১১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪

সরকারি গুদামের চাল খোলাবাজারে বিক্রি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২
  • / ৪১৫৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে খাদ্যগুদাম থেকে সরকারি চাল রাতের আঁধারে ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন গুদামে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। কাগজে-কলমে গুদামে চালের যে মজুত দেখানো হচ্ছে প্রকৃত অর্থে তার চেয়ে বেশি মজুত থাকায় জুন ক্লোজিংয়ের আগেই চাল সরানো হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।

খাদ্যগুদামের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশে চাল সরাচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে নগরীর চাক্তাই এলাকার একটি গুদামে সরকারি চাল নামানোর সময় পুলিশ ট্রাকটি চালসহ জব্দ করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন বাকলিয়া থানার ওসি আবদুর রহিম।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীকে রেশনের চাল দেওয়া হয়। আবার টিআর-কাবিখা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় এ চাল দিয়ে। ওএমএসের চালও আছে। এসব প্রকল্পের জন্য সরকার হাজার হাজার টন চাল আমদানি করে। আমদানির পর এসব চাল দেওয়ান হাট সিএসডিসহ সরকারি বিভিন্ন গুদামে মজুত করা হয়। চট্টগ্রাম মজুত চাল চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ হয়ে থাকে। খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাহিদাপত্রের ভিত্তিতে তা বরাদ্দ করা হয়। খাদ্য পরিবহণ ঠিকাদাররা এসব চাল গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। সূত্র বলছে, সরকারি এসব চাল দামে কম। মানেও ভালো। আবার হাজার হাজার টন চালের মুজত থাকলেও তার হিসাবে নানা গরমিল থাকে। সরকারি এসব চাল নানা কৌশলে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বিক্রির টাকা ভাগাভাগি করে নেন খাদ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় দেওয়ান হাট খাদ্য গুদাম থেকে লোড হওয়া এক ট্রাক চাল যাওয়ার কথা পার্বত্য চট্টগ্রামের গুইমারা এলাকায়। কিন্তু গুদাম থেকে বের হওয়ার পর সেই ট্রাক (ঝিনাইদহ-ট-১১-১০১১) চাল নিয়ে চলে যায় চাক্তাই এলাকার একটি গুদামে। বাকলিয়া থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ট্রাকটি আটক করে। জব্দ করা চাল সিলগালা করে দেয়।

চাল বের হওয়ার নেপথ্যে: ৩০ জুন ক্লোজিং। ওই তারিখে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ও খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চালের প্রকৃত মজুত নির্ণয় করবেন। কিন্তু সিএসডিতে কাগজে-কলমে যে পরিমাণ চাল রয়েছে বাস্তবে নানা কারণে তার চেয়ে অনেক বেশি চাল মজুত আছে। এ কারণে শত শত চালের বস্তা ট্রাকে ট্রাকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সিএসডির একাধিক কর্মকর্তা জানান, খাদ্য বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত করে সিএসডি থেকে রাতের আঁধারে চাল বিক্রির মহোৎসবে মেতেছেন। হালিশহর সিএসডি একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুন ক্লোজিংকে কেন্দ্র করে চাল চুরির মহোৎসব চলছিল সিএসডিতে। নানা অপকৌশলে সিএসডি থেকে চাল বের করা হচ্ছিল। গত এক সপ্তাহ থেকে প্রতি রাতে শত শত টন চাল বিক্রি করা হয়েছে। ওএমএসের ট্রাকে করেও বিপুল পরিমাণ চাল বের করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ডিমান্ড লেটার ও কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করা হয়। ওএমএসের ট্রাকে ৩ টন বা ৪ টন চাল বের করার বিধান থাকলেও বাস্তবে ১০ টনের বেশি চাল বের করে বাইরে বিক্রি করা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে।

দেওয়ান হাট সিএসডির সহকারী ম্যানেজার নাসির উদ্দিন বুধবার দুপুরে বলেন, ‘চাক্তাই থেকে চালের যে ট্রাক জব্দ করা হয়েছে ওই চাল রাঙামাটি সদর গুদামে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে শুনেছি এই চালের ট্রাক চাক্তাই থেকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

সরকারি গুদামের চাল খোলাবাজারে বিক্রি

আপডেট: ০১:৫৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে খাদ্যগুদাম থেকে সরকারি চাল রাতের আঁধারে ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন গুদামে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। কাগজে-কলমে গুদামে চালের যে মজুত দেখানো হচ্ছে প্রকৃত অর্থে তার চেয়ে বেশি মজুত থাকায় জুন ক্লোজিংয়ের আগেই চাল সরানো হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।

খাদ্যগুদামের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশে চাল সরাচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে নগরীর চাক্তাই এলাকার একটি গুদামে সরকারি চাল নামানোর সময় পুলিশ ট্রাকটি চালসহ জব্দ করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন বাকলিয়া থানার ওসি আবদুর রহিম।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীকে রেশনের চাল দেওয়া হয়। আবার টিআর-কাবিখা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় এ চাল দিয়ে। ওএমএসের চালও আছে। এসব প্রকল্পের জন্য সরকার হাজার হাজার টন চাল আমদানি করে। আমদানির পর এসব চাল দেওয়ান হাট সিএসডিসহ সরকারি বিভিন্ন গুদামে মজুত করা হয়। চট্টগ্রাম মজুত চাল চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ হয়ে থাকে। খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাহিদাপত্রের ভিত্তিতে তা বরাদ্দ করা হয়। খাদ্য পরিবহণ ঠিকাদাররা এসব চাল গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। সূত্র বলছে, সরকারি এসব চাল দামে কম। মানেও ভালো। আবার হাজার হাজার টন চালের মুজত থাকলেও তার হিসাবে নানা গরমিল থাকে। সরকারি এসব চাল নানা কৌশলে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বিক্রির টাকা ভাগাভাগি করে নেন খাদ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় দেওয়ান হাট খাদ্য গুদাম থেকে লোড হওয়া এক ট্রাক চাল যাওয়ার কথা পার্বত্য চট্টগ্রামের গুইমারা এলাকায়। কিন্তু গুদাম থেকে বের হওয়ার পর সেই ট্রাক (ঝিনাইদহ-ট-১১-১০১১) চাল নিয়ে চলে যায় চাক্তাই এলাকার একটি গুদামে। বাকলিয়া থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ট্রাকটি আটক করে। জব্দ করা চাল সিলগালা করে দেয়।

চাল বের হওয়ার নেপথ্যে: ৩০ জুন ক্লোজিং। ওই তারিখে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ও খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চালের প্রকৃত মজুত নির্ণয় করবেন। কিন্তু সিএসডিতে কাগজে-কলমে যে পরিমাণ চাল রয়েছে বাস্তবে নানা কারণে তার চেয়ে অনেক বেশি চাল মজুত আছে। এ কারণে শত শত চালের বস্তা ট্রাকে ট্রাকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সিএসডির একাধিক কর্মকর্তা জানান, খাদ্য বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আঁতাত করে সিএসডি থেকে রাতের আঁধারে চাল বিক্রির মহোৎসবে মেতেছেন। হালিশহর সিএসডি একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুন ক্লোজিংকে কেন্দ্র করে চাল চুরির মহোৎসব চলছিল সিএসডিতে। নানা অপকৌশলে সিএসডি থেকে চাল বের করা হচ্ছিল। গত এক সপ্তাহ থেকে প্রতি রাতে শত শত টন চাল বিক্রি করা হয়েছে। ওএমএসের ট্রাকে করেও বিপুল পরিমাণ চাল বের করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ডিমান্ড লেটার ও কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করা হয়। ওএমএসের ট্রাকে ৩ টন বা ৪ টন চাল বের করার বিধান থাকলেও বাস্তবে ১০ টনের বেশি চাল বের করে বাইরে বিক্রি করা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে।

দেওয়ান হাট সিএসডির সহকারী ম্যানেজার নাসির উদ্দিন বুধবার দুপুরে বলেন, ‘চাক্তাই থেকে চালের যে ট্রাক জব্দ করা হয়েছে ওই চাল রাঙামাটি সদর গুদামে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে শুনেছি এই চালের ট্রাক চাক্তাই থেকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ঢাকা/এসএ