১১:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রলারডুবির ঘটনায় নিহত বেড়ে ২২

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:২১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২১
  • / ১০৪৩১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দুটি ট্রলারের সংঘর্ষের ঘটনায় নাশরা (৩) নামে আরও এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।

শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল পৌনে ১০টায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ট্রলারডুবির স্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন। নিহত নাশরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৈরতলা এলাকার হারিছ মিয়ার মেয়ে। উদ্ধারের পর শিশুটির চাচা ছায়েদ মিয়া ও ফরিদ মিয়াসহ স্বজনরা লাশের পরিচয় শনাক্ত করে।

নাশরার চাচা মাসুদ মিয়া বলেন, গতকাল সকালে নাশরা তার চাচা ফারুক মিয়ার শ্বশুরবাড়ি বিজয়নগর উপজেলার নোয়াগাঁওয়ে বেড়াতে যায়। বিকেলে ট্রলারে করে বাড়ি ফিরছিল তারা। ফারুক ট্রলারের ছাদে এবং নাশরা ও তার চাচি কাজল বেগম ট্রলারের ভেতরে ছিল। ট্রলারডুবিতে আমার ভাবি কাজল বেগম মারা গেছেন। ফারুক সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নাশরাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিষয়টি শ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান জানান, নৌকাটিতে ৭০ থেকে ৮০ জনের মতো যাত্রী ছিলো বলে জানা গেছে। এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ওই ট্রলারের মাঝিসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে দুর্ঘটনার কারণে ওই নৌপথে সাময়িকভাবে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এছাড়া শুক্রবার রাত নাগাদ উদ্ধার হওয়া ২১ জনের মধ্যে ১৭ জনের মরদেহ রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের পৈরতলা এলাকার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫৫) ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী কাজলা বেগম, দাতিয়ারা এলাকার মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মিম (১২), সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেরকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানভীর (৮) ও চিলোকুট গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার শিশু কন্যা তাকুয়া (৮)। নরসিংসার গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম (৭), ভাটপাড়া গ্রামের ঝারু মিয়ার মেয়ে শারমিন (১৮), বিজয়গর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে আরিফ বিল্লাহ (২০), বেড়াগাঁও গ্রামের মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬০), জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৭) এবং তার মেয়ে মুন্নি (১০) ও আব্দুল হাসিমের স্ত্রী কমলা বেগম (৫২), নূরপুর গ্রামের মৃত রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫০), আদমপুর গ্রামের অখিল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনী বিশ্বাস (৩০) ও পরিমল বিশ্বাসের মেয়ে তিথিবা বিশ্বাস (২) এবং ময়মনসিংহের খোকন মিয়ার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমের (৪৫)। বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়ন বাদেহাড়িয়া কামাল মিয়ার শিশু মেয়ে মাহিদা আক্তার (৬), একই উপজেলার মনিপুরের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫৮) নিহত হয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন বলেন, জেনারেল হাসপাতালে মরদেহগুলো নিয়ে আসা হয়েছে। শনাক্তের পর ১৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নৌকা ডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া নিহত প্রত্যেক পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য ২০ করে হাজার টাকা দেওয়া হবে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলার বিজয়নগরে লইস্কা বিলে বালুবোঝাই ট্রলারের ধাক্কায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় মধ্যরাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নারী ও শিশুসহ ২১ জনের লাশ উদ্ধার করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। পরে আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি উদ্ধারের পর জানা যাবে, আর কেউ আটকা পড়ে আছে কি-না।

ঢাকা/এনইউ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রলারডুবির ঘটনায় নিহত বেড়ে ২২

আপডেট: ০১:২১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দুটি ট্রলারের সংঘর্ষের ঘটনায় নাশরা (৩) নামে আরও এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।

শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল পৌনে ১০টায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা ট্রলারডুবির স্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন। নিহত নাশরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৈরতলা এলাকার হারিছ মিয়ার মেয়ে। উদ্ধারের পর শিশুটির চাচা ছায়েদ মিয়া ও ফরিদ মিয়াসহ স্বজনরা লাশের পরিচয় শনাক্ত করে।

নাশরার চাচা মাসুদ মিয়া বলেন, গতকাল সকালে নাশরা তার চাচা ফারুক মিয়ার শ্বশুরবাড়ি বিজয়নগর উপজেলার নোয়াগাঁওয়ে বেড়াতে যায়। বিকেলে ট্রলারে করে বাড়ি ফিরছিল তারা। ফারুক ট্রলারের ছাদে এবং নাশরা ও তার চাচি কাজল বেগম ট্রলারের ভেতরে ছিল। ট্রলারডুবিতে আমার ভাবি কাজল বেগম মারা গেছেন। ফারুক সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নাশরাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিষয়টি শ্চিত করে জেলা পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান জানান, নৌকাটিতে ৭০ থেকে ৮০ জনের মতো যাত্রী ছিলো বলে জানা গেছে। এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ওই ট্রলারের মাঝিসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে দুর্ঘটনার কারণে ওই নৌপথে সাময়িকভাবে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এছাড়া শুক্রবার রাত নাগাদ উদ্ধার হওয়া ২১ জনের মধ্যে ১৭ জনের মরদেহ রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের পৈরতলা এলাকার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫৫) ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী কাজলা বেগম, দাতিয়ারা এলাকার মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মিম (১২), সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেরকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানভীর (৮) ও চিলোকুট গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার শিশু কন্যা তাকুয়া (৮)। নরসিংসার গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম (৭), ভাটপাড়া গ্রামের ঝারু মিয়ার মেয়ে শারমিন (১৮), বিজয়গর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে আরিফ বিল্লাহ (২০), বেড়াগাঁও গ্রামের মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬০), জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৭) এবং তার মেয়ে মুন্নি (১০) ও আব্দুল হাসিমের স্ত্রী কমলা বেগম (৫২), নূরপুর গ্রামের মৃত রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫০), আদমপুর গ্রামের অখিল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনী বিশ্বাস (৩০) ও পরিমল বিশ্বাসের মেয়ে তিথিবা বিশ্বাস (২) এবং ময়মনসিংহের খোকন মিয়ার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমের (৪৫)। বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়ন বাদেহাড়িয়া কামাল মিয়ার শিশু মেয়ে মাহিদা আক্তার (৬), একই উপজেলার মনিপুরের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫৮) নিহত হয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন বলেন, জেনারেল হাসপাতালে মরদেহগুলো নিয়ে আসা হয়েছে। শনাক্তের পর ১৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নৌকা ডুবির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া নিহত প্রত্যেক পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য ২০ করে হাজার টাকা দেওয়া হবে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলার বিজয়নগরে লইস্কা বিলে বালুবোঝাই ট্রলারের ধাক্কায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় মধ্যরাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে নারী ও শিশুসহ ২১ জনের লাশ উদ্ধার করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। পরে আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযানটি উদ্ধারের পর জানা যাবে, আর কেউ আটকা পড়ে আছে কি-না।

ঢাকা/এনইউ