১২:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

৮ প্রকল্পে ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৯:৩৯:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০১৯
  • / ৪৪৫১ বার দেখা হয়েছে

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছোট ছোট সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ১ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ মাধ্যমে দেশের ৬১টি জেলার ২৫৭টি উপজেলায় ৩৪০টি সেতু নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পটিসহ ৮ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এসব বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৩১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ৯৬২ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

তিনি জানান, সড়ক, রেল ও নৌপথে সমন্বিত নেটওয়ার্ক তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ সড়কে সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো হবে।

দেশের ৮টি বিভাগের ৬১টি জেলার ২৫৭টি উপজেলায় ৩৪০টি সেতু নির্মাণের জন্য সম্পূর্ণ সরকারি তহবিল থেকে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। এসব এলাকার মধ্যে ঢাকার ধামরাই, নবাবগঞ্জ, সাভার এবং দোহার উপজেলা। গাজীপুরের সদর, কালীগঞ্জ, কাপাসিয়া এবং শ্রীপুর উপজেলা। মানিকগঞ্জের সদর, সাটুরিয়া, দৌলতপুর, ঘিওর, শিবালয় এবং সিংগাইর উপজেলা।

মুন্সীগঞ্জের সদর, লৌহজং, গজারিয়া এবং সিরাজদিখান উপজেলা। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, সোনারগাঁ এবং রূপগঞ্জ উপজেলা। নরসিংদীর সদর, পলাশ, রায়পুরা, শিবপুর এবং মনোহরদী উপজেলা। টাঙ্গাইলের সদর, মধুপুর, ধনবাড়ী, মির্জাপুর, কালিহাতী, ঘাটাইল, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, সখীপুর, বাসাইল এবং গোপালপুর উপজেলা। কিশোরগঞ্জের সদর, তাড়াইল, করিমগঞ্জ, ইটনা, মিঠামইন, বাজিতপুর এবং ভৈরব উপজেলা।

ফরিদপুরের মধুখালী, আলফাডাঙ্গা, ভাঙ্গা, বোয়ালমারী, চরভদ্রাসন, সদরপুর এবং সালথা উপজেলা। গোপালগঞ্জের সদর, কাশিয়ানী এবং মুকসুদপুর উপজেলা। মাদারীপুরের সদর, কালকিনি, রাজৈর এবং শিবচর উপজেলা। রাজবাড়ীর সদর, বালিয়াকান্দি, কালুখালী, পাংশা এবং গোয়ালন্দ উপজেলা। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, গোসাইরহাট, জাজিরা এবং নড়িয়া উপজেলা। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ছাড়া বাকি জেলার উপজেলাগুলোতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৮২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ অর্থের বড় অংশ জাপার সহজ শর্তে ঋণ হিসবে দেবে। ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রকল্প, ব্যয় ৮৮০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

তাঁতীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে চলতি মূলধন সরবরাহ ও তাঁতের আধুনিকায়ন প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৮ কোটি টাকা। কন্দাল ফসল উন্নয়ন, ব্যয় ১৫৬ কোটি টাকা। জয়পুরহাট জেলায় তুলসী গঙ্গা, ছোট যমুনা, চিড়ি ও হারাবতী নদী পুনঃখনন, ব্যয় ১২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার, ব্যয় ২২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৪ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান জানান, একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে রেল, সড়ক ও নৌপথের মধ্যে একটি সমন্বিত নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়কে প্রচুর প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, এখন রেল ও নৌ পথের দিকে নজর দিন। সড়কের প্রকল্প নেবো না-তা নয়, কিন্তু রেলে ও নৌপথে বেশি জোর দিতে চাই। যোগাযোগে ’জাতীয় গ্রিড’ তৈরি করতে হবে।

এমএ মান্নান বলেন, সারা দেশের তাঁতীদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তারা ঋণ যেন সহজেই পায় সেই ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এছাড়া শুধু বড় বড় নদী নয়, ছোট নদীর দিকেও নজর দিতে হবে। ঢাকাসহ আশপাশের নদীগুলো যেন রক্ষা পায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

শেয়ার করুন

x
English Version

৮ প্রকল্পে ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন

আপডেট: ০৯:৩৯:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০১৯

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছোট ছোট সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ১ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ মাধ্যমে দেশের ৬১টি জেলার ২৫৭টি উপজেলায় ৩৪০টি সেতু নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পটিসহ ৮ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এসব বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৩১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ৯৬২ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

তিনি জানান, সড়ক, রেল ও নৌপথে সমন্বিত নেটওয়ার্ক তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ সড়কে সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো হবে।

দেশের ৮টি বিভাগের ৬১টি জেলার ২৫৭টি উপজেলায় ৩৪০টি সেতু নির্মাণের জন্য সম্পূর্ণ সরকারি তহবিল থেকে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। এসব এলাকার মধ্যে ঢাকার ধামরাই, নবাবগঞ্জ, সাভার এবং দোহার উপজেলা। গাজীপুরের সদর, কালীগঞ্জ, কাপাসিয়া এবং শ্রীপুর উপজেলা। মানিকগঞ্জের সদর, সাটুরিয়া, দৌলতপুর, ঘিওর, শিবালয় এবং সিংগাইর উপজেলা।

মুন্সীগঞ্জের সদর, লৌহজং, গজারিয়া এবং সিরাজদিখান উপজেলা। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, সোনারগাঁ এবং রূপগঞ্জ উপজেলা। নরসিংদীর সদর, পলাশ, রায়পুরা, শিবপুর এবং মনোহরদী উপজেলা। টাঙ্গাইলের সদর, মধুপুর, ধনবাড়ী, মির্জাপুর, কালিহাতী, ঘাটাইল, নাগরপুর, দেলদুয়ার, ভূঞাপুর, সখীপুর, বাসাইল এবং গোপালপুর উপজেলা। কিশোরগঞ্জের সদর, তাড়াইল, করিমগঞ্জ, ইটনা, মিঠামইন, বাজিতপুর এবং ভৈরব উপজেলা।

ফরিদপুরের মধুখালী, আলফাডাঙ্গা, ভাঙ্গা, বোয়ালমারী, চরভদ্রাসন, সদরপুর এবং সালথা উপজেলা। গোপালগঞ্জের সদর, কাশিয়ানী এবং মুকসুদপুর উপজেলা। মাদারীপুরের সদর, কালকিনি, রাজৈর এবং শিবচর উপজেলা। রাজবাড়ীর সদর, বালিয়াকান্দি, কালুখালী, পাংশা এবং গোয়ালন্দ উপজেলা। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, গোসাইরহাট, জাজিরা এবং নড়িয়া উপজেলা। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ছাড়া বাকি জেলার উপজেলাগুলোতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৮২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ অর্থের বড় অংশ জাপার সহজ শর্তে ঋণ হিসবে দেবে। ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রকল্প, ব্যয় ৮৮০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

তাঁতীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে চলতি মূলধন সরবরাহ ও তাঁতের আধুনিকায়ন প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৮ কোটি টাকা। কন্দাল ফসল উন্নয়ন, ব্যয় ১৫৬ কোটি টাকা। জয়পুরহাট জেলায় তুলসী গঙ্গা, ছোট যমুনা, চিড়ি ও হারাবতী নদী পুনঃখনন, ব্যয় ১২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

সমগ্র দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও সংস্কার, ব্যয় ২২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৪ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান জানান, একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে রেল, সড়ক ও নৌপথের মধ্যে একটি সমন্বিত নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়কে প্রচুর প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, এখন রেল ও নৌ পথের দিকে নজর দিন। সড়কের প্রকল্প নেবো না-তা নয়, কিন্তু রেলে ও নৌপথে বেশি জোর দিতে চাই। যোগাযোগে ’জাতীয় গ্রিড’ তৈরি করতে হবে।

এমএ মান্নান বলেন, সারা দেশের তাঁতীদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তারা ঋণ যেন সহজেই পায় সেই ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এছাড়া শুধু বড় বড় নদী নয়, ছোট নদীর দিকেও নজর দিতে হবে। ঢাকাসহ আশপাশের নদীগুলো যেন রক্ষা পায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।