১০:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

খুলনা প্রিন্টিংয়ের অস্বাভাবিক আয়- ব্যয় তদন্তে ডিএসই

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:০১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ এপ্রিল ২০২২
  • / ৪১৪৪ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকেই খুলনা প্রিন্টিং আ্যন্ড প্যাকেজিং লিমিটেড (কেপিপিএল) সমালোচনার তুঙ্গে রয়েছে। এবার অস্বাভাবিক আয় ও বৃদ্ধি পাওয়ায় তদন্তের মুখে পড়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধিও ছিলো চোখে পড়ার মতো।

চলতি অর্থবছরের ২০২১ সালের জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই অস্বাভাবিক আয় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তদন্ত করেছে।

ডিএসইর সিজিএফআরসি বিভাগ তদন্তশেষে কোম্পানির কাছে আনুষঙ্গিক আয় এবং অফিস ও প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিতে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে অবস্থান পরিস্কার করার জন্য বলা হয়েছে। ডিএসই সুত্রে জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর আয় হয়েছে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৭ টাকা। এর আগের বছর(২০২০) যা ছিলো ৪ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৯ টাকা।

ডিএসই পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কোম্পানিটির অন্যান্য আয় ১৫৮ দশমিক ০৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড কমিশনের(বিএসইসি) আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর আনুষঙ্গিক আয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যাখা দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, কেপিপিএল তা অমান্য করেছে।

অন্যদিকে, কোম্পানিটির অফিস ও প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ হাজার ৮৯৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর হিসাব মতে ১৭ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ৮৭১ টাকা। যা আগের বছর ছিলো ২ কোটি ৫২ লাখ ৮ হাজার ১৯৪ টাকা। যা বেড়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। বিএসইসির নিয়মনুযায়ী কোম্পানিকে ব্যয়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ব্যাখা দিতে হয়। কিন্তু কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে কোন ব্যাখা দেয়নি।

ডিএসইর পাঠানো চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোম্পানিটি তার অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে ২৭ অক্টোবর ২০২১ তারিখে কোম্পানির হিসাব জব্দের ব্যাপারটি উল্লেখ করেছে। ব্যাংক হিসাব জব্দের কারণে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। কিন্তু জব্দ হওয়া ব্যাংক হিসেবের কোনো ব্যাখা দেয়নি। জব্দ হওয়া ওই সব ব্যাংক একাউন্টের বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়েছে ঢাকা স্টক একচেঞ্জ।

২০১৪ সালে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কেপিপিএল ২০২১ সালে ‘নো ডিভিডেন্ড’ দিয়েছে। ২০২১ সালে ডিভিডেন্ড দিয়েছিল দশমিক ২৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ২০১৯ সালে দিয়েছিল ১ শতাংশ ক্যাশ।

বি ক্যাটাগরির এই প্রতিষ্ঠানটিতে পরিচালকদের শেয়ার রয়েছে ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার আছে ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রয়েছে ৫৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। সরকারি এবং বিদেশী কোন বিনিয়োগ নেই কেপিপিএলে।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে আদালতের আদেশে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার পর কোম্পানিটি তাদের কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মানি লন্ডারিং মামলায় আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে ২০১৫ সালে, খুলনা প্রিন্টিং কারখানাটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর ফাঁকির অভিযোগে তার ব্যবসায়িক সনাক্তকরণ নম্বরটি তালাবদ্ধ করেছিল। সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সর্বশেষ লেনদেন দর ছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x
English Version

খুলনা প্রিন্টিংয়ের অস্বাভাবিক আয়- ব্যয় তদন্তে ডিএসই

আপডেট: ০২:০১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ এপ্রিল ২০২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকেই খুলনা প্রিন্টিং আ্যন্ড প্যাকেজিং লিমিটেড (কেপিপিএল) সমালোচনার তুঙ্গে রয়েছে। এবার অস্বাভাবিক আয় ও বৃদ্ধি পাওয়ায় তদন্তের মুখে পড়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধিও ছিলো চোখে পড়ার মতো।

চলতি অর্থবছরের ২০২১ সালের জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই অস্বাভাবিক আয় ও ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তদন্ত করেছে।

ডিএসইর সিজিএফআরসি বিভাগ তদন্তশেষে কোম্পানির কাছে আনুষঙ্গিক আয় এবং অফিস ও প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিতে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে অবস্থান পরিস্কার করার জন্য বলা হয়েছে। ডিএসই সুত্রে জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর আয় হয়েছে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৫৫৭ টাকা। এর আগের বছর(২০২০) যা ছিলো ৪ লাখ ১৯ হাজার ৫৩৯ টাকা।

ডিএসই পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কোম্পানিটির অন্যান্য আয় ১৫৮ দশমিক ০৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড কমিশনের(বিএসইসি) আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর আনুষঙ্গিক আয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যাখা দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, কেপিপিএল তা অমান্য করেছে।

অন্যদিকে, কোম্পানিটির অফিস ও প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ হাজার ৮৯৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর হিসাব মতে ১৭ কোটি ৬৮ লাখ ৭০ হাজার ৮৭১ টাকা। যা আগের বছর ছিলো ২ কোটি ৫২ লাখ ৮ হাজার ১৯৪ টাকা। যা বেড়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। বিএসইসির নিয়মনুযায়ী কোম্পানিকে ব্যয়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ব্যাখা দিতে হয়। কিন্তু কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে কোন ব্যাখা দেয়নি।

ডিএসইর পাঠানো চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোম্পানিটি তার অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে ২৭ অক্টোবর ২০২১ তারিখে কোম্পানির হিসাব জব্দের ব্যাপারটি উল্লেখ করেছে। ব্যাংক হিসাব জব্দের কারণে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। কিন্তু জব্দ হওয়া ব্যাংক হিসেবের কোনো ব্যাখা দেয়নি। জব্দ হওয়া ওই সব ব্যাংক একাউন্টের বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়েছে ঢাকা স্টক একচেঞ্জ।

২০১৪ সালে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কেপিপিএল ২০২১ সালে ‘নো ডিভিডেন্ড’ দিয়েছে। ২০২১ সালে ডিভিডেন্ড দিয়েছিল দশমিক ২৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ২০১৯ সালে দিয়েছিল ১ শতাংশ ক্যাশ।

বি ক্যাটাগরির এই প্রতিষ্ঠানটিতে পরিচালকদের শেয়ার রয়েছে ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার আছে ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রয়েছে ৫৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। সরকারি এবং বিদেশী কোন বিনিয়োগ নেই কেপিপিএলে।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে আদালতের আদেশে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার পর কোম্পানিটি তাদের কারখানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মানি লন্ডারিং মামলায় আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে ২০১৫ সালে, খুলনা প্রিন্টিং কারখানাটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল কারণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর ফাঁকির অভিযোগে তার ব্যবসায়িক সনাক্তকরণ নম্বরটি তালাবদ্ধ করেছিল। সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সর্বশেষ লেনদেন দর ছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা।

ঢাকা/টিএ