০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

১৯ শিক্ষার্থীর আত্মহত্মার চেষ্টা: ৪ জনের মৃত্যু

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:২০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মে ২০১৮
  • / ৪৪৮২ বার দেখা হয়েছে

প্রতিকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ রোববার সারাদেশে একযোগে এসএসসির ফল প্রকাশের পর পঞ্চগড়, রংপুর, যশোর ও শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকায় ১৯ শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন, রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের আজাহারুল ইসলামের মেয়ে রোকেয়া, যশোরের ঝিকরগাছা পৌর সদরের কৃষ্ণনগর (খালপাড়া) গ্রামের ভ্যানচালক জামালউদ্দিনের মেয়ে শান্তা ইসলাম,পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘি ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকার ধিরেন্দ্রনাথের মেয়ে বিথী রাণা ও শরীয়তপু‌রের ডামুড্যা উপ‌জেলার ধানকা‌ঠি ইউনিয়‌নের বা‌হেরচর গ্রামের আনিছ হাওলাদা‌রের মেয়ে নাসরিন।

রংপুর থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জিতু কবীর জানান, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর রংপুরে বিষপান ও ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালানো শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে একজন মারা গেছে। বাকি সাতজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর জেলার বিভিন্ন এলাকার আট শিক্ষার্থী নিজ বাড়িতে বিষপান ও ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে অভিভাবকরা তাদের রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের আজাহারুল ইসলামের মেয়ে রোকেয়া মারা যান। নিহত রোকেয়া ওই এলাকার কদমতলী দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।

এছাড়া নগরীর উত্তম বখতিয়ারপুর হাজিরহাট এলাকার শহিদুল ইসলাম মিন্টুর মেয়ে খাদিজা, দেওডোবা ডাঙ্গীরপার এলাকার রইচ উদ্দিনের মেয়ে শারমিন, গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি এলাকার তাইজিরুল ইসলামের মেয়ে তানজিনা, নগরীর তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকার গণেশ রায়ের মেয়ে শিবা রানী, পীরগাছা চৌধুরানী এলাকার আব্দুস সালামের মেয়ে সমাপ্তি, শহরের সেনপাড়া এলাকার অলক রায়ের মেয়ে প্রীতি রায় এবং গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি বালাপাড়ার শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহাবুল মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে সমাপ্তি ফাঁস দিয়ে এবং অন্যরা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

রংপুর মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোকলেচুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে তাদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

যশোর থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি মিলন রহমান জানান, এসএসসিতে অকৃতকার্য হওয়া যশোর বোর্ডের আট শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এরমধ্যে দুই জন ছাত্র ও ছয়জন ছাত্রী। রোববার দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এদিন বিকেলে ও সন্ধ্যায় তাদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শিক্ষার্থীরা হলো, যশোর সদরের তীরের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন (১৫), নিউ টাউন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুরাইয়া পারভীন (১৫), ভাতুড়িয়া গ্রামের ভাতুড়িয়া স্কুলের ছাত্রী মৌমিতা (১৫), নরেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (১৫), দানবীন হাজী মুহম্মদ মহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মনিরা খাতুন (১৭), সুলতানপুর নুরুল ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী আফসানা খাতুন (১৫), প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মহাসিনা পারভীন (১৫) ও মণিরামপুরের কুয়াদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ইমন হোসেন (১৫)।

এদের মধ্যে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ইমন, মৌমিতা ও মনিরা খাতুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ।

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন তীরের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। সে দুটি বিষয়ে ফেল করায় বাড়িতে থাকা ঘুমের (ট্রিপটিন-৫) দুই পাতা ওষুধ খেয়েছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা ওয়াস করেছে।

হাসপাতালে ভর্তি সুরাইয়া পারভীনের ভাই রেজাউল ইসলাম বলেন, সুরাইয়া ফেল করেছে। ভয়ে স্যাভলন পান করেছে।

অপরদিকে, যশোরের ঝিকরগাছায় এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় শান্তা ইসলাম (১৭) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার বিকেলে যশোরের ঝিকরগাছা পৌর সদরের কৃষ্ণনগর (খালপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শান্তা ইসলাম ওই গ্রামের ভ্যানচালক জামালউদ্দিনের মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, শান্তা ঝিকরগাছা সম্মিলনী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। রোববার দুপুরে ফলাফল প্রকাশের পর সে পাস করতে পারেনি বলে জানতে পারে। পরে বাড়িতে এসে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

শান্তার মা পারভীনা বেগম ঝিকরগাছার একটি জুটমিলে শ্রমিকের কাজ করেন। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ছোটবোন তামান্না ইসলামও এসময় স্কুলে ছিল।

ঝিকরগাছা থানা পুলিশের ওসি আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

পঞ্চগড় থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি সফিকুল আলম জানান, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়ায় বিথি রাণী নামে এক শিক্ষার্থী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিথী রাণা দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘি ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকার ধিরেন্দ্রনাথের মেয়ে।

রোববার সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পরই ঘটনাটি ঘটে। সে স্থানীয় কালিগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বিথি। দুপুরে ফলাফল পাওয়ার পর বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরে কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে ঘরে ওড়না দিয়ে ফাঁস দেয়। টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

শরীয়তপুর থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি ছগির হোসেন জানান, শরীয়তপু‌রের ডামুড্যা উপ‌জেলায় এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় নাস‌রিন আক্তার (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী বিষ খে‌য়ে আত্মহত্যা করেছে।

রোববার বি‌কেল সা‌ড়ে ৪টার দি‌কে উপ‌জেলার ধানকা‌ঠি ইউনিয়‌নের বা‌হেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ অবস্থায় রাত ৮টার দি‌কে শরীয়তপুর সদর হাসপাতা‌লে নাস‌রি‌নের মৃত্যু হয়। ‌নাসরিন ওই গ্রামের আনিছ হাওলাদা‌রের মেয়ে।

স্থানীয় ও প‌রিবার সূ‌ত্রে জানা যায়, নাস‌রিন স্থানীয় হো‌সে‌নিয়া দা‌খিল মাদরাসা থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। রোববার দুপুরে ফলাফল প্রকাশের পর সে পাস করতে পারেনি বলে জানতে পারে। পরে বাড়িতে এসে বি‌কেল সা‌ড়ে ৪টার দি‌কে নিজের ঘরে বিষ খায়। খে‌য়ে যন্ত্রণায় ‌চিৎকার কর‌তে থা‌কে। পরে প‌রিবা‌রের লোকজন চি‌কিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতা‌লে নি‌য়ে ভ‌র্তি ক‌রে। রাত ৮টার দি‌কে তার মৃত্যু হয়।

শেয়ার করুন

x
English Version

১৯ শিক্ষার্থীর আত্মহত্মার চেষ্টা: ৪ জনের মৃত্যু

আপডেট: ০৪:২০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মে ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ রোববার সারাদেশে একযোগে এসএসসির ফল প্রকাশের পর পঞ্চগড়, রংপুর, যশোর ও শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকায় ১৯ শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন, রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের আজাহারুল ইসলামের মেয়ে রোকেয়া, যশোরের ঝিকরগাছা পৌর সদরের কৃষ্ণনগর (খালপাড়া) গ্রামের ভ্যানচালক জামালউদ্দিনের মেয়ে শান্তা ইসলাম,পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘি ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকার ধিরেন্দ্রনাথের মেয়ে বিথী রাণা ও শরীয়তপু‌রের ডামুড্যা উপ‌জেলার ধানকা‌ঠি ইউনিয়‌নের বা‌হেরচর গ্রামের আনিছ হাওলাদা‌রের মেয়ে নাসরিন।

রংপুর থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জিতু কবীর জানান, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর রংপুরে বিষপান ও ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালানো শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে একজন মারা গেছে। বাকি সাতজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর জেলার বিভিন্ন এলাকার আট শিক্ষার্থী নিজ বাড়িতে বিষপান ও ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে অভিভাবকরা তাদের রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের আজাহারুল ইসলামের মেয়ে রোকেয়া মারা যান। নিহত রোকেয়া ওই এলাকার কদমতলী দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।

এছাড়া নগরীর উত্তম বখতিয়ারপুর হাজিরহাট এলাকার শহিদুল ইসলাম মিন্টুর মেয়ে খাদিজা, দেওডোবা ডাঙ্গীরপার এলাকার রইচ উদ্দিনের মেয়ে শারমিন, গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি এলাকার তাইজিরুল ইসলামের মেয়ে তানজিনা, নগরীর তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকার গণেশ রায়ের মেয়ে শিবা রানী, পীরগাছা চৌধুরানী এলাকার আব্দুস সালামের মেয়ে সমাপ্তি, শহরের সেনপাড়া এলাকার অলক রায়ের মেয়ে প্রীতি রায় এবং গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি বালাপাড়ার শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহাবুল মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে সমাপ্তি ফাঁস দিয়ে এবং অন্যরা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

রংপুর মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোকলেচুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে তাদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

যশোর থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি মিলন রহমান জানান, এসএসসিতে অকৃতকার্য হওয়া যশোর বোর্ডের আট শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এরমধ্যে দুই জন ছাত্র ও ছয়জন ছাত্রী। রোববার দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এদিন বিকেলে ও সন্ধ্যায় তাদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শিক্ষার্থীরা হলো, যশোর সদরের তীরের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন (১৫), নিউ টাউন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুরাইয়া পারভীন (১৫), ভাতুড়িয়া গ্রামের ভাতুড়িয়া স্কুলের ছাত্রী মৌমিতা (১৫), নরেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিন (১৫), দানবীন হাজী মুহম্মদ মহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মনিরা খাতুন (১৭), সুলতানপুর নুরুল ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী আফসানা খাতুন (১৫), প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মহাসিনা পারভীন (১৫) ও মণিরামপুরের কুয়াদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ইমন হোসেন (১৫)।

এদের মধ্যে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ইমন, মৌমিতা ও মনিরা খাতুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ।

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন তীরের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। সে দুটি বিষয়ে ফেল করায় বাড়িতে থাকা ঘুমের (ট্রিপটিন-৫) দুই পাতা ওষুধ খেয়েছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা ওয়াস করেছে।

হাসপাতালে ভর্তি সুরাইয়া পারভীনের ভাই রেজাউল ইসলাম বলেন, সুরাইয়া ফেল করেছে। ভয়ে স্যাভলন পান করেছে।

অপরদিকে, যশোরের ঝিকরগাছায় এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় শান্তা ইসলাম (১৭) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার বিকেলে যশোরের ঝিকরগাছা পৌর সদরের কৃষ্ণনগর (খালপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শান্তা ইসলাম ওই গ্রামের ভ্যানচালক জামালউদ্দিনের মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, শান্তা ঝিকরগাছা সম্মিলনী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। রোববার দুপুরে ফলাফল প্রকাশের পর সে পাস করতে পারেনি বলে জানতে পারে। পরে বাড়িতে এসে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

শান্তার মা পারভীনা বেগম ঝিকরগাছার একটি জুটমিলে শ্রমিকের কাজ করেন। ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ছোটবোন তামান্না ইসলামও এসময় স্কুলে ছিল।

ঝিকরগাছা থানা পুলিশের ওসি আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।

পঞ্চগড় থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি সফিকুল আলম জানান, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়ায় বিথি রাণী নামে এক শিক্ষার্থী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিথী রাণা দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘি ইউনিয়নের প্রধানপাড়া এলাকার ধিরেন্দ্রনাথের মেয়ে।

রোববার সারা দেশে একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পরই ঘটনাটি ঘটে। সে স্থানীয় কালিগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বিথি। দুপুরে ফলাফল পাওয়ার পর বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরে কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে ঘরে ওড়না দিয়ে ফাঁস দেয়। টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

শরীয়তপুর থেকে আমাদের জেলা প্রতিনিধি ছগির হোসেন জানান, শরীয়তপু‌রের ডামুড্যা উপ‌জেলায় এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় নাস‌রিন আক্তার (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী বিষ খে‌য়ে আত্মহত্যা করেছে।

রোববার বি‌কেল সা‌ড়ে ৪টার দি‌কে উপ‌জেলার ধানকা‌ঠি ইউনিয়‌নের বা‌হেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ অবস্থায় রাত ৮টার দি‌কে শরীয়তপুর সদর হাসপাতা‌লে নাস‌রি‌নের মৃত্যু হয়। ‌নাসরিন ওই গ্রামের আনিছ হাওলাদা‌রের মেয়ে।

স্থানীয় ও প‌রিবার সূ‌ত্রে জানা যায়, নাস‌রিন স্থানীয় হো‌সে‌নিয়া দা‌খিল মাদরাসা থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। রোববার দুপুরে ফলাফল প্রকাশের পর সে পাস করতে পারেনি বলে জানতে পারে। পরে বাড়িতে এসে বি‌কেল সা‌ড়ে ৪টার দি‌কে নিজের ঘরে বিষ খায়। খে‌য়ে যন্ত্রণায় ‌চিৎকার কর‌তে থা‌কে। পরে প‌রিবা‌রের লোকজন চি‌কিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতা‌লে নি‌য়ে ভ‌র্তি ক‌রে। রাত ৮টার দি‌কে তার মৃত্যু হয়।