০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

সাত লাখ টাকায় বিক্রি হয় বিমানে নিয়োগের প্রশ্ন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:০৫:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪২০১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিক্রি হয়েছে দুই থেকে সাত লাখ টাকায়। যারা তাৎক্ষণিকভাবে টাকা দিতে পারেনি, তাদের সঙ্গে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি হয়েছে। চাকরি পাওয়ার পর তারা টাকা অথবা জমি-বাড়ি দিতে বাধ্য থাকবে- এমনটাই লেখা ছিল সেই চুক্তিতে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

প্রশ্ন ফাঁসকাণ্ডে গ্রেপ্তারকৃতদের নিজের হাতে লেখা ডায়েরিতে লাখ-লাখ টাকা গ্রহণ এবং তা বণ্টনের প্রমান পাওয়া গেছে। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে নগদ টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক চেকের মাধ্যমেও টাকা হাতিয়েছে চক্রটি। এই চক্রে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত সংস্থাটির পাঁচ কর্মীকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার এসব তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হল- এমটি অপারেটর জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ মাহফুজ আলম ভূঁইয়া ও এনামুল হক এবং অফিস সহায়ক আওলাদ হোসেন ও হারুনুর রশিদ।

শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও ডিবি লালবাগ বিভাগের একাধিক দল বিমানবন্দর ও কাওলা এলাকায় এ অভিযান চালায়। গ্রেপ্তারকালে তাদের কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্নের সফট/হার্ডকপি, মোবাইল ফোন, নগদ দেড় লাখ টাকা, ব্যাংকের চেক, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত দলিল, হিসাব-নিকাশের চারটি ডায়েরি ও বিভিন্ন প্রার্থীর এডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে আজ রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, শুক্রবার বিমানের বিভিন্ন ট্রেডে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে এমন তথ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন গোয়েন্দারা। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ১০০ প্রশ্ন সম্বলিত প্রশ্নপত্র তাদের হাতে আসে। এরপর জড়িত পাঁচজনকে আইনের আওতায় আনা হয়।

আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫০টি শিল্প ইউনিট উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

তিনি আরও বলেন, বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা এই পাঁচ আসামি এবং শনাক্ত হওয়া আরও কয়েকজন মিলে নিয়োগ বিজ্ঞাপনের পরপরই প্রশ্নফাঁসের ছক কষতে থাকে। কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস করবে, কীভাবে তা বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করবে, কোন চ্যানেলে টাকা সংগ্রহ করবে এবং কীভাবে তা বণ্টন করবে ইত্যাদি বিষয়ে তাদের আলোচনা হয়। প্রশ্ন প্রণয়ন, প্রিন্টিং এবং তা সংরক্ষণ কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে থাকা আসামিরা প্রশ্নের হুবহু কপি সংগ্রহ করে সরাসরি অথবা হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করে। নির্দিষ্ট চাকরিপ্রার্থীদের বিপুল টাকার বিনিময়ে প্রশ্নের সমাধান মুখস্ত করিয়ে তাদের চাকরি প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে। প্রশ্ন ফাঁস এবং প্রশ্নপত্র দিয়ে উত্তরপত্র মুখস্ত করানো বাবদ ভিন্ন ভিন্ন অংকের টাকা গ্রহণ করে চক্রটি। এর আগেও আসামিরা প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা  অনিয়মের কাজ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

ডিবি প্রধান জানান, বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ প্রতিটি নিয়োগের ক্ষেত্রেই জিএম, ডিজিএমদের সমন্বয়ে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রিন্ট, সংরক্ষণ, পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া এবং পরীক্ষা কন্ডাক্ট করে দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটি প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে প্রত্যাশা করা হয়। কীভাবে কমিটির চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢালাওভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলো তার রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা কমিটির সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

সাত লাখ টাকায় বিক্রি হয় বিমানে নিয়োগের প্রশ্ন

আপডেট: ০৩:০৫:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিক্রি হয়েছে দুই থেকে সাত লাখ টাকায়। যারা তাৎক্ষণিকভাবে টাকা দিতে পারেনি, তাদের সঙ্গে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি হয়েছে। চাকরি পাওয়ার পর তারা টাকা অথবা জমি-বাড়ি দিতে বাধ্য থাকবে- এমনটাই লেখা ছিল সেই চুক্তিতে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

প্রশ্ন ফাঁসকাণ্ডে গ্রেপ্তারকৃতদের নিজের হাতে লেখা ডায়েরিতে লাখ-লাখ টাকা গ্রহণ এবং তা বণ্টনের প্রমান পাওয়া গেছে। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে নগদ টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক চেকের মাধ্যমেও টাকা হাতিয়েছে চক্রটি। এই চক্রে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত সংস্থাটির পাঁচ কর্মীকে গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার এসব তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হল- এমটি অপারেটর জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ মাহফুজ আলম ভূঁইয়া ও এনামুল হক এবং অফিস সহায়ক আওলাদ হোসেন ও হারুনুর রশিদ।

শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও ডিবি লালবাগ বিভাগের একাধিক দল বিমানবন্দর ও কাওলা এলাকায় এ অভিযান চালায়। গ্রেপ্তারকালে তাদের কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্নের সফট/হার্ডকপি, মোবাইল ফোন, নগদ দেড় লাখ টাকা, ব্যাংকের চেক, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত দলিল, হিসাব-নিকাশের চারটি ডায়েরি ও বিভিন্ন প্রার্থীর এডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে আজ রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, শুক্রবার বিমানের বিভিন্ন ট্রেডে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে এমন তথ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন গোয়েন্দারা। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ১০০ প্রশ্ন সম্বলিত প্রশ্নপত্র তাদের হাতে আসে। এরপর জড়িত পাঁচজনকে আইনের আওতায় আনা হয়।

আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫০টি শিল্প ইউনিট উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

তিনি আরও বলেন, বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা এই পাঁচ আসামি এবং শনাক্ত হওয়া আরও কয়েকজন মিলে নিয়োগ বিজ্ঞাপনের পরপরই প্রশ্নফাঁসের ছক কষতে থাকে। কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস করবে, কীভাবে তা বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করবে, কোন চ্যানেলে টাকা সংগ্রহ করবে এবং কীভাবে তা বণ্টন করবে ইত্যাদি বিষয়ে তাদের আলোচনা হয়। প্রশ্ন প্রণয়ন, প্রিন্টিং এবং তা সংরক্ষণ কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে থাকা আসামিরা প্রশ্নের হুবহু কপি সংগ্রহ করে সরাসরি অথবা হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করে। নির্দিষ্ট চাকরিপ্রার্থীদের বিপুল টাকার বিনিময়ে প্রশ্নের সমাধান মুখস্ত করিয়ে তাদের চাকরি প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে। প্রশ্ন ফাঁস এবং প্রশ্নপত্র দিয়ে উত্তরপত্র মুখস্ত করানো বাবদ ভিন্ন ভিন্ন অংকের টাকা গ্রহণ করে চক্রটি। এর আগেও আসামিরা প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা  অনিয়মের কাজ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

ডিবি প্রধান জানান, বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ প্রতিটি নিয়োগের ক্ষেত্রেই জিএম, ডিজিএমদের সমন্বয়ে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রিন্ট, সংরক্ষণ, পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া এবং পরীক্ষা কন্ডাক্ট করে দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটি প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে প্রত্যাশা করা হয়। কীভাবে কমিটির চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢালাওভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলো তার রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা কমিটির সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/এসএ