০৬:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

শ্রীলঙ্কা নিজেদের ঋণ খেলাপি হিসেবে ঘোষণা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২
  • / ৪১৪৫ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বিজনেস জার্নাল ডেস্ক: আর্থিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ তলানিতে ঠেকায় ৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে দেশটি। এর মধ্যে দিয়ে শ্রীলঙ্কা নিজেকে ঋণ খেলাপি হিসেবে ঘোষণা দিল।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এক বিবৃতিতে শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, যেসব বিদেশি সরকার ও সংস্থা বিভিন্ন সময় শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছে, তারা চাইলে আজ থেকে সে ঋণকে ক্যাপিটালাইজ করতে পারে। অর্থাৎ প্রাপ্য সুদের পরিমাণকে মূলধনের সঙ্গে যোগ করে দিতে পারে অথবা ঋণের অর্থ শ্রীলঙ্কান রুপিতে পরিশোধের বিকল্প বেছে নিতে পারে।   

জরুরি ভিত্তিতে পণ্য আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শেষ হয়ে আসায় এই উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে দেশটির সরকার। এই উদ্যোগকে ‘শেষ ভরসা’ হিসেবে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয়। যাতে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরও অবনতি না হয়। 

এদিকে, ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া দেশটির অর্থমন্ত্রী আলী সাবরি জানিয়েছে জরুরি ভিত্তিতে তিন বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ দরকার শ্রীলঙ্কার। গত শনিবার (৯ এপ্রিল) রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তেল, বিদ্যুৎ, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ স্বাভাবিক করতে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই অর্থ প্রয়োজন। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বসব। আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। 

তিনি জানায়, সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং বিশ্বব্যাংক থেকেও সহায়তা চাইবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং মধ্যপ্রাচ্যকেও পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সহায়তা চাওয়া হবে। এছাড়া জ্বালানির জন্য ভারতের কাছ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চাইবে শ্রীলঙ্কা। যা দিয়ে প্রায় পাঁচ সপ্তাহ চলা যাবে। 

শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড পুনর্গঠন করতে চায় জানিয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, জুলাই মাসে বন্ডের এক বিলিয়ন ঋণ শোধের উপর একটি স্থগিতাদেশ চাইবে দেশটি। এ জন্য বন্ডহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় সরকার। 

এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী দল এনপিপির এমপি অনুরা কুমারা দিশানায়েকে বলেছেন, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ছাড়া প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার হাতে আর মাত্র একটিই পথ রয়েছে। তা হলো পদত্যাগ করা। এটি ছাড়া আর কোনো প্রস্তাব মানতে আমরা রাজি নই। দেশের জনগণও এখন প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চায়। তারা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। 

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। চলমান সংকট সামাল দিতে শ্রীলঙ্কায় সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্যের সবাই ইতোমধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে। পদত্যাগ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও। এদিকে ধারাবাহিকভাবে দরপতন হওয়ায় দেশটির শেয়ারবাজারের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে গোতাবায়া রাজাপাকসে।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

শ্রীলঙ্কা নিজেদের ঋণ খেলাপি হিসেবে ঘোষণা

আপডেট: ০৪:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২

বিজনেস জার্নাল ডেস্ক: আর্থিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ তলানিতে ঠেকায় ৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে দেশটি। এর মধ্যে দিয়ে শ্রীলঙ্কা নিজেকে ঋণ খেলাপি হিসেবে ঘোষণা দিল।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এক বিবৃতিতে শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, যেসব বিদেশি সরকার ও সংস্থা বিভিন্ন সময় শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছে, তারা চাইলে আজ থেকে সে ঋণকে ক্যাপিটালাইজ করতে পারে। অর্থাৎ প্রাপ্য সুদের পরিমাণকে মূলধনের সঙ্গে যোগ করে দিতে পারে অথবা ঋণের অর্থ শ্রীলঙ্কান রুপিতে পরিশোধের বিকল্প বেছে নিতে পারে।   

জরুরি ভিত্তিতে পণ্য আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শেষ হয়ে আসায় এই উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে দেশটির সরকার। এই উদ্যোগকে ‘শেষ ভরসা’ হিসেবে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয়। যাতে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরও অবনতি না হয়। 

এদিকে, ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া দেশটির অর্থমন্ত্রী আলী সাবরি জানিয়েছে জরুরি ভিত্তিতে তিন বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ দরকার শ্রীলঙ্কার। গত শনিবার (৯ এপ্রিল) রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তেল, বিদ্যুৎ, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ স্বাভাবিক করতে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই অর্থ প্রয়োজন। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বসব। আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। 

তিনি জানায়, সরকার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এবং বিশ্বব্যাংক থেকেও সহায়তা চাইবে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং মধ্যপ্রাচ্যকেও পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সহায়তা চাওয়া হবে। এছাড়া জ্বালানির জন্য ভারতের কাছ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চাইবে শ্রীলঙ্কা। যা দিয়ে প্রায় পাঁচ সপ্তাহ চলা যাবে। 

শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড পুনর্গঠন করতে চায় জানিয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, জুলাই মাসে বন্ডের এক বিলিয়ন ঋণ শোধের উপর একটি স্থগিতাদেশ চাইবে দেশটি। এ জন্য বন্ডহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় সরকার। 

এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী দল এনপিপির এমপি অনুরা কুমারা দিশানায়েকে বলেছেন, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ছাড়া প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার হাতে আর মাত্র একটিই পথ রয়েছে। তা হলো পদত্যাগ করা। এটি ছাড়া আর কোনো প্রস্তাব মানতে আমরা রাজি নই। দেশের জনগণও এখন প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চায়। তারা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। 

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। চলমান সংকট সামাল দিতে শ্রীলঙ্কায় সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্যের সবাই ইতোমধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে। পদত্যাগ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরও। এদিকে ধারাবাহিকভাবে দরপতন হওয়ায় দেশটির শেয়ারবাজারের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে গোতাবায়া রাজাপাকসে।

ঢাকা/এসএ