০৩:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

পরিচালক নিয়োগে ব্যাংক-বিমা-আর্থিক খাতে আসছে এক আইন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
  • / ৪৫৩৪ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: অবশেষে বেসরকারি ব্যাংক, ফাইন্যান্স কোম্পানি বা আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানির পরিচালকদের ব্যাপারে আইনে একই ধরনের ধারা যুক্ত হচ্ছে। এ জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইনে সংশোধনী আনার পাশাপাশি ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনই তৈরি করা হচ্ছে নতুন করে। ইতিমধ্যে আইন দুটির খসড়াও অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক, ফাইন্যান্স ও বিমা কোম্পানিতে পরিচালক হিসেবে আছেন এমন শতাধিক ব্যক্তিকে এবার একটিতে থেকে আরেকটি ছেড়ে দিতে হবে।

আইন দুটি পাস হলে বেসরকারি কোনো ব্যাংকের পরিচালক আর কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি তথা আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন না। আবার বিপরীতভাবে কেউ ফাইন্যান্স কোম্পানি বা বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকলে তিনি বেসরকারি কোনো ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না।

দুই বছর ধরে এই দুটি আইন নিয়ে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তবে আলোচনাটি শুরু হয় অন্তত ১০ বছর আগে। বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তখন অর্থ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১১ সালের ৬ মার্চ তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার বিষয়ে তিন আইনের অসংগতির বিষয়টি ওঠে। সেদিন তিনি প্রস্তাব করেছিলেন, এই বিধানের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাংক-কোম্পানি আইন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের অধিকতর সংশোধন করতে হবে।

এরপর কেটে যায় লম্বা সময়। মাঝখানে ব্যাংক কোম্পানি আইন ২০১৩ ও ২০১৮ সালে দুবার সংশোধন হয়েছে। মন্ত্রিসভা অবশ্য গত মাসে ব্যাংক কোম্পানি আইনের আরেক দফা সংশোধনীর খসড়া এবং চলতি মাসে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে। ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন নতুন আইন আকারে পাস হবে। পাস হওয়ার পর বিলুপ্ত হয়ে যাবে বিদ্যমান আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩।

বিদ্যমান বিমা আইন ২০১০ অনুযায়ী কোনো বিমা কোম্পানির পরিচালক যুগপৎ কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারেন না। তাই এটিতে হাত দেওয়া হবে না।

তিন আইনে যা বলা আছে:
ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১–এর ধারা ২৩ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকবেন না। তবে এই আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে কোনো বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩–এর ধারা ২৫ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি একই সময়ে একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা একাধিক ব্যাংক কোম্পানি বা একাধিক সাধারণ বিমা কোম্পানি বা একাধিক জীবনবিমা কোম্পানির পরিচালক থাকবেন না।

বিমা আইন ২০১০–এর ৭৫ ধারায় বলা আছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো বিমাকারীর পরিচালক একই শ্রেণির বিমা ব্যবসায়ের জন্য নিবন্ধীকৃত অন্য কোনো বিমাকারীর বা কোনো ব্যাংক কোম্পানির বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না৷’

সংশোধনীতে যা থাকছে:
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৩ (১) ধারায় বলা আছে, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকবেন না।’ ‘কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের’—এই শব্দগুলোর পরিবর্তে সংশোধনীতে যুক্ত হবে ‘কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বা বিমা কোম্পানির’।

২০১৩ সালে সংশোধনের সময় ‘তবে এই আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে কোনো বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন’ বলে যে শব্দগুলো যুক্ত করা হয়েছিল, এবার সেগুলো বিলুপ্ত করা হচ্ছে।

এদিকে প্রস্তাবিত ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের ১৫ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক একই সময়ে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানি বা বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকবেন না বা তাঁর পক্ষে অন্য কাউকে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানি বা বিমা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক নিয়োগ করতে পারবেন না।

ঢাকা/এসআর

শেয়ার করুন

x
English Version

পরিচালক নিয়োগে ব্যাংক-বিমা-আর্থিক খাতে আসছে এক আইন

আপডেট: ০৮:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: অবশেষে বেসরকারি ব্যাংক, ফাইন্যান্স কোম্পানি বা আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও বিমা কোম্পানির পরিচালকদের ব্যাপারে আইনে একই ধরনের ধারা যুক্ত হচ্ছে। এ জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইনে সংশোধনী আনার পাশাপাশি ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনই তৈরি করা হচ্ছে নতুন করে। ইতিমধ্যে আইন দুটির খসড়াও অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক, ফাইন্যান্স ও বিমা কোম্পানিতে পরিচালক হিসেবে আছেন এমন শতাধিক ব্যক্তিকে এবার একটিতে থেকে আরেকটি ছেড়ে দিতে হবে।

আইন দুটি পাস হলে বেসরকারি কোনো ব্যাংকের পরিচালক আর কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি তথা আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন না। আবার বিপরীতভাবে কেউ ফাইন্যান্স কোম্পানি বা বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকলে তিনি বেসরকারি কোনো ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না।

দুই বছর ধরে এই দুটি আইন নিয়ে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তবে আলোচনাটি শুরু হয় অন্তত ১০ বছর আগে। বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তখন অর্থ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১১ সালের ৬ মার্চ তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার বিষয়ে তিন আইনের অসংগতির বিষয়টি ওঠে। সেদিন তিনি প্রস্তাব করেছিলেন, এই বিধানের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাংক-কোম্পানি আইন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনের অধিকতর সংশোধন করতে হবে।

এরপর কেটে যায় লম্বা সময়। মাঝখানে ব্যাংক কোম্পানি আইন ২০১৩ ও ২০১৮ সালে দুবার সংশোধন হয়েছে। মন্ত্রিসভা অবশ্য গত মাসে ব্যাংক কোম্পানি আইনের আরেক দফা সংশোধনীর খসড়া এবং চলতি মাসে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে। ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন নতুন আইন আকারে পাস হবে। পাস হওয়ার পর বিলুপ্ত হয়ে যাবে বিদ্যমান আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩।

বিদ্যমান বিমা আইন ২০১০ অনুযায়ী কোনো বিমা কোম্পানির পরিচালক যুগপৎ কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারেন না। তাই এটিতে হাত দেওয়া হবে না।

তিন আইনে যা বলা আছে:
ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১–এর ধারা ২৩ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকবেন না। তবে এই আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে কোনো বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩–এর ধারা ২৫ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি একই সময়ে একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা একাধিক ব্যাংক কোম্পানি বা একাধিক সাধারণ বিমা কোম্পানি বা একাধিক জীবনবিমা কোম্পানির পরিচালক থাকবেন না।

বিমা আইন ২০১০–এর ৭৫ ধারায় বলা আছে, ‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো বিমাকারীর পরিচালক একই শ্রেণির বিমা ব্যবসায়ের জন্য নিবন্ধীকৃত অন্য কোনো বিমাকারীর বা কোনো ব্যাংক কোম্পানির বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না৷’

সংশোধনীতে যা থাকছে:
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৩ (১) ধারায় বলা আছে, ‘কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যাংক কোম্পানির পরিচালক হলে একই সময়ে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকবেন না।’ ‘কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের’—এই শব্দগুলোর পরিবর্তে সংশোধনীতে যুক্ত হবে ‘কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বা বিমা কোম্পানির’।

২০১৩ সালে সংশোধনের সময় ‘তবে এই আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে কোনো বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকতে পারবেন’ বলে যে শব্দগুলো যুক্ত করা হয়েছিল, এবার সেগুলো বিলুপ্ত করা হচ্ছে।

এদিকে প্রস্তাবিত ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের ১৫ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ফাইন্যান্স কোম্পানির কোনো পরিচালক একই সময়ে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানি বা বিমা কোম্পানির পরিচালক থাকবেন না বা তাঁর পক্ষে অন্য কাউকে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানি বা বিমা কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক নিয়োগ করতে পারবেন না।

ঢাকা/এসআর