০৬:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

শাহ মোহাম্মদ সগীর ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে বিএসইসি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:৩৪:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অগাস্ট ২০২১
  • / ৪২৫৪ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির (ট্রেক- ১৭১) সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে প্রায় ১৩ কোটি টাকা ঘাটতি পাওয়া গেছে। সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে রক্ষিত বিনিয়োগকারীদের ওই অর্থ, আইন বহির্ভুতভাবে ব্যবহার করেছেন কোম্পানির পরিচালকরা। স্পষ্টতই কোম্পানির পরিচালকরা সিকিউরিটিজ লঙ্ঘন করেছেন। এ আইন বহির্ভুত কার্মকাণ্ডের জন্য শাহ মোহাম্মদ সগীরের পরিচালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ব্রোকারেজ হাউজ শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির কার্যালয় পরিদর্শন করে এবং আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় অনিয়মের তথ্য পেয়েছে ডিএসই। তথ্যে যাচাই-বাছাই করে সম্প্রতি বিএসইসির কমিশন সভায় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে, শাহ মোহাম্মদ সগিরের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ঘাটতির জন্য দায়ী মালিক বা পরিচালকদের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধন্ত গৃহীত হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর না করা পর্যন্ত ডিএসই’র শেয়ারে তাদের ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্জিত ও স্থগিত মুনাফা সংরক্ষণ থাকবে।

এছাড়া শাহ মোহাম্মদ সগীরের সার্বিক অর্থিক অবস্থার তথ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইতে দাখিল করার জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে বিএসইসির এসআরআই বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী শাহ মোহাম্মদ সগীরের সার্বিক অর্থিক অবস্থা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে ডিএসই। এছাড়া কোম্পানিটির সমন্বিত গ্রাহকদের হিসেবে আরো সিকিউরিটিজ (শেয়ার) ঘাটতি রয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা করা হবে। কোম্পানিটির শেয়ার হস্তান্তর বা বিক্রির প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা বিএসইসিকে অবহিত করবে ডিএসই। কোম্পানিটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের উপর প্রচলিত ব্যাংক রেটে চার বছরের সুদ আদায় করে গ্রাহকদের হিসেবে যথাযথভাবে জমা করবে।

এছাড়া কোম্পানিটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে সিকিউরিজের ঘাটতি পাওয়া গেলে, তা পূরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ডিএসই। এছাড়াও ডিএসইর কাছে জমা থাকা শাহ মোহাম্মদ সগীরের দু’টি চেক বাবদ ১২ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা দিয়ে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ঘাটতি পূরণসহ গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করবে। ওই টাকা দিয়ে গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত, অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিএসইসি।

২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে ডিএসইর সদস্যভুক্ত ১৮৬টি ব্রোকারেজ হাউজের দাখিল করা নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে বিএসইসি। এর মধ্যে ১৮টি ব্রোকারেজ হাউজ তাদের সমন্বিত গ্রহক হিসাবের অর্থ আইন বহির্ভূতভাবে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ পায় ডিএসই। যে তালিকায় শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি রয়েছে কিনা তা তদারকি করছে ডিএসই। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ডিএসইর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শাহ মোহাম্মদ সগীরের সার্বিক অর্থিক অবস্থা যাচাইয়ের কাজ চলছে। এ বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে সময় প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব কাজটি সম্পন্ন করে বিএসইসির কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে শাহ মোহাম্মদ সগীরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহমিনা জামানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন ধরেননি।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x

শাহ মোহাম্মদ সগীর ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে বিএসইসি

আপডেট: ০১:৩৪:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির (ট্রেক- ১৭১) সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে প্রায় ১৩ কোটি টাকা ঘাটতি পাওয়া গেছে। সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে রক্ষিত বিনিয়োগকারীদের ওই অর্থ, আইন বহির্ভুতভাবে ব্যবহার করেছেন কোম্পানির পরিচালকরা। স্পষ্টতই কোম্পানির পরিচালকরা সিকিউরিটিজ লঙ্ঘন করেছেন। এ আইন বহির্ভুত কার্মকাণ্ডের জন্য শাহ মোহাম্মদ সগীরের পরিচালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ব্রোকারেজ হাউজ শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির কার্যালয় পরিদর্শন করে এবং আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় অনিয়মের তথ্য পেয়েছে ডিএসই। তথ্যে যাচাই-বাছাই করে সম্প্রতি বিএসইসির কমিশন সভায় কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে, শাহ মোহাম্মদ সগিরের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ঘাটতির জন্য দায়ী মালিক বা পরিচালকদের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধন্ত গৃহীত হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর না করা পর্যন্ত ডিএসই’র শেয়ারে তাদের ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্জিত ও স্থগিত মুনাফা সংরক্ষণ থাকবে।

এছাড়া শাহ মোহাম্মদ সগীরের সার্বিক অর্থিক অবস্থার তথ্য সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইতে দাখিল করার জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে বিএসইসির এসআরআই বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী শাহ মোহাম্মদ সগীরের সার্বিক অর্থিক অবস্থা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে ডিএসই। এছাড়া কোম্পানিটির সমন্বিত গ্রাহকদের হিসেবে আরো সিকিউরিটিজ (শেয়ার) ঘাটতি রয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা করা হবে। কোম্পানিটির শেয়ার হস্তান্তর বা বিক্রির প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা বিএসইসিকে অবহিত করবে ডিএসই। কোম্পানিটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের উপর প্রচলিত ব্যাংক রেটে চার বছরের সুদ আদায় করে গ্রাহকদের হিসেবে যথাযথভাবে জমা করবে।

এছাড়া কোম্পানিটির সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে সিকিউরিজের ঘাটতি পাওয়া গেলে, তা পূরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ডিএসই। এছাড়াও ডিএসইর কাছে জমা থাকা শাহ মোহাম্মদ সগীরের দু’টি চেক বাবদ ১২ কোটি ৭৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা দিয়ে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের ঘাটতি পূরণসহ গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করবে। ওই টাকা দিয়ে গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত, অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিএসইসি।

২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে ডিএসইর সদস্যভুক্ত ১৮৬টি ব্রোকারেজ হাউজের দাখিল করা নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে বিএসইসি। এর মধ্যে ১৮টি ব্রোকারেজ হাউজ তাদের সমন্বিত গ্রহক হিসাবের অর্থ আইন বহির্ভূতভাবে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ পায় ডিএসই। যে তালিকায় শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি রয়েছে কিনা তা তদারকি করছে ডিএসই। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ডিএসইর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শাহ মোহাম্মদ সগীরের সার্বিক অর্থিক অবস্থা যাচাইয়ের কাজ চলছে। এ বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে সময় প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব কাজটি সম্পন্ন করে বিএসইসির কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে শাহ মোহাম্মদ সগীরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহমিনা জামানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন ধরেননি।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: