০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের কবলে পুঁজিবাজার : হার্ডলাইনে বিএসইসি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:১১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪১৫২ বার দেখা হয়েছে

দেশের পুঁজিবাজার পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন এবং পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে সক্রিয় রয়েছে একটি কারসাজি চক্র। সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে ওই চক্রটি শেয়ারের দাম কমিয়ে তলানিতে এনে সেসব শেয়ার হাতিয়ে নিচ্ছে।

পরিণতিতে একদিকে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতনে অস্থিরতা বাড়ছে। অন্যদিক নিঃস্ব করে পথে বসিয়ে দিচ্ছে শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন থেকে সক্রিয় থাকা হাজার হাজার সাধারণ বিনিয়োগকারী।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এই কারসাজি চক্রটি পুঁজিবাজারের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। সিরিয়াল ট্রেডিং বা কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের ইতোমধ্য চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসি’র সার্ভেইল্যান্স বিভাগের অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, কারসাজি চক্রটি কম দামে শেয়ার হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতেই ওপেনিং প্রাইসের থেকে কম মূল্যে ইনডেক্স মুভার কোম্পানির শেয়ার বিক্রি শুরু করে। দাম কমলে চক্রটির অন্য সদস্যরা ভিন্ন বিও অ্যাকাউন্ট থেকে ওই শেয়ার হাতিয়ে নিচ্ছে।

যে কারণে পুঁজিবাজারে মূল্য সূচকে বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কারণে অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারের দামেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এসব কোম্পানির শেয়ারদর সামান্য কমলেও সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যেমন আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি কম দামে শেয়ার বিক্রির চাপে লাগাতার পতন কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার।

সক্রিয় এই কারসাজি চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে শেয়ারবাজারকে অস্থির করে তুলছে। এখানেই ওরা সীমাবদ্ধ নয়, বিভিন্ন ব্রোকার হাউসের কর্মকর্তাদের ফোন করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকার ও কমিশনের বিরুদ্ধে মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে আসছে। বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স টিমের অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

আরও পড়ুন: পতনের বৃত্তে পুঁজিবাজার: সূচক নেমেছে তিন বছরের আগের অবস্থানে

বিএসইসি আরো সূত্রে জানা গেছে, কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। পাশাপাশি কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে চিহ্নিত করে যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে আইপিও কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। একইসঙ্গে যেসব ব্যক্তি এসব কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে জরিমানার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান (ব্রোকারেজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক) কারসাজির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সনদ নবায়ন স্থগিত করাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে এক বা একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বা কমিয়ে কারসাজি করে থাকে।

এছাড়া একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে একজন ব্যক্তি বা এককাধিক ব্যক্তি (সংঘবদ্ধ চক্র) কয়েকটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিজেদের মধ্যেই শেয়ার কেনা-বেচা করে দাম বাড়ানোর বা কমানোই সিরিয়াল ট্রেডিং।

শেয়ার করুন

x
English Version

সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের কবলে পুঁজিবাজার : হার্ডলাইনে বিএসইসি

আপডেট: ১১:১১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

দেশের পুঁজিবাজার পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন এবং পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে সক্রিয় রয়েছে একটি কারসাজি চক্র। সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে ওই চক্রটি শেয়ারের দাম কমিয়ে তলানিতে এনে সেসব শেয়ার হাতিয়ে নিচ্ছে।

পরিণতিতে একদিকে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতনে অস্থিরতা বাড়ছে। অন্যদিক নিঃস্ব করে পথে বসিয়ে দিচ্ছে শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন থেকে সক্রিয় থাকা হাজার হাজার সাধারণ বিনিয়োগকারী।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এই কারসাজি চক্রটি পুঁজিবাজারের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। সিরিয়াল ট্রেডিং বা কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের ইতোমধ্য চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসি’র সার্ভেইল্যান্স বিভাগের অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, কারসাজি চক্রটি কম দামে শেয়ার হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতেই ওপেনিং প্রাইসের থেকে কম মূল্যে ইনডেক্স মুভার কোম্পানির শেয়ার বিক্রি শুরু করে। দাম কমলে চক্রটির অন্য সদস্যরা ভিন্ন বিও অ্যাকাউন্ট থেকে ওই শেয়ার হাতিয়ে নিচ্ছে।

যে কারণে পুঁজিবাজারে মূল্য সূচকে বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কারণে অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারের দামেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এসব কোম্পানির শেয়ারদর সামান্য কমলেও সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যেমন আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি কম দামে শেয়ার বিক্রির চাপে লাগাতার পতন কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার।

সক্রিয় এই কারসাজি চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে শেয়ারবাজারকে অস্থির করে তুলছে। এখানেই ওরা সীমাবদ্ধ নয়, বিভিন্ন ব্রোকার হাউসের কর্মকর্তাদের ফোন করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকার ও কমিশনের বিরুদ্ধে মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে আসছে। বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স টিমের অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

আরও পড়ুন: পতনের বৃত্তে পুঁজিবাজার: সূচক নেমেছে তিন বছরের আগের অবস্থানে

বিএসইসি আরো সূত্রে জানা গেছে, কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। পাশাপাশি কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে চিহ্নিত করে যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে আইপিও কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। একইসঙ্গে যেসব ব্যক্তি এসব কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে জরিমানার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান (ব্রোকারেজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক) কারসাজির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সনদ নবায়ন স্থগিত করাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে এক বা একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বা কমিয়ে কারসাজি করে থাকে।

এছাড়া একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে একজন ব্যক্তি বা এককাধিক ব্যক্তি (সংঘবদ্ধ চক্র) কয়েকটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিজেদের মধ্যেই শেয়ার কেনা-বেচা করে দাম বাড়ানোর বা কমানোই সিরিয়াল ট্রেডিং।