১২:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

দেশি বিনিয়োগকারীতে ‘ছুটছে’ শেয়ারবাজার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:১১:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১
  • / ৪২৪৫ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেড় মাসেরও কম সময়ে প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৭২৫ পয়েন্ট বা ১৪ শতাংশ। লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে তিনগুণ। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে কিছুটা হলেও ফুরফুরে অবস্থায় রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার।

বাজার এমন গতিতে ছুটলেও এর পেছনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবদান খুবই কম। বরং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আচার-আচরণ দেখলে মনে হবে, তারা বাজারকে পেছনে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। মূলত দেশি বিনিয়োগকারীদের ওপর ভর করেই শেয়ারবাজার এমন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

 ব্যাংকে টাকা রাখলে ৫ শতাংশের মতো মুনাফা পাওয়া যায়। কিন্তু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কেউ কেউ রাতারাতি বড় লোক হতে চায়। এত লোভ ভালো না। আপনি পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৫-১০ হাজার টাকা মুনাফা পেলে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত। কিন্তু পাঁচ লাখ টাকা ১০ লাখ হয়ে যাবে, এমন লোভ করা ঠিক না 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে দেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়লেও উল্টো চিত্র বিরাজ করছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে। বাজারের এই পরিস্থিতিতেও বিদেশিরা শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি করছেন বেশি।

এদিকে সার্বিক পুঁজিবাজারের বর্তমান চিত্রকে ইতিবাচক বললেও বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ খুবই কম। বাজার অনেকটাই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নির্ভর। বাজার কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য বিদেশি বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ না বাড়লে বাজারকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাওয়া দুরূহ হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে শেয়ারবাজার বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠে।

 চলতি অর্থবছরে শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে অপ্রদর্শিত অর্থের একটি অংশও এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হচ্ছে। এছাড়া আইপিও কেন্দ্র করেও বাজারে নতুন টাকা এসেছে। এসব কারণেই লেনদেন ও সূচক বেড়েছে 

তার আগে মহামারি করোনাভাইরাস আতঙ্কে ২০২০ মার্চে বড় ধরনের ধস নামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় টানা ৬৬ দিন বন্ধ রাখা হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন। এর মধ্যেই বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেব যোগ দেন আরও তিনজন। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করার উদ্যোগ নেন তারা। ফলে টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর ৩১ মে থেকে শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন চালু হয়।

নতুন নেতৃত্বের অধীনে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু হলেও অব্যাহত থাকে লেনদেন খরা। তবে জুলাই মাসে এসে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেয় নতুন কমিশন। অনিয়মে জড়িত থাকায় একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বড় অংকের জরিমানা করা হয়। সতর্ক করা হয় সরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি)।

সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসকে জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়। পরবর্তী সময়ে আইসিবিকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। বাতিল করা হয় এক ডজন দুর্বল কোম্পানির আইপিও। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ ধরনের একের পর এক পদক্ষেপের ফলে ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। ৫০ কোটি টাকার নিচে নেমে যাওয়া লেনদেন হাজার কোটি টাকার ওপরে হওয়া অনেকটাই নিয়মে পরিণত হয়।

তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে বাজারে। আর করোনার সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেলে মার্চের শেষ ও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ এক প্রকার ধস নামে শেয়ারবাজারে। অবশ্য করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘লকডাউন’ দিলেও শেয়ারবাজার বেশ তেজী হয়ে উঠে। আতঙ্ক কাটিয়ে লকডাউনের মধ্যে হু হু করে বাড়ে লেনদেন, সূচক ও বাজার মূলধন। এতে বিনিয়োগকারীদের মুখেও হাসি ফুটেছে।

গত ৫ এপ্রিল লকডাউন শুরু হওয়ার আগে ৪ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল সূচক ছিল পাঁচ হাজার ৮৮ পয়েন্টে। ২০ মে লেনদেন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৮১৩ পয়েন্ট। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৭২৫ পয়েন্ট। বাজার মূলধন বেড়েছে ৪৮ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। ৪ এপ্রিল ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ৪৩ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা, যা বেড়ে ২০ মে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৯২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা।

সূচক ও বাজার মূলধনের সঙ্গে গতি বেড়েছে লেনদেনে। শেষ ১৪ কার্যদিবসের (২৯ এপ্রিল থেকে ২০ মে পর্যন্ত) মধ্যে প্রতিটি কার্যদিবসে ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এতে ২০ মে পর্যন্ত ২০২১ সালে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৩২ কোটি টাকা। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত শেয়ারবাজারে ৯৫ দিন লেনদেন হয়েছে। এই ৯৫ দিনে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৯৮ হাজার ৫৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

এর আগে ২০২০ সালজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৮১ কোটি ২২ লাখ টাকা। এতে বছরটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৬৪৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। তার আগে ২০১৯ সালে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৪৮০ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং মোট লেনদেন হয় এক লাখ ১৩ হাজার ৮২১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

এছাড়া ২০১৮ সালে মোট লেনদেন হয় এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৯১ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৫৫২ কোটি তিন লাখ টাকা। ২০১৭ সালে মোট লেনদেন হয় দুই লাখ ১৬ হাজার ৯৫৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৮৭৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর ২০১৬ সালজুড়ে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক লাখ ১৯ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। সে বছর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৪৯৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

এ তথ্য থেকেই স্পষ্ট হয়—গত কয়েক বছরের মধ্যে বর্তমান শেয়ারবাজার সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। অথচ এই পরিস্থিতিতেও শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন না। বরং তারা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন।

চলতি বছরে বিদেশিরা ঠিক কত টাকার শেয়ার কিনেছেন বা বিক্রি করেছেন সে সংক্রান্ত তথ্য ডিএসই থেকে পাওয়া যায়নি। তবে ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাজারের চিত্র ভালো থাকলেও এপ্রিল মাসে বিদেশিরা যে টাকার শেয়ার কিনেছেন, বিক্রি করেছেন তার চেয়ে বেশি। বিদেশিদের শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি বেশি করার এই চিত্র দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আরব আমিরাতের দুবাইয়ে রোড শো করেছে বিএসইসি। আর সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম দাবি করেছেন, প্রচুর বিদেশি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এই তালিকায় সিঙ্গাপুর ও দুবাই রয়েছে। এমনকি আমেরিকা থেকেও বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ করছে। তাই অর্থ কোনো সমস্যা হবে না।

দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মো. রকিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ খুবই কম। এটা বাজারের জন্য ভালো নয়। বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ যত বাড়বে, বাজার তত ভাইব্রেন্ট হবে।

তিনি বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নির্ভর। তবে এখন বিনিয়োগকারীরা আগের চেয়ে পরিণত। তারা অনেক চালাক। এটা ভালো লক্ষণ। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সার্বিক তথ্য ভালো করে পর্যালোচনা করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনো অবস্থায়ই গুজবের ওপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না। সেই সঙ্গে ঋণ করে, ধার করে বা জমি বিক্রি অথবা বন্ধক রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না।

রকিবুর রহমান আরও বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখলে ৫ শতাংশের মতো মুনাফা পাওয়া যায়। কিন্তু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কেউ কেউ রাতারাতি বড় লোক হতে চায়। এত লোভ ভালো না। আপনি পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৫-১০ হাজার টাকা মুনাফা পেলে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত। কিন্তু পাঁচ লাখ টাকা ১০ লাখ হয়ে যাবে, এমন লোভ করা ঠিক না।

শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক চিত্র সম্পর্কে ডিএসইর আরেক পরিচালক মো. শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, চলতি অর্থবছরে শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে অপ্রদর্শিত অর্থের একটি অংশও এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হচ্ছে। এছাড়া আইপিও কেন্দ্র করেও বাজারে নতুন টাকা এসেছে। এসব কারণেই লেনদেন ও সূচক বেড়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক সদস্য বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে বিএসইসি দৌড়ঝাঁপ করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। সম্পূর্ণ দেশি বিনিয়োগকারীদের ওপরই এখন শেয়ারবাজারের লেনদেন ও সূচকের ওঠা-নামা নির্ভর করছে। তবে আশার কথা, বড় বিনিয়োগকারীরা বাজারে সক্রিয় হয়েছে। এসব বিনিয়োগকারী যেন হুট করে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বাজার থেকে বেরিয়ে না যায়, বিএসইসির উচিত সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি বাড়ালে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ত। কিন্তু এখন সেই চিত্রের কিছুটা হলেও মনে হচ্ছে পরিবর্তন হয়েছে। বিদেশিরা শেয়ার বিক্রির চাপ অব্যাহত রাখলেও তার নেতিবাচক প্রভাব বাজারে খুব একটা পড়ছে না। এর কারণ হলো—বাজারের ওপর এখন বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। এই আস্থা ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

ফিরে দেখা
দেশের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে ভালো সময় ছিল ২০০৯ ও ২০১০ সাল। এই দুই বছরে রমরমা ছিল শেয়ারবাজার। সে সময় শেয়ারবাজার সাধারণ মানুষের কাছে এতটাই আকর্ষণীয় ছিল যে, দলে দলে বিনিয়োগকারী ছুটে আসেন। সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষার্থী সবাই দেদারছে বিনিয়োগ করেন শেয়ারবাজারে। ফলে ফুলে ফেঁপে ওঠে শেয়ারবাজার। যার ফলে ২০১০ সালের শেষ দিকে এসে মহাধস নামে শেয়ারবাজারে। এতে পুঁজি হারান কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী। পুঁজি হারিয়ে দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এমনকি পুঁজি হারিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে।

এই মহাধসের পর শেয়ারবাজার ঠিক করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী প্রচেষ্টা চালানো হয়। এর ফলে ২০১৪-১৫ এবং ২০১৭ সালে বাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারা ফিরে আসে। কিন্তু সেসব ঊর্ধ্বমুখী ধারা ছিল সাময়িক। বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতেই এক ধরনের বিক্রির চাপ বেড়ে যেত। এর সঙ্গে বাজারে আসে বেশ কিছু দুর্বল কোম্পানির আইপিও। ফলে সামগ্রিকভাবে বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস স্থায়ী হয়নি।

বরং ২০১০ সালর পর থেকে শেয়ারবাজার ধসের মধ্য দিয়েই গেছে। এর মধ্যে ২০১৯ সাল এবং ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিক শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের কাছে অনেকটাই গলার কাঁটায় পরিণত হয়। লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে অনেকে শেয়ারবাজার ছাড়েন।

সুত্র:জাগোনিউজ

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

দেশি বিনিয়োগকারীতে ‘ছুটছে’ শেয়ারবাজার

আপডেট: ১২:১১:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মে ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: দেড় মাসেরও কম সময়ে প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৭২৫ পয়েন্ট বা ১৪ শতাংশ। লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে তিনগুণ। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে কিছুটা হলেও ফুরফুরে অবস্থায় রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার।

বাজার এমন গতিতে ছুটলেও এর পেছনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অবদান খুবই কম। বরং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আচার-আচরণ দেখলে মনে হবে, তারা বাজারকে পেছনে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। মূলত দেশি বিনিয়োগকারীদের ওপর ভর করেই শেয়ারবাজার এমন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

 ব্যাংকে টাকা রাখলে ৫ শতাংশের মতো মুনাফা পাওয়া যায়। কিন্তু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কেউ কেউ রাতারাতি বড় লোক হতে চায়। এত লোভ ভালো না। আপনি পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৫-১০ হাজার টাকা মুনাফা পেলে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত। কিন্তু পাঁচ লাখ টাকা ১০ লাখ হয়ে যাবে, এমন লোভ করা ঠিক না 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে দেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়লেও উল্টো চিত্র বিরাজ করছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে। বাজারের এই পরিস্থিতিতেও বিদেশিরা শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি করছেন বেশি।

এদিকে সার্বিক পুঁজিবাজারের বর্তমান চিত্রকে ইতিবাচক বললেও বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ খুবই কম। বাজার অনেকটাই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নির্ভর। বাজার কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য বিদেশি বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ না বাড়লে বাজারকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাওয়া দুরূহ হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বে বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে শেয়ারবাজার বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠে।

 চলতি অর্থবছরে শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে অপ্রদর্শিত অর্থের একটি অংশও এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হচ্ছে। এছাড়া আইপিও কেন্দ্র করেও বাজারে নতুন টাকা এসেছে। এসব কারণেই লেনদেন ও সূচক বেড়েছে 

তার আগে মহামারি করোনাভাইরাস আতঙ্কে ২০২০ মার্চে বড় ধরনের ধস নামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় টানা ৬৬ দিন বন্ধ রাখা হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন। এর মধ্যেই বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেব যোগ দেন আরও তিনজন। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করার উদ্যোগ নেন তারা। ফলে টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর ৩১ মে থেকে শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন চালু হয়।

নতুন নেতৃত্বের অধীনে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু হলেও অব্যাহত থাকে লেনদেন খরা। তবে জুলাই মাসে এসে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেয় নতুন কমিশন। অনিয়মে জড়িত থাকায় একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বড় অংকের জরিমানা করা হয়। সতর্ক করা হয় সরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি)।

সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসকে জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়। পরবর্তী সময়ে আইসিবিকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। বাতিল করা হয় এক ডজন দুর্বল কোম্পানির আইপিও। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ ধরনের একের পর এক পদক্ষেপের ফলে ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। ৫০ কোটি টাকার নিচে নেমে যাওয়া লেনদেন হাজার কোটি টাকার ওপরে হওয়া অনেকটাই নিয়মে পরিণত হয়।

তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে বাজারে। আর করোনার সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেলে মার্চের শেষ ও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ এক প্রকার ধস নামে শেয়ারবাজারে। অবশ্য করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘লকডাউন’ দিলেও শেয়ারবাজার বেশ তেজী হয়ে উঠে। আতঙ্ক কাটিয়ে লকডাউনের মধ্যে হু হু করে বাড়ে লেনদেন, সূচক ও বাজার মূলধন। এতে বিনিয়োগকারীদের মুখেও হাসি ফুটেছে।

গত ৫ এপ্রিল লকডাউন শুরু হওয়ার আগে ৪ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল সূচক ছিল পাঁচ হাজার ৮৮ পয়েন্টে। ২০ মে লেনদেন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৮১৩ পয়েন্ট। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৭২৫ পয়েন্ট। বাজার মূলধন বেড়েছে ৪৮ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। ৪ এপ্রিল ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ৪৩ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা, যা বেড়ে ২০ মে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৯২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা।

সূচক ও বাজার মূলধনের সঙ্গে গতি বেড়েছে লেনদেনে। শেষ ১৪ কার্যদিবসের (২৯ এপ্রিল থেকে ২০ মে পর্যন্ত) মধ্যে প্রতিটি কার্যদিবসে ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এতে ২০ মে পর্যন্ত ২০২১ সালে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৩২ কোটি টাকা। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত শেয়ারবাজারে ৯৫ দিন লেনদেন হয়েছে। এই ৯৫ দিনে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৯৮ হাজার ৫৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

এর আগে ২০২০ সালজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৮১ কোটি ২২ লাখ টাকা। এতে বছরটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৬৪৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। তার আগে ২০১৯ সালে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৪৮০ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং মোট লেনদেন হয় এক লাখ ১৩ হাজার ৮২১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

এছাড়া ২০১৮ সালে মোট লেনদেন হয় এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৯১ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৫৫২ কোটি তিন লাখ টাকা। ২০১৭ সালে মোট লেনদেন হয় দুই লাখ ১৬ হাজার ৯৫৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৮৭৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর ২০১৬ সালজুড়ে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক লাখ ১৯ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা। সে বছর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ৪৯৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

এ তথ্য থেকেই স্পষ্ট হয়—গত কয়েক বছরের মধ্যে বর্তমান শেয়ারবাজার সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। অথচ এই পরিস্থিতিতেও শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন না। বরং তারা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন।

চলতি বছরে বিদেশিরা ঠিক কত টাকার শেয়ার কিনেছেন বা বিক্রি করেছেন সে সংক্রান্ত তথ্য ডিএসই থেকে পাওয়া যায়নি। তবে ডিএসইর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাজারের চিত্র ভালো থাকলেও এপ্রিল মাসে বিদেশিরা যে টাকার শেয়ার কিনেছেন, বিক্রি করেছেন তার চেয়ে বেশি। বিদেশিদের শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি বেশি করার এই চিত্র দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আরব আমিরাতের দুবাইয়ে রোড শো করেছে বিএসইসি। আর সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম দাবি করেছেন, প্রচুর বিদেশি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এই তালিকায় সিঙ্গাপুর ও দুবাই রয়েছে। এমনকি আমেরিকা থেকেও বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ করছে। তাই অর্থ কোনো সমস্যা হবে না।

দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মো. রকিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ খুবই কম। এটা বাজারের জন্য ভালো নয়। বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ যত বাড়বে, বাজার তত ভাইব্রেন্ট হবে।

তিনি বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নির্ভর। তবে এখন বিনিয়োগকারীরা আগের চেয়ে পরিণত। তারা অনেক চালাক। এটা ভালো লক্ষণ। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সার্বিক তথ্য ভালো করে পর্যালোচনা করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনো অবস্থায়ই গুজবের ওপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না। সেই সঙ্গে ঋণ করে, ধার করে বা জমি বিক্রি অথবা বন্ধক রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত হবে না।

রকিবুর রহমান আরও বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখলে ৫ শতাংশের মতো মুনাফা পাওয়া যায়। কিন্তু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কেউ কেউ রাতারাতি বড় লোক হতে চায়। এত লোভ ভালো না। আপনি পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৫-১০ হাজার টাকা মুনাফা পেলে তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত। কিন্তু পাঁচ লাখ টাকা ১০ লাখ হয়ে যাবে, এমন লোভ করা ঠিক না।

শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক চিত্র সম্পর্কে ডিএসইর আরেক পরিচালক মো. শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, চলতি অর্থবছরে শেয়ারবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে অপ্রদর্শিত অর্থের একটি অংশও এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হচ্ছে। এছাড়া আইপিও কেন্দ্র করেও বাজারে নতুন টাকা এসেছে। এসব কারণেই লেনদেন ও সূচক বেড়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক সদস্য বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে বিএসইসি দৌড়ঝাঁপ করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। সম্পূর্ণ দেশি বিনিয়োগকারীদের ওপরই এখন শেয়ারবাজারের লেনদেন ও সূচকের ওঠা-নামা নির্ভর করছে। তবে আশার কথা, বড় বিনিয়োগকারীরা বাজারে সক্রিয় হয়েছে। এসব বিনিয়োগকারী যেন হুট করে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বাজার থেকে বেরিয়ে না যায়, বিএসইসির উচিত সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি বাড়ালে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ত। কিন্তু এখন সেই চিত্রের কিছুটা হলেও মনে হচ্ছে পরিবর্তন হয়েছে। বিদেশিরা শেয়ার বিক্রির চাপ অব্যাহত রাখলেও তার নেতিবাচক প্রভাব বাজারে খুব একটা পড়ছে না। এর কারণ হলো—বাজারের ওপর এখন বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। এই আস্থা ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

ফিরে দেখা
দেশের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে ভালো সময় ছিল ২০০৯ ও ২০১০ সাল। এই দুই বছরে রমরমা ছিল শেয়ারবাজার। সে সময় শেয়ারবাজার সাধারণ মানুষের কাছে এতটাই আকর্ষণীয় ছিল যে, দলে দলে বিনিয়োগকারী ছুটে আসেন। সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষার্থী সবাই দেদারছে বিনিয়োগ করেন শেয়ারবাজারে। ফলে ফুলে ফেঁপে ওঠে শেয়ারবাজার। যার ফলে ২০১০ সালের শেষ দিকে এসে মহাধস নামে শেয়ারবাজারে। এতে পুঁজি হারান কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী। পুঁজি হারিয়ে দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এমনকি পুঁজি হারিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটে।

এই মহাধসের পর শেয়ারবাজার ঠিক করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী প্রচেষ্টা চালানো হয়। এর ফলে ২০১৪-১৫ এবং ২০১৭ সালে বাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারা ফিরে আসে। কিন্তু সেসব ঊর্ধ্বমুখী ধারা ছিল সাময়িক। বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হতেই এক ধরনের বিক্রির চাপ বেড়ে যেত। এর সঙ্গে বাজারে আসে বেশ কিছু দুর্বল কোম্পানির আইপিও। ফলে সামগ্রিকভাবে বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস স্থায়ী হয়নি।

বরং ২০১০ সালর পর থেকে শেয়ারবাজার ধসের মধ্য দিয়েই গেছে। এর মধ্যে ২০১৯ সাল এবং ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিক শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের কাছে অনেকটাই গলার কাঁটায় পরিণত হয়। লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে অনেকে শেয়ারবাজার ছাড়েন।

সুত্র:জাগোনিউজ

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: