১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

শীতে গোসলের কোন ভুলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:০৬:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৪১১১ বার দেখা হয়েছে

একটু শীত পড়তে না পড়তেই গরম পানির দিকে ঝুঁকে পড়ে মানুষ। যাদের নিয়মিত গোসল করার অভ্যাস তারা গরম পানি দিয়ে হলেও গোসল করে থাকে। তবে অনেকেই আবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে পছন্দ করেন। কিন্তু যারা শীতের দিনে  ঠান্ডা পানিতে গোসলে অভ্যস্ত তারা কিন্তু এ সময় অজান্তেই বিপদে পড়তে পারেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শীতের দিনে অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়ায় যদি আপনি বরফ শীতল পানিতে গোসল করেন সেক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিভিন্ন সমীক্ষা ও দগবেষণা এমনটাই বলেছ। আর এ কারণেই শীতে বাথরুমে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বেশি ঘটে।

ভারতের মোহালির ফোর্টিস হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. করুণ বেহালের মতে, ঘরে ও বাইরের তাপমাত্রার পার্থক্য হৃদযন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ঠান্ডায় রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয় ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। এ কারণে অতিরিক্ত ঠান্ডা কিংবা গরম পানিতে গোসল করলে শরীরে শক লাগে। শীতে গোসলের জন্য আদর্শ উপায় হলো বেশি ঠান্ডা আবার গরম নয় এমন পানিতে গোসল করা।

শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা কেন এতো ঝুঁকিপূর্ণ

অত্যধিক ঠান্ডা আবহাওয়ায় গায়ে পানি ঢালতেই শরীরে একটি ঝাঁকুনি অনুভুত হয়, একই সঙ্গে শরীরের সব লোম দাঁড়িয়ে যায় (গুজবাম্প হয়)। ঠিক ওই মুহূর্তে শরীর রক্ত সঞ্চালনকে ওভারড্রাইভে পাঠায়। হৃদযন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে রক্ষা করতে দ্রুত রক্ত পাম্প করতে শুরু করে ও ত্বককে সংকুচিত করে। এ কারণে কাঁপুনির সৃষ্টি হয় শরীরে। যা হার্টের উপর আরও চাপ দেয়।

যদিও ফিটনেসবিদরা শরীরের বিপাক বাড়াতে ঠান্ডা ঝরনা ব্যবহারের উপকারিতা ও বিভিন্ন যুক্তি ব্যবহার করেছেন। তাদের মতে, ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের উচ্চতর প্রতিক্রিয়া বিপাকের হারকে বাড়িয়ে তোলে, শক্তি ব্যয় করে ওঅতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়ায়।

কিছু গবেষক এও দাবি করেছেন যে, বরফ মেশানো পানিতে গোসল করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে আরও প্রতিরোধী করে তুলতে পারে।নেদারল্যান্ডে একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসলের কারণে প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষের অসুস্থতার ঝুঁকি কমেছে। যদিও ঠান্ডা পানিতে গোসলেরও অনেক উপকারিতা আছে, তবে শরীর বুঝে তবেই তা অনুসরণ করতে হবে।

যারা শারীরিকভাবে একেবারে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান শুধু তারাই এ ধরনের অভ্যাস অনুসরণ করতে পারেন। তবে আপনি যদি ফিট না হন ও হার্টের অসুখে ভুগেন তাহলে ঠান্ডা পানিতে গোসল এড়িয়ে যান।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে দুইজনের মৃত্যু

ডা. বেহাল এই বিষয়ে বলেন, হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা অ্যারিথমিয়া হতে পারে। এর থেকে বৃহত্তর কার্ডিয়াক অ্যাটাক ঘটতে পারে। এ কারণে শীতে অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানিতে গোসল করলে রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে বা কমে যেতে পারে, যা হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

বেশি ঠান্ডাও না আবার গরমও নয় এমন পানিতে গোসল করুন, প্রথমে হাত-পা ভেজান তারপর একে একে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পানি ঢালুন ও এভাবে গোসল সম্পন্ন করুন। তবে হঠাৎ করে কখনো শরীরে পানি ঢালবেন না, এতে শরীরের ভেতরে শকের সৃষ্টি হতে পারে।

শীত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাবেন যেভাবে

শীতে রক্তচাপ বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ধমনীর সংকোচন। কম সূর্যের সংস্পর্শে যাওয়া, শারীরিক কার্যকলাপ না করা, যার থেকে শরীরে লবণ ধারণ করে ও রক্ত জমাট বাঁধে। তাই ভিটামিন ডি গ্রহণ করুন ও শরীরচর্চা করুন নিয়মিত। হালকা খাবার গ্রহণ করুন, পর্যাপ্ত পশমী পোশাক পরুন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন।

ঢাকা/এসএইচ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

শীতে গোসলের কোন ভুলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক

আপডেট: ০৭:০৬:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

একটু শীত পড়তে না পড়তেই গরম পানির দিকে ঝুঁকে পড়ে মানুষ। যাদের নিয়মিত গোসল করার অভ্যাস তারা গরম পানি দিয়ে হলেও গোসল করে থাকে। তবে অনেকেই আবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে পছন্দ করেন। কিন্তু যারা শীতের দিনে  ঠান্ডা পানিতে গোসলে অভ্যস্ত তারা কিন্তু এ সময় অজান্তেই বিপদে পড়তে পারেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শীতের দিনে অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়ায় যদি আপনি বরফ শীতল পানিতে গোসল করেন সেক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিভিন্ন সমীক্ষা ও দগবেষণা এমনটাই বলেছ। আর এ কারণেই শীতে বাথরুমে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বেশি ঘটে।

ভারতের মোহালির ফোর্টিস হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. করুণ বেহালের মতে, ঘরে ও বাইরের তাপমাত্রার পার্থক্য হৃদযন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ঠান্ডায় রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয় ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। এ কারণে অতিরিক্ত ঠান্ডা কিংবা গরম পানিতে গোসল করলে শরীরে শক লাগে। শীতে গোসলের জন্য আদর্শ উপায় হলো বেশি ঠান্ডা আবার গরম নয় এমন পানিতে গোসল করা।

শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা কেন এতো ঝুঁকিপূর্ণ

অত্যধিক ঠান্ডা আবহাওয়ায় গায়ে পানি ঢালতেই শরীরে একটি ঝাঁকুনি অনুভুত হয়, একই সঙ্গে শরীরের সব লোম দাঁড়িয়ে যায় (গুজবাম্প হয়)। ঠিক ওই মুহূর্তে শরীর রক্ত সঞ্চালনকে ওভারড্রাইভে পাঠায়। হৃদযন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে রক্ষা করতে দ্রুত রক্ত পাম্প করতে শুরু করে ও ত্বককে সংকুচিত করে। এ কারণে কাঁপুনির সৃষ্টি হয় শরীরে। যা হার্টের উপর আরও চাপ দেয়।

যদিও ফিটনেসবিদরা শরীরের বিপাক বাড়াতে ঠান্ডা ঝরনা ব্যবহারের উপকারিতা ও বিভিন্ন যুক্তি ব্যবহার করেছেন। তাদের মতে, ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের উচ্চতর প্রতিক্রিয়া বিপাকের হারকে বাড়িয়ে তোলে, শক্তি ব্যয় করে ওঅতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়ায়।

কিছু গবেষক এও দাবি করেছেন যে, বরফ মেশানো পানিতে গোসল করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে ও অসুস্থতার বিরুদ্ধে আরও প্রতিরোধী করে তুলতে পারে।নেদারল্যান্ডে একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসলের কারণে প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষের অসুস্থতার ঝুঁকি কমেছে। যদিও ঠান্ডা পানিতে গোসলেরও অনেক উপকারিতা আছে, তবে শরীর বুঝে তবেই তা অনুসরণ করতে হবে।

যারা শারীরিকভাবে একেবারে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান শুধু তারাই এ ধরনের অভ্যাস অনুসরণ করতে পারেন। তবে আপনি যদি ফিট না হন ও হার্টের অসুখে ভুগেন তাহলে ঠান্ডা পানিতে গোসল এড়িয়ে যান।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে দুইজনের মৃত্যু

ডা. বেহাল এই বিষয়ে বলেন, হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা অ্যারিথমিয়া হতে পারে। এর থেকে বৃহত্তর কার্ডিয়াক অ্যাটাক ঘটতে পারে। এ কারণে শীতে অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানিতে গোসল করলে রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে বা কমে যেতে পারে, যা হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

বেশি ঠান্ডাও না আবার গরমও নয় এমন পানিতে গোসল করুন, প্রথমে হাত-পা ভেজান তারপর একে একে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পানি ঢালুন ও এভাবে গোসল সম্পন্ন করুন। তবে হঠাৎ করে কখনো শরীরে পানি ঢালবেন না, এতে শরীরের ভেতরে শকের সৃষ্টি হতে পারে।

শীত হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাবেন যেভাবে

শীতে রক্তচাপ বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ধমনীর সংকোচন। কম সূর্যের সংস্পর্শে যাওয়া, শারীরিক কার্যকলাপ না করা, যার থেকে শরীরে লবণ ধারণ করে ও রক্ত জমাট বাঁধে। তাই ভিটামিন ডি গ্রহণ করুন ও শরীরচর্চা করুন নিয়মিত। হালকা খাবার গ্রহণ করুন, পর্যাপ্ত পশমী পোশাক পরুন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন।

ঢাকা/এসএইচ