রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলো খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ
- আপডেট: ১২:২২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০২২
- / ৪১৫৫ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোকে খেলাপি ঋণ আদায় করার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছে না। নির্ধারণ করে দেওয়া মূল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা দূরে থাক, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জনেও কোনো সফলতা দেখাতে পারছে না। চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সার্বিকভাবে বার্ষিক সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৫১ শতাংশের কিছু বেশি খেলাপি ঋণ আদায় করতে পেরেছে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। যা মূল লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এই হার হচ্ছে ৪৭ শতাংশ।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
সূত্র জানায়, ছয়টি ব্যাংকের মধ্যে রূপালী, অগ্রণী ও সোনালী অর্ধ-বার্ষিকের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কিছু বেশি ঋণ আদায় করেছে। অপর দিকে অর্ধ-বার্ষিকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে জনতা, বেসিক ও বিডিবিএল।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে সম্পাদিত ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) আওতায় চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৬০৫ কোটি টাকা; কিন্তু খেলাপি ঋণ আদায় কার্যক্রম সন্তোষজনক না হওয়ায় গত নভেম্বরে অগ্রণী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ১৩৫ কোটি কমিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের সংশোধিত বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৭০ কোটি টাকা।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটি আদায় করেছে ২৩৬ কোটি টাকা। আদায়ের হার ৫২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের একই সময়ে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি ২২ লাখ টাকা (আদায়ের হার ছিল ৫৮শতাংশ)। সে হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ও হার দুটোই কমেছে।
এপিএ’র মূল চুক্তিতে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০০ কোটি টাকা। সংশোধিত চুক্তিতে এটি কমিয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ছয় মাসে ব্যাংকটি আদায় করেছে ২১৯ কোটি টাকা। আদায়ের হার ৬০ দশমিক ৮৩ শতাংশ (মূল লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আদায়ের হার ৫৪.৭৫ শতাংশ)। গত অর্থবছরের একই সময়ে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ১৩১ কোটি টাকা (আদায়ের হার ছিল ৩৩শতাংশ)।
এপিএ’র মূল চুক্তিতে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪০ কোটি টাকা। সংশোধিত চুক্তিতে এটি কমিয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৭০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ছয় মাসে ব্যাংকটি আদায় করেছে ৬৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আদায়ের হার প্রায় ৯২ শতাংশ (মূল লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আদায়ের হার ৪৬ শতাংশ)। গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের একই সময়ে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৩৯ কোটি ছয় লাখ টাকা (আদায়ের হার ছিল ২৮ শতাংশ)।
বিডিবিএল-এর খেলাপি ঋণ আদায়ের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ছয় মাসে ব্যাংকটি আদায় করেছে ১২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আদায়ের হার ৩৩ শতাংশ। গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের একই সময়ে বিডিবিএল-এর খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা (আদায়ের হার ছিল ৪৩ শতাংশ)। সে হিসেবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বিডিবিএল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিমাণ ও হার দুটোই কমেছে।