০২:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে যা করবেন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:২৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৪১৩৩ বার দেখা হয়েছে

ঘুম থেকে জাগার পরে মুখে দুর্গন্ধ হওয়াটাকে আমরা স্বাভাবিকভাবে দেখলেও সারাদিন মুখে দুর্গন্ধ থাকাটা এক ধরনের সমস্যা। মুখে দুর্গন্ধ থাকাটা মারাত্মক কোনো রোগ নয় ঠিকই, তবে শরীরের ভেতরকার কোনো অসুখের কারণ হতে পারে এটি। আবার মুখে দুর্গন্ধ হলে আত্মবিশ্বাসও কমতে শুরু করে। কারণ আপনি কারও সামনে কথা বলতেই লজ্জা পাবেন। এটি রীতিমতো অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মুখের দুর্গন্ধের পেছনে বড় ভূমিকা মুখগহ্বরে বা পেটে জন্মানো জীবাণু হতে পারে। আরও একটি কারণ হতে পারে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যাওয়া। ডা. অরূপরতন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই মুখের দুর্গন্ধ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলেছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডা. অরূপরতন চৌধুরীর মতে, ব্যক্তিত্ব ও সৌন্দর্যের অনেকখানিই নির্ভর করে মুখের স্বাস্থ্যগত অবস্থা তথা দুর্গন্ধমুক্ত মুখগহ্বরের ওপর। কিন্তু দুর্গন্ধ বা দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস অনেকসময়ই বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ হয়তো এমন অবস্থা সম্পর্কে খুব একটা অবগত থাকেন না।

মুখে দুর্গন্ধ কেন হয়

১. প্রতিবার খাওয়ার পর মুখের ভেতরে খাদ্য আবরণ দাঁতের ফাঁকে, মাড়ির ভেতর জমে ডেন্টাল প্লাক সৃষ্টি করে। পরে তা থেকে মাড়ির প্রদাহ দেখা দেয় (পেরিওডেন্টাল ডিজিজ)। এর ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয়।

২. মুখে যেকোনো ধরনের ঘা বা ক্ষত থাকলেও দুর্গন্ধ হয়।

৩. নিয়মিত নিয়মমতো মুখ ও দাঁতের পরিচর্যা না করা।

৪. যেসব খাবার মুখের পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে, তা বেশি খাওয়া।

৫. মুখের ক্যান্সারের কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে।

৬. দুর্ঘটনার কারণে ক্ষত।

যেসব রোগের কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে

পেপটিক আলসার বা পরিপাকতন্ত্রের রোগ, লিভারের রোগ, গর্ভাবস্থা, কিডনির জটিলতা, বাতজনিত রোগ, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র, হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ, গলা বা পাকস্থলীর ক্যানসার, এইডস, হৃদরোগ, মানসিক রোগ, নাক, কান ও গলার রোগ।

মুখে দুর্গন্ধ হলে যা করবেন

ডা. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই মুখের দুর্গন্ধ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, তিন বেলা খাওয়ার পর পরিষ্কার উন্নতমানের একটি ব্রাশ ও পেস্ট দিয়ে দাঁতের সব অংশে ভেতরে-বাইরে পরিষ্কার করতে হবে।

– অনেকেই শুধু দাঁত পরিষ্কার করেন, কিন্তু জিহ্বা পরিষ্কার করেন না। কিন্তু দাঁতের সঙ্গে জিহ্বা পরিষ্কার করাটাও অনেক জরুরি। বিশেষ টাং ক্র্যাপার বা টাং ক্লিনারের সাহায্যে এটা করা যায়। জিহ্বাতে অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা দুর্গন্ধের জন্য দায়ী।

– যেকোনো ধরনের মাউথওয়াশ (ক্লোরহেক্সিডিন জাতীয়) দুই চামচ মুখে ৩০ সেকেন্ড রেখে ফেলে দিয়ে আবার অল্প গরম লবণ পানিতে কুলকুচি করা। প্রতিদিন অন্তত দুবার, সকালে ও রাতে খাবারের পর কুলকুচি করা।

– প্রতিবার খাওয়ার পর (যা কিছু খাবেন, যেমন-বিস্কুট, ফলমূলজাতীয় খাবার) সম্ভব হলে দাঁত ব্রাশ করা অথবা কুলকুচি করা।

– ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য জর্দা, পান ইত্যাদি ত্যাগ করতে হবে। ধূমপান মুখ গহ্বরকে অধিক পরিমাণে শুষ্ক করে তোলে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে লালাও তৈরি হয় না। দাঁত ও জিহ্বাতে নিকোটিন জমে। এছাড়া ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহলও মুখের শুষ্কতার জন্য দায়ী। তাই এসব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: শীতে কোল্ড ডায়রিয়ায় মুক্তির উপায়

– দাঁতের ফাঁকে বা মাড়ির ভেতরে অনেক সময় খাদ্যকণা জমে পচন শুরু হয়। ডেন্টাল ফ্লস, টুথ পিকসের সাহায্যে খাদ্যকণাগুলো বের করা। এই ডেন্টাল ফ্লস বা সুতো এবং জীবাণুমুক্ত শলাকা ব্যবহারবিধি একজন ডেন্টাল সার্জনের কাছ থেকে জেনে নেওয়া ভালো।

– মুখের লালা নিঃসরণ বাড়াতে চিনিবিহীন গাম অথবা লজেন্স বা সুগারলেস চুইংগাম খাওয়ার কথা বলেন ড. অরূপরতন চৌধুরী।

ডা. অরূপরতন চৌধুরী আরও বলেন, অনেক সময় ডেন্টাল ক্যারিজ বা মাড়ির রোগের কারণে দাঁতে ফাঁক হতে পারে। তাই কোনো সিদ্ধান্তের আগে ডেন্টাল এক্স-রে করিয়ে নেওয়ার পর নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x
English Version

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে যা করবেন

আপডেট: ০৬:২৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪

ঘুম থেকে জাগার পরে মুখে দুর্গন্ধ হওয়াটাকে আমরা স্বাভাবিকভাবে দেখলেও সারাদিন মুখে দুর্গন্ধ থাকাটা এক ধরনের সমস্যা। মুখে দুর্গন্ধ থাকাটা মারাত্মক কোনো রোগ নয় ঠিকই, তবে শরীরের ভেতরকার কোনো অসুখের কারণ হতে পারে এটি। আবার মুখে দুর্গন্ধ হলে আত্মবিশ্বাসও কমতে শুরু করে। কারণ আপনি কারও সামনে কথা বলতেই লজ্জা পাবেন। এটি রীতিমতো অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মুখের দুর্গন্ধের পেছনে বড় ভূমিকা মুখগহ্বরে বা পেটে জন্মানো জীবাণু হতে পারে। আরও একটি কারণ হতে পারে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যাওয়া। ডা. অরূপরতন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই মুখের দুর্গন্ধ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলেছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডা. অরূপরতন চৌধুরীর মতে, ব্যক্তিত্ব ও সৌন্দর্যের অনেকখানিই নির্ভর করে মুখের স্বাস্থ্যগত অবস্থা তথা দুর্গন্ধমুক্ত মুখগহ্বরের ওপর। কিন্তু দুর্গন্ধ বা দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস অনেকসময়ই বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ হয়তো এমন অবস্থা সম্পর্কে খুব একটা অবগত থাকেন না।

মুখে দুর্গন্ধ কেন হয়

১. প্রতিবার খাওয়ার পর মুখের ভেতরে খাদ্য আবরণ দাঁতের ফাঁকে, মাড়ির ভেতর জমে ডেন্টাল প্লাক সৃষ্টি করে। পরে তা থেকে মাড়ির প্রদাহ দেখা দেয় (পেরিওডেন্টাল ডিজিজ)। এর ফলে মুখে দুর্গন্ধ হয়।

২. মুখে যেকোনো ধরনের ঘা বা ক্ষত থাকলেও দুর্গন্ধ হয়।

৩. নিয়মিত নিয়মমতো মুখ ও দাঁতের পরিচর্যা না করা।

৪. যেসব খাবার মুখের পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে, তা বেশি খাওয়া।

৫. মুখের ক্যান্সারের কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে।

৬. দুর্ঘটনার কারণে ক্ষত।

যেসব রোগের কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে

পেপটিক আলসার বা পরিপাকতন্ত্রের রোগ, লিভারের রোগ, গর্ভাবস্থা, কিডনির জটিলতা, বাতজনিত রোগ, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র, হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ, গলা বা পাকস্থলীর ক্যানসার, এইডস, হৃদরোগ, মানসিক রোগ, নাক, কান ও গলার রোগ।

মুখে দুর্গন্ধ হলে যা করবেন

ডা. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই মুখের দুর্গন্ধ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, তিন বেলা খাওয়ার পর পরিষ্কার উন্নতমানের একটি ব্রাশ ও পেস্ট দিয়ে দাঁতের সব অংশে ভেতরে-বাইরে পরিষ্কার করতে হবে।

– অনেকেই শুধু দাঁত পরিষ্কার করেন, কিন্তু জিহ্বা পরিষ্কার করেন না। কিন্তু দাঁতের সঙ্গে জিহ্বা পরিষ্কার করাটাও অনেক জরুরি। বিশেষ টাং ক্র্যাপার বা টাং ক্লিনারের সাহায্যে এটা করা যায়। জিহ্বাতে অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা দুর্গন্ধের জন্য দায়ী।

– যেকোনো ধরনের মাউথওয়াশ (ক্লোরহেক্সিডিন জাতীয়) দুই চামচ মুখে ৩০ সেকেন্ড রেখে ফেলে দিয়ে আবার অল্প গরম লবণ পানিতে কুলকুচি করা। প্রতিদিন অন্তত দুবার, সকালে ও রাতে খাবারের পর কুলকুচি করা।

– প্রতিবার খাওয়ার পর (যা কিছু খাবেন, যেমন-বিস্কুট, ফলমূলজাতীয় খাবার) সম্ভব হলে দাঁত ব্রাশ করা অথবা কুলকুচি করা।

– ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য জর্দা, পান ইত্যাদি ত্যাগ করতে হবে। ধূমপান মুখ গহ্বরকে অধিক পরিমাণে শুষ্ক করে তোলে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে লালাও তৈরি হয় না। দাঁত ও জিহ্বাতে নিকোটিন জমে। এছাড়া ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহলও মুখের শুষ্কতার জন্য দায়ী। তাই এসব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: শীতে কোল্ড ডায়রিয়ায় মুক্তির উপায়

– দাঁতের ফাঁকে বা মাড়ির ভেতরে অনেক সময় খাদ্যকণা জমে পচন শুরু হয়। ডেন্টাল ফ্লস, টুথ পিকসের সাহায্যে খাদ্যকণাগুলো বের করা। এই ডেন্টাল ফ্লস বা সুতো এবং জীবাণুমুক্ত শলাকা ব্যবহারবিধি একজন ডেন্টাল সার্জনের কাছ থেকে জেনে নেওয়া ভালো।

– মুখের লালা নিঃসরণ বাড়াতে চিনিবিহীন গাম অথবা লজেন্স বা সুগারলেস চুইংগাম খাওয়ার কথা বলেন ড. অরূপরতন চৌধুরী।

ডা. অরূপরতন চৌধুরী আরও বলেন, অনেক সময় ডেন্টাল ক্যারিজ বা মাড়ির রোগের কারণে দাঁতে ফাঁক হতে পারে। তাই কোনো সিদ্ধান্তের আগে ডেন্টাল এক্স-রে করিয়ে নেওয়ার পর নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঢাকা/এসএইচ