০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

এবার খেলাপির সঙ্গে প্রভিশন ঘাটতিও বেড়েছে পৌনে ১৬ কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৫২:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
  • / ১০৪০৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ব্যাংকখাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা মোট বিতরণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এর আগে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এবার খেলাপির সঙ্গে প্রভিশন ঘাটতিও বেড়েছে। মার্চ শেষে খেলাপিসহ ঋণমানের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি ১১টি ব্যাংক।

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের চারটিই প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ মোট ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের প্রভিশন ১ হাজার ৩৫৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৩ হাজার ৫৬৫ কোটি ৬৬ লাখ, জনতা ব্যাংকের ৫ হাজার ২৫৫ কোটি ১৭ লাখ ও রূপালী ব্যাংকের ৭৮৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এই চার ব্যাংকের মোট প্রভিশন ঘাটতি মোট ১০ হাজার ৫৬১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের চারটিই প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ মোট ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা 

অন্যদিকে বেসরকারি খাতের ছয় ব্যাংকে প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৪৫৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ২৪৬ কোটি ২৩ লাখ, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৯৫ কোটি ৪৯ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩৮৮ কোটি ১২ লাখ, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের ৭৩ কোটি এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ছয় ব্যাংকের মোট ঘাটতি চার হাজার ৯৭৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব 

অন্যদিকে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ১৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এ নিয়ে মোট ১১ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে মোট ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি ৯ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকখাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৮ কোটি। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। কিন্তু তিন মাস আগেও খেলাপি ঋণের হার ছিল ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

ব্যাংকগুলোকে আবারও কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। ব্যাংকগুলোতে খেলাপি কমাতে হলে অবশ্যই গ্রাহককে একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। সেটি হলো- নতুন ঋণ পেতে আগের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এটা করা না হলে খেলাপি কমানো যাবে সরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে দুই লাখ সাত হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৪৩ হাজার ৪৫০ টাকা। বেসরকারি ব্যাংক আট লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪৫ হাজার ৯০ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংক ৩০ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা বিতরণ করেছে, এর মধ্যে খেলাপি চার হাজার ৮৬ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংক ৫৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। তাদের খেলাপি দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি আছে, সেসব ব্যাংক চলতি বছরের জুন প্রান্তিকে ঘাটতি পূরণ করতে পারবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পরিবহন বন্ধ ছিল, ব্যবসায়ীদের ভালো ব্যবসা হয়নি। আবার প্যাকেজ আসতে পারে বা বাজেট বাস্তবায়ন ইত্যাদি।’

খেলাপি নিয়ে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এবার খেলাপি বেড়েছে। এখন ব্যাংকগুলোকে আবার কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। ব্যাংকগুলোতে খেলাপি কমাতে হলে অবশ্যই গ্রাহককে একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। সেটি হলো- নতুন ঋণ পেতে আগের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এটা করা না হলে খেলাপি কমানো যাবে না।’

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

এবার খেলাপির সঙ্গে প্রভিশন ঘাটতিও বেড়েছে পৌনে ১৬ কোটি টাকা

আপডেট: ০৭:৫২:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ব্যাংকখাতের প্রধান সমস্যা খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা মোট বিতরণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এর আগে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এবার খেলাপির সঙ্গে প্রভিশন ঘাটতিও বেড়েছে। মার্চ শেষে খেলাপিসহ ঋণমানের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি ১১টি ব্যাংক।

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের চারটিই প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ মোট ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের প্রভিশন ১ হাজার ৩৫৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৩ হাজার ৫৬৫ কোটি ৬৬ লাখ, জনতা ব্যাংকের ৫ হাজার ২৫৫ কোটি ১৭ লাখ ও রূপালী ব্যাংকের ৭৮৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এই চার ব্যাংকের মোট প্রভিশন ঘাটতি মোট ১০ হাজার ৫৬১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের চারটিই প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ মোট ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা 

অন্যদিকে বেসরকারি খাতের ছয় ব্যাংকে প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৪৫৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ২৪৬ কোটি ২৩ লাখ, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৯৫ কোটি ৪৯ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩৮৮ কোটি ১২ লাখ, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকের ৭৩ কোটি এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। ছয় ব্যাংকের মোট ঘাটতি চার হাজার ৯৭৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব 

অন্যদিকে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ১৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এ নিয়ে মোট ১১ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে মোট ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি ৯ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকখাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৮ কোটি। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। কিন্তু তিন মাস আগেও খেলাপি ঋণের হার ছিল ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

ব্যাংকগুলোকে আবারও কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। ব্যাংকগুলোতে খেলাপি কমাতে হলে অবশ্যই গ্রাহককে একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। সেটি হলো- নতুন ঋণ পেতে আগের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এটা করা না হলে খেলাপি কমানো যাবে সরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে দুই লাখ সাত হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৪৩ হাজার ৪৫০ টাকা। বেসরকারি ব্যাংক আট লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪৫ হাজার ৯০ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংক ৩০ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা বিতরণ করেছে, এর মধ্যে খেলাপি চার হাজার ৮৬ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংক ৫৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। তাদের খেলাপি দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি আছে, সেসব ব্যাংক চলতি বছরের জুন প্রান্তিকে ঘাটতি পূরণ করতে পারবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পরিবহন বন্ধ ছিল, ব্যবসায়ীদের ভালো ব্যবসা হয়নি। আবার প্যাকেজ আসতে পারে বা বাজেট বাস্তবায়ন ইত্যাদি।’

খেলাপি নিয়ে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এবার খেলাপি বেড়েছে। এখন ব্যাংকগুলোকে আবার কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। ব্যাংকগুলোতে খেলাপি কমাতে হলে অবশ্যই গ্রাহককে একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। সেটি হলো- নতুন ঋণ পেতে আগের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এটা করা না হলে খেলাপি কমানো যাবে না।’

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: