০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়ানোসহ সব প্রস্তাবই নাকচ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:৪৭:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
  • / ১০৩২২ বার দেখা হয়েছে

আগামী বাজেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নতুন সুখবর থাকছে না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সব প্রস্তাবই নাকচ হয়ে গেছে। এদিকে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণসহ চলমান কোনো প্রকল্পের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে অতিরিক্ত কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। শুধু দুটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

অর্থ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আসন্ন বাজেটে নতুন প্রস্তাব তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। কৃচ্ছ্রসাধন ও চলমান প্রকল্পের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখাকেই এবার গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর দেওয়া প্রস্তাবে সবাই একমত হলেও অতিরিক্ত বরাদ্দ সাপেক্ষে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র বলছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারে ভাতা বাড়ানো-সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর নজরে নেবেন। এর আগে ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করেছিলেন। এবার ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা করার পাশাপাশি অন্য ভাতা ও সম্মানী প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের চেয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ২ হাজার ৮০৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত হারে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের ভাতা বাড়লে সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট দাঁড়াবে ৮ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগামী ৫ জুন সংসদে বাজেট উত্থাপনের কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব করেছি। অর্থ মন্ত্রণালয় বাস্তবতার নিরিখে সেটার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করছে। আমরা চেষ্টা করছি। আগেই কিছু বলা যাচ্ছে না। বাজেটে বরাদ্দ পাওয়া গেলে প্রস্তাবগুলো কার্যকর হবে।’

আরও পড়ুন: আয় বাড়াতে হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আলোচ্যসূচি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আট শ্রেণিতে বীরশ্রেষ্ঠ, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এবং প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাফন, সৎকারসহ লাশ পরিবহনের জন্য বিদ্যমান অনুদান বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এতে বীরশ্রেষ্ঠের বিদ্যমান ভাতা ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা, মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসব ভাতা জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা ও বিজয় দিবস ভাতা ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা দিবস ভাতা জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা ও নববর্ষ ভাতা দুই হাজার থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বীরউত্তম ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা, বীরবিক্রম ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩৫ হাজার টাকা, বীরপ্রতীক ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা এবং যুদ্ধাহত ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের দাফন, সৎকার, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও লাশ পরিবহনের জন্য বিদ্যমান অনুদান জনপ্রতি সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৯০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ২০ হাজার টাকা হারে দুই লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী পাচ্ছেন। নথি অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের ওয়ারিশ মিলে মোট উপকারভোগী ২ লাখ ১২ হাজার ৫৮৫ জন।

জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে মুক্তিযোদ্ধারা আরও ভালো থাকতে পারেন। সংসদীয় কমিটি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই নেবে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x

মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়ানোসহ সব প্রস্তাবই নাকচ

আপডেট: ০৩:৪৭:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

আগামী বাজেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নতুন সুখবর থাকছে না। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সব প্রস্তাবই নাকচ হয়ে গেছে। এদিকে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণসহ চলমান কোনো প্রকল্পের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে অতিরিক্ত কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। শুধু দুটি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

অর্থ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, আসন্ন বাজেটে নতুন প্রস্তাব তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। কৃচ্ছ্রসাধন ও চলমান প্রকল্পের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখাকেই এবার গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর দেওয়া প্রস্তাবে সবাই একমত হলেও অতিরিক্ত বরাদ্দ সাপেক্ষে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র বলছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারে ভাতা বাড়ানো-সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর নজরে নেবেন। এর আগে ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করেছিলেন। এবার ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা করার পাশাপাশি অন্য ভাতা ও সম্মানী প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের চেয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ২ হাজার ৮০৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত হারে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের ভাতা বাড়লে সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট দাঁড়াবে ৮ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগামী ৫ জুন সংসদে বাজেট উত্থাপনের কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব করেছি। অর্থ মন্ত্রণালয় বাস্তবতার নিরিখে সেটার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করছে। আমরা চেষ্টা করছি। আগেই কিছু বলা যাচ্ছে না। বাজেটে বরাদ্দ পাওয়া গেলে প্রস্তাবগুলো কার্যকর হবে।’

আরও পড়ুন: আয় বাড়াতে হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আলোচ্যসূচি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আট শ্রেণিতে বীরশ্রেষ্ঠ, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এবং প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দাফন, সৎকারসহ লাশ পরিবহনের জন্য বিদ্যমান অনুদান বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এতে বীরশ্রেষ্ঠের বিদ্যমান ভাতা ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা, মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসব ভাতা জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা ও বিজয় দিবস ভাতা ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা দিবস ভাতা জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা ও নববর্ষ ভাতা দুই হাজার থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বীরউত্তম ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা, বীরবিক্রম ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩৫ হাজার টাকা, বীরপ্রতীক ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা এবং যুদ্ধাহত ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের দাফন, সৎকার, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও লাশ পরিবহনের জন্য বিদ্যমান অনুদান জনপ্রতি সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৯০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ২০ হাজার টাকা হারে দুই লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী পাচ্ছেন। নথি অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের ওয়ারিশ মিলে মোট উপকারভোগী ২ লাখ ১২ হাজার ৫৮৫ জন।

জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে মুক্তিযোদ্ধারা আরও ভালো থাকতে পারেন। সংসদীয় কমিটি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই নেবে।

ঢাকা/এসএইচ