১২:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

রিজার্ভে মুনাফা বেড়েছে ৯০৯ শতাংশ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:১৬:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৪১৪৮ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক হিসাব চূড়ান্ত করেছে, যা গত মঙ্গলবারের পর্ষদ সভায় অনুমোদন হয়েছে। এর ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের পাঁচ মাসের মূল বেতনের সমান বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, পর্ষদের সভায় চূড়ান্ত হিসাব অনুমোদন হয়েছে। আন্তর্জাতিক যে চর্চা আছে, তা অনুসরণ করেই চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বার্ষিক হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুদ আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা থেকে কমিশন ও বাট্টা আয় বেড়ে হয়েছে ৫২ কোটি টাকা, যা আগে ছিল ৩১ কোটি।

গত অর্থবছরে টাকা ধার দেওয়ার বিপরীতে সুদ আয় কমে ২ হাজার ৭২৩ কোটি টাকায় নেমেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। কমিশন ও বাট্টা থেকেও আয় কমে ২০৬ কোটি টাকায় নেমেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৪৪৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া লভ্যাংশ ও অন্য আয় মিলে আয় হয়েছে ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট আয় ছিল ৬ হাজার ২৯ কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রায় দায়ের বিপরীতে খরচ বেড়ে হয়েছে ১৪৭ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১০৪ কোটি টাকা। দেশীয় মুদ্রায় দায়ের বিপরীতে খরচ কমে হয়েছে ৮১৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৮৮২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে টাকা ছাপানোর জন্য খরচ হয়েছে ৩৮৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৩৪০ কোটি টাকা। কর্মীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা, যা আগে ছিল ১ হাজার ২০২ কোটি টাকা। এ ছাড়া অবচয় ও অন্য খরচ হয়েছে ৩৪৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

আয় থেকে খরচ বাদ দিয়ে গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে যা ছিল ৩ হাজার ১৭১ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মুনাফা ছিল ৫ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মুনাফা হয়েছিল ৪ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরে বিদেশি মুদ্রার পুনর্মূল্যায়নে মুনাফা হয়েছে ২৬ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা, আগের অর্থবছরে যা ছিল ২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। আবার গত অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয় ৭ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। রিজার্ভ বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার স্বর্ণও কিনে থাকে। এতে বিনিয়োগ মূল্য বেড়ে যায়, আবার কমেও।

এদিকে ব্যাংকগুলোতে ডলারের উদ্বৃত্ত হলে তা কিনে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক, আর সংকট হলে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে। ডলারের সংকট হওয়ায় গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭৬২ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। গত ৩০ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করে ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা দরে। এখন বিক্রি করছে ৯৫ টাকা।

সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার পুনর্মূল্যায়ন থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৬ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা মুনাফা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগের বছরে মুনাফা দেখিয়েছিল ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে যা ছিল মাত্র ৪২৭ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার পুনর্মূল্যায়ন থেকে মুনাফা ছিল ১ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা।

আরো পড়ুন: বিদেশগামী ও ফেরত যাত্রীরা যত ডলার সাথে রাখতে পারবে

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x

রিজার্ভে মুনাফা বেড়েছে ৯০৯ শতাংশ

আপডেট: ০৫:১৬:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক হিসাব চূড়ান্ত করেছে, যা গত মঙ্গলবারের পর্ষদ সভায় অনুমোদন হয়েছে। এর ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের পাঁচ মাসের মূল বেতনের সমান বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, পর্ষদের সভায় চূড়ান্ত হিসাব অনুমোদন হয়েছে। আন্তর্জাতিক যে চর্চা আছে, তা অনুসরণ করেই চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বার্ষিক হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুদ আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা থেকে কমিশন ও বাট্টা আয় বেড়ে হয়েছে ৫২ কোটি টাকা, যা আগে ছিল ৩১ কোটি।

গত অর্থবছরে টাকা ধার দেওয়ার বিপরীতে সুদ আয় কমে ২ হাজার ৭২৩ কোটি টাকায় নেমেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। কমিশন ও বাট্টা থেকেও আয় কমে ২০৬ কোটি টাকায় নেমেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৪৪৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া লভ্যাংশ ও অন্য আয় মিলে আয় হয়েছে ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট আয় ছিল ৬ হাজার ২৯ কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রায় দায়ের বিপরীতে খরচ বেড়ে হয়েছে ১৪৭ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ১০৪ কোটি টাকা। দেশীয় মুদ্রায় দায়ের বিপরীতে খরচ কমে হয়েছে ৮১৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৮৮২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে টাকা ছাপানোর জন্য খরচ হয়েছে ৩৮৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৩৪০ কোটি টাকা। কর্মীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা, যা আগে ছিল ১ হাজার ২০২ কোটি টাকা। এ ছাড়া অবচয় ও অন্য খরচ হয়েছে ৩৪৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

আয় থেকে খরচ বাদ দিয়ে গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে যা ছিল ৩ হাজার ১৭১ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মুনাফা ছিল ৫ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মুনাফা হয়েছিল ৪ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরে বিদেশি মুদ্রার পুনর্মূল্যায়নে মুনাফা হয়েছে ২৬ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা, আগের অর্থবছরে যা ছিল ২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। আবার গত অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয় ৭ হাজার ২৩১ কোটি টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। রিজার্ভ বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আবার স্বর্ণও কিনে থাকে। এতে বিনিয়োগ মূল্য বেড়ে যায়, আবার কমেও।

এদিকে ব্যাংকগুলোতে ডলারের উদ্বৃত্ত হলে তা কিনে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক, আর সংকট হলে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে। ডলারের সংকট হওয়ায় গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭৬২ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। গত ৩০ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করে ৯৩ টাকা ৪৫ পয়সা দরে। এখন বিক্রি করছে ৯৫ টাকা।

সব মিলিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার পুনর্মূল্যায়ন থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৬ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা মুনাফা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগের বছরে মুনাফা দেখিয়েছিল ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে যা ছিল মাত্র ৪২৭ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার পুনর্মূল্যায়ন থেকে মুনাফা ছিল ১ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা।

আরো পড়ুন: বিদেশগামী ও ফেরত যাত্রীরা যত ডলার সাথে রাখতে পারবে

ঢাকা/এসএ