০১:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:৫৪:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪১৮২ বার দেখা হয়েছে

মো. সাহাবুদ্দিন কে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে দুপুরে রাষ্ট্রপতি পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তখনই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন, এ বিষয়ে আজই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

গতকাল রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দাখিল করা মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর মাত্র একজনের মনোনয়ন বৈধ থাকায় মো. সাহাবুদ্দিনকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন ১৯৯১-এর ধারা ৭ অনুসারে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

এর আগে রাষ্ট্রপতি পদে দলের হয়ে সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর রোববার সকালে তাকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে যান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেখানে মনোনয়ন ফরম জমা দেন তারা। তা যাচাই-বাছাই শেষে সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্য দিয়ে তিনিই হলেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপ্রধান।

মো. সাহাবুদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী সাহাবুদ্দিন একাধারে আইনজীবী, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও বিচারক ছিলেন।

আরও পড়ুন: যোগ্য ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ: সেতুমন্ত্রী

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করার পর ২০ আগস্ট সামরিক আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাভোগ করেন মো. সাহাবুদ্দিন। তার জন্ম ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায়। বাবা মরহুম শরফুদ্দীন আনসারী এবং মা মোসাম্মৎ খায়রুন্নেছা।

মো. সাহাবুদ্দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। ছাত্রাবস্থায় ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীন বাংলা ছাত্র পরিষদের পাবনা জেলার নেতা হিসেবে পাবনায় স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারীদের অন্যতম মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৭১ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন তিনি।

১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন মো. সাহাবুদ্দিন। কর্মজীবনে তিনি সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।

অধুনালুপ্ত বাংলার বাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন মো. সাহাবুদ্দিন। এছাড়া প্রেষণে আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. সাহাবুদ্দিন। তখন সরকারের কাছে এ বিষয়ে ১৩৯৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট পেশ করেছিলেন তিনি।

তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের যুগ্ম সচিব থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তাদের একমাত্র সন্তান মো. আরশাদ আদনান একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

আপডেট: ০৫:৫৪:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মো. সাহাবুদ্দিন কে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে দুপুরে রাষ্ট্রপতি পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তখনই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানিয়েছিলেন, এ বিষয়ে আজই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

গতকাল রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দাখিল করা মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর মাত্র একজনের মনোনয়ন বৈধ থাকায় মো. সাহাবুদ্দিনকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন ১৯৯১-এর ধারা ৭ অনুসারে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

এর আগে রাষ্ট্রপতি পদে দলের হয়ে সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর রোববার সকালে তাকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে যান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেখানে মনোনয়ন ফরম জমা দেন তারা। তা যাচাই-বাছাই শেষে সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্য দিয়ে তিনিই হলেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপ্রধান।

মো. সাহাবুদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী সাহাবুদ্দিন একাধারে আইনজীবী, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও বিচারক ছিলেন।

আরও পড়ুন: যোগ্য ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ: সেতুমন্ত্রী

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করার পর ২০ আগস্ট সামরিক আইনের ৭ ধারায় আটক হয়ে প্রায় তিন বছর কারাভোগ করেন মো. সাহাবুদ্দিন। তার জন্ম ১৯৪৯ সালে পাবনা শহরের জুবিলি ট্যাঙ্কপাড়ায়। বাবা মরহুম শরফুদ্দীন আনসারী এবং মা মোসাম্মৎ খায়রুন্নেছা।

মো. সাহাবুদ্দিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। ছাত্রাবস্থায় ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীন বাংলা ছাত্র পরিষদের পাবনা জেলার নেতা হিসেবে পাবনায় স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলনকারীদের অন্যতম মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৭১ সালে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন তিনি।

১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন মো. সাহাবুদ্দিন। কর্মজীবনে তিনি সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজ হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপকও ছিলেন তিনি।

অধুনালুপ্ত বাংলার বাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন মো. সাহাবুদ্দিন। এছাড়া প্রেষণে আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. সাহাবুদ্দিন। তখন সরকারের কাছে এ বিষয়ে ১৩৯৭ পৃষ্ঠার রিপোর্ট পেশ করেছিলেন তিনি।

তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের যুগ্ম সচিব থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তাদের একমাত্র সন্তান মো. আরশাদ আদনান একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

ঢাকা/টিএ