টিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘটনায় কুষ্টিয়াসহ দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।