১১:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুনর্গঠিত বোর্ডের ৭ কোম্পানির শেয়ার আকড়ে ধরেছেন বিক্রেতারা!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:১০:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১
  • / ৬২২৮ বার দেখা হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক: ২০১০ সালের মহাধসের পর সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সোমবার। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই লেনদেনের দিন ১০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে মোট ২৬টির। এরমধ্যে সম্প্রতি ৭ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বিএসইসি সম্প্রতি বেশ কিছু বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে। এর মধ্যে দুটি উৎপাদন শুরু ও আরও একটি উৎপাদন শুরুর ঘোষণার পর এসব কোম্পানিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রতি বছর ভালো ডিভিডেন্ড দেয়, মুনাফায় আছে, এমন কোম্পানির তুলনায় অস্বাভাবিক হারে ডুবে যাওয়া কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ছে।

তবে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, বোর্ড পুনর্গঠন মানেই যে সব কোম্পানি উৎপাদনে আসবে এমন নয়। নতুন বোর্ড কোম্পানির দায়, দেনা, সম্পদের বিষয়টি বিবেচনা করে তা অবসায়নেরও সুপারিশ করতে পারে।

এর আগে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কয়েকটি কোম্পানি নিয়ে তারা হতাশ। এগুলো আদৌ চালু করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। সে ক্ষেত্রে তারা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবেন।

যদিও এ বিষয়ে এখনো বিএসইসির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি আর তার আগেই শেয়ার মূল্য বেড়ে গেছে বহুগুণ। আর এই দাম বৃদ্ধি থামার নাম নেই।

জানা গেছে, বিএসইসি যেসব কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করেছে, সোমবার হল্টেড হয়েছে তার মধ্যে ৭টি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ বেড়েছে বিআইএফসির দর। দাম ৭ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ৭০ পয়সা।

গত ২২ জানুয়ারি বোর্ড পুনর্গঠন করা বিআইএফসি ২০১৮ সালের পূর্ণাঙ্গ আর্থিক বিবরণীই এখনও প্রকাশ করেনি। ২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি ৬৯.৫৫ টাকা ৫৫ লোকসান, ৬৬.৪০ টাকা দায়, ৭৬৯ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণাত্মক রিজার্ভ থাকা কোম্পানিটি ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত কেবল হিসাব দিয়েছে।

২০১৮ সালে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৪ টাকা ৭৯ পয়সা, আর শেয়ারপ্রতি দায় ছিল ৮৪ টাকা ২৪ পয়সা।

এমন দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দর বোর্ড পুনর্গঠনের আগের দিন ছিল ৪ টাকা ৭০ পয়সা।

বোর্ড পুনর্গঠনের পর উৎপাদনে আসা রিংসাইন টেক্সটাইল হল্টেড হলো টানা দুই দিন। ৯.৬৪ শতাংশ বেড়ে ১১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে হয়েছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা।

গত ২৭ জানুয়ারি বোর্ড পুনর্গঠনের সময় কোম্পানিটি সে সময়ের ফ্লোর প্রাইস (বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দাম) ৬ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছিল। ফ্লোর তুলে দেয়ার পর দাম দাঁড়ায় ৪ টাকা ৭০ পয়সা। এরপর কোম্পানিটি উৎপাদন শুরুর পথে এগিয়ে যেতে থাকলে দাম বাড়তে থাকে। ঈদের আগে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। আর এখন আরও একটি ইউনিটে উৎপাদন শুরুর সংবাদ এসেছে গণমাধ্যমে।

তালিকাভুক্তির পর উদ্যোক্তা পরিচালকরা বিনা ঘোষণায় শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানি বন্ধ করে দেয়া সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল ও ফ্যামিলি টেক্সটাইলের দামও বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণে।

সিঅ্যান্ডএর দাম ৮.৯৫ শতাংশ বেড়ে ৬ টাকা ৭০ পয়সার শেয়ার হয়েছে ৭ টাকা ৩০ পয়সা।

ফ্যামিলি টেক্সটাইলের দর ৮.৭৭ শতাংশ বেড়েছে। দাম ৫ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬ টাকা ২০ পয়সা।

খেলাপি ঋণের কারণে আর্থিক খাতের ডুবে যাওয়া তিন কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফাস ফিনান্স ও ফারইস্ট ফিনান্সের দরও বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফাইনান্সের দর ৯.৫৭ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৪ পয়সা থেকে হয়েছে ১০ টাকা ৩০ পয়সা।

গত ৩০ জুন বোর্ড পুনর্গঠনের দিন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দাম ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সা।

কোনো সম্পদ নেই, উল্টো শেয়ারপ্রতি দায় ১১৩ টাকা ৬৩ পয়সা। কোম্পানির রিজার্ভে কোনো অর্থ নেই, উল্টো দায় ২ হাজার ৭৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি ১২৬ টাকা ৩৬ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি। তবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ টাকার শেয়ারে লোকসান ছিল ১১ টাকা ৩৮ পয়সা।

ফাস ফিনান্সের দর ৯.১৯ শতাংশ বেড়ে ৮ টাকা ৭০ পয়সা থেকে হয়েছে ৯ টাকা ৫০ পয়সা।

আলোচিত ব্যাংকার পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের মতোই ডুবেছে ফাস ফিনান্স।

কোম্পানিটির বোর্ড পুনর্গঠন করা হয় গত ৩১ মার্চ। পরদিন শেয়ার দর ছিল ৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে হয় ৪ টাকা ৩০ পয়সায়।

তবে সম্প্রতি লোকসানি কোম্পানিতে যে জোয়ার তৈরি হয়েছে, তাতে এই কোম্পানির শেয়ারদরও বাড়ছে।

এই কোম্পানিটি ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান দিয়েছে ১০ টাকা ১২ পয়সা। তখন শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য মাত্র ১ টাকা ৯৩ পয়সা। তবে এখন নিশ্চিতভাবেই তা ঋণাত্মকে চলে গেছে। কারণ, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি লোকসান দিয়েছে ৮ টাকা ৫৪ পয়সা। কোম্পানির রিজার্ভে দায় আছে ১ হাজার ২০২ কোটি ৮০ লাখ টাকার।

ফারইস্ট ফিনান্সের দর ৮.৯৮ শতাংশ বেড়ে ৮ টাকা ৯০ শতাংশ থেকে হয়েছে ৯ টাকা ৭০ পয়সা।

ফাস ফিনান্স ও এই কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন হয়েছে একই দিনে। সেদিন শেয়ার মূল্য ছিল ৩ টাকা ৮০ পয়সা।

২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি ৪ টাকা ৩৮ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালে ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭০ পয়সা লোকসান ছিল কোম্পানিটির।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘লোকসানি কোম্পানি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এ নিয়ে নিয়ন্ত্রত সংস্থার ও কিছু করার আছে বলে মনে হয় না। কারণ, বিনিয়োগকারীরা যেখান থেকে মুনাফা হবে সেখানেই বিনিয়োগ করবে। এসব কোম্পানির শেয়ার অনেকটা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। তবে দরবৃদ্ধির শেষ বলটি যার হাতে পরে তিনিই লোকসানের মুখে পড়েন।’

তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বে অনেক লোকসানি কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের এমন আগ্রহ দেখা গেছে। এমন সব কোম্পানির উত্থান সবসময় স্বল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে। আর পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ক্ষেত্রেও কোনো ভূমিকা থাকে না। এ অবস্থা সব সময় হয়ে থাকে। বিনিয়োগকারীদের সচেতন হতে হবে। মুনাফার পাশাপাশি ভালো কোম্পানির প্রতিও তাদের আগ্রহী হতে হবে।’

বিজনেসজার্নাল/ঢাকা/এইচকে

শেয়ার করুন

x
English Version

পুনর্গঠিত বোর্ডের ৭ কোম্পানির শেয়ার আকড়ে ধরেছেন বিক্রেতারা!

আপডেট: ০১:১০:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১

বিশেষ প্রতিবেদক: ২০১০ সালের মহাধসের পর সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সোমবার। প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই লেনদেনের দিন ১০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে মোট ২৬টির। এরমধ্যে সম্প্রতি ৭ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বিএসইসি সম্প্রতি বেশ কিছু বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে। এর মধ্যে দুটি উৎপাদন শুরু ও আরও একটি উৎপাদন শুরুর ঘোষণার পর এসব কোম্পানিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রতি বছর ভালো ডিভিডেন্ড দেয়, মুনাফায় আছে, এমন কোম্পানির তুলনায় অস্বাভাবিক হারে ডুবে যাওয়া কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ছে।

তবে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, বোর্ড পুনর্গঠন মানেই যে সব কোম্পানি উৎপাদনে আসবে এমন নয়। নতুন বোর্ড কোম্পানির দায়, দেনা, সম্পদের বিষয়টি বিবেচনা করে তা অবসায়নেরও সুপারিশ করতে পারে।

এর আগে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কয়েকটি কোম্পানি নিয়ে তারা হতাশ। এগুলো আদৌ চালু করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। সে ক্ষেত্রে তারা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবেন।

যদিও এ বিষয়ে এখনো বিএসইসির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি আর তার আগেই শেয়ার মূল্য বেড়ে গেছে বহুগুণ। আর এই দাম বৃদ্ধি থামার নাম নেই।

জানা গেছে, বিএসইসি যেসব কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করেছে, সোমবার হল্টেড হয়েছে তার মধ্যে ৭টি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ বেড়েছে বিআইএফসির দর। দাম ৭ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ৭০ পয়সা।

গত ২২ জানুয়ারি বোর্ড পুনর্গঠন করা বিআইএফসি ২০১৮ সালের পূর্ণাঙ্গ আর্থিক বিবরণীই এখনও প্রকাশ করেনি। ২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি ৬৯.৫৫ টাকা ৫৫ লোকসান, ৬৬.৪০ টাকা দায়, ৭৬৯ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণাত্মক রিজার্ভ থাকা কোম্পানিটি ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত কেবল হিসাব দিয়েছে।

২০১৮ সালে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৪ টাকা ৭৯ পয়সা, আর শেয়ারপ্রতি দায় ছিল ৮৪ টাকা ২৪ পয়সা।

এমন দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দর বোর্ড পুনর্গঠনের আগের দিন ছিল ৪ টাকা ৭০ পয়সা।

বোর্ড পুনর্গঠনের পর উৎপাদনে আসা রিংসাইন টেক্সটাইল হল্টেড হলো টানা দুই দিন। ৯.৬৪ শতাংশ বেড়ে ১১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে হয়েছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা।

গত ২৭ জানুয়ারি বোর্ড পুনর্গঠনের সময় কোম্পানিটি সে সময়ের ফ্লোর প্রাইস (বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দাম) ৬ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছিল। ফ্লোর তুলে দেয়ার পর দাম দাঁড়ায় ৪ টাকা ৭০ পয়সা। এরপর কোম্পানিটি উৎপাদন শুরুর পথে এগিয়ে যেতে থাকলে দাম বাড়তে থাকে। ঈদের আগে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। আর এখন আরও একটি ইউনিটে উৎপাদন শুরুর সংবাদ এসেছে গণমাধ্যমে।

তালিকাভুক্তির পর উদ্যোক্তা পরিচালকরা বিনা ঘোষণায় শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানি বন্ধ করে দেয়া সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল ও ফ্যামিলি টেক্সটাইলের দামও বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণে।

সিঅ্যান্ডএর দাম ৮.৯৫ শতাংশ বেড়ে ৬ টাকা ৭০ পয়সার শেয়ার হয়েছে ৭ টাকা ৩০ পয়সা।

ফ্যামিলি টেক্সটাইলের দর ৮.৭৭ শতাংশ বেড়েছে। দাম ৫ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬ টাকা ২০ পয়সা।

খেলাপি ঋণের কারণে আর্থিক খাতের ডুবে যাওয়া তিন কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফাস ফিনান্স ও ফারইস্ট ফিনান্সের দরও বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফাইনান্সের দর ৯.৫৭ শতাংশ বেড়ে ৯ টাকা ৪ পয়সা থেকে হয়েছে ১০ টাকা ৩০ পয়সা।

গত ৩০ জুন বোর্ড পুনর্গঠনের দিন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দাম ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সা।

কোনো সম্পদ নেই, উল্টো শেয়ারপ্রতি দায় ১১৩ টাকা ৬৩ পয়সা। কোম্পানির রিজার্ভে কোনো অর্থ নেই, উল্টো দায় ২ হাজার ৭৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি ১২৬ টাকা ৩৬ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি। তবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ টাকার শেয়ারে লোকসান ছিল ১১ টাকা ৩৮ পয়সা।

ফাস ফিনান্সের দর ৯.১৯ শতাংশ বেড়ে ৮ টাকা ৭০ পয়সা থেকে হয়েছে ৯ টাকা ৫০ পয়সা।

আলোচিত ব্যাংকার পি কে হালদার কেলেঙ্কারিতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের মতোই ডুবেছে ফাস ফিনান্স।

কোম্পানিটির বোর্ড পুনর্গঠন করা হয় গত ৩১ মার্চ। পরদিন শেয়ার দর ছিল ৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে কমে হয় ৪ টাকা ৩০ পয়সায়।

তবে সম্প্রতি লোকসানি কোম্পানিতে যে জোয়ার তৈরি হয়েছে, তাতে এই কোম্পানির শেয়ারদরও বাড়ছে।

এই কোম্পানিটি ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান দিয়েছে ১০ টাকা ১২ পয়সা। তখন শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য মাত্র ১ টাকা ৯৩ পয়সা। তবে এখন নিশ্চিতভাবেই তা ঋণাত্মকে চলে গেছে। কারণ, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি লোকসান দিয়েছে ৮ টাকা ৫৪ পয়সা। কোম্পানির রিজার্ভে দায় আছে ১ হাজার ২০২ কোটি ৮০ লাখ টাকার।

ফারইস্ট ফিনান্সের দর ৮.৯৮ শতাংশ বেড়ে ৮ টাকা ৯০ শতাংশ থেকে হয়েছে ৯ টাকা ৭০ পয়সা।

ফাস ফিনান্স ও এই কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন হয়েছে একই দিনে। সেদিন শেয়ার মূল্য ছিল ৩ টাকা ৮০ পয়সা।

২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি ৪ টাকা ৩৮ পয়সা লোকসান দেয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালে ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭০ পয়সা লোকসান ছিল কোম্পানিটির।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘লোকসানি কোম্পানি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এ নিয়ে নিয়ন্ত্রত সংস্থার ও কিছু করার আছে বলে মনে হয় না। কারণ, বিনিয়োগকারীরা যেখান থেকে মুনাফা হবে সেখানেই বিনিয়োগ করবে। এসব কোম্পানির শেয়ার অনেকটা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। তবে দরবৃদ্ধির শেষ বলটি যার হাতে পরে তিনিই লোকসানের মুখে পড়েন।’

তিনি বলেন, ‘ইতিপূর্বে অনেক লোকসানি কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের এমন আগ্রহ দেখা গেছে। এমন সব কোম্পানির উত্থান সবসময় স্বল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে। আর পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ক্ষেত্রেও কোনো ভূমিকা থাকে না। এ অবস্থা সব সময় হয়ে থাকে। বিনিয়োগকারীদের সচেতন হতে হবে। মুনাফার পাশাপাশি ভালো কোম্পানির প্রতিও তাদের আগ্রহী হতে হবে।’

বিজনেসজার্নাল/ঢাকা/এইচকে