০৯:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

যে কারণে একবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন: বাইডেন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:১৫:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪১৪০ বার দেখা হয়েছে

পৃথিবীর অন্য অনেক মানুষের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও একবার আত্মহত্যা করেতে চেয়েছিলেন। বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক হাওয়ার্ড স্টার্নকে সম্প্রতি দেওয়া এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাইডেন বলেন, ‘আমার প্রথম স্ত্রী নিহত হওয়ার মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। সারাক্ষণ বিষন্ন থাকতাম। এক রাতে মদ্যপ অবস্থায় আমার মনে হলো এই জীবনের কোনো অর্থ নেই। এ কথা মনে হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ডেলাওয়্যার মেমোরিয়াল ব্রিজের উদ্দেশে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ইচ্ছে ছিল ব্রিজের ওপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করব।’

‘কিন্তু ব্রিজে পৌঁছানোর পর হঠাৎ আমার মনে হলো, আমার দু’টি ছোটো সন্তান আছে। যদি আমি আত্মহত্যা করি, তাহলে তাদের দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না। সন্তানদের মুখ চোখের সামনে ফেসে ওঠামাত্র আমি আবার বাড়ি ফিরে এলাম।’

১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর জন্ম নেওয়া বাইডেন আইনজীবী হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে প্রথমবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিলো নেইলিয়া হান্টার। এই দম্পতির তিন সন্তান ছিল— জোসেফ আর. বিউ বাইডেন, রবার্ট হান্টার বাইডেন এবং নাওমি ক্রিস্টিনা অ্যামি বাইডেন।

১৯৭২ সালে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন নেইলিয়া এবং তাদের কন্যাসন্তান অ্যামি। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে বিউ এবং হান্টারও ছিলেন, তবে তাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় বেঁচে যান তারা।

কাকতালীয়ভাবে ওই বছরই মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বাইডেনই সবচেয়ে কম বয়সে সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ডটি এখনও বাইডেনের অধিকারে। মাত্র ৩০ বছর বয়সে সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

‘আসলে আমার মনে হয়, প্রত্যেক মানুষের জীবনেই এমন মুহূর্ত আসে, যখন তার আত্মহত্যা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে। কিন্তু ওই সময়টায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং বলতে হয়, আত্মহত্যা হলো সবচেয়ে বোকামিপূর্ণ কাজ।’

সাক্ষাৎকারে বাইডেন জানান, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দুই ছেলে বিউ এবং হান্টারকে একাই বড় করেছেন তিনি। পাশাপাশি সিনেটর হিসেবে রাজনৈতিক দায়িত্বও পালন করেছেন। পরে ১৯৭৮ সালে জিল ট্রেসি জ্যাকবকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর তার নাম হয় জিল বাইডেন।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে ভর্তি সৌদি বাদশাহ

বাইডেন জানান, সিনেটের সদস্য হওয়ার আগে একবার কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য কারাগারেও যেতে হয়েছিল তাকে।

সাক্ষাৎকারে হাওয়ার্ড স্টার্ন তাকে শৈশবের কোনো স্মৃতিচারণের অনুরোধ জানালে বাইডেন বলেন, ‘আমি ছোটোবেলায় কিছুটা তোতলা ছিলাম। আমার বয়স যখন আট কিংবা নয়, একদিন গির্জায় একজন নান আমার তোতলামি নিয়ে আমার সঙ্গে ঠাট্টা করছিল। আমার মায়ের চোখে তা পড়তেই তিনি আমার দিকে ছুটে আসেন এবং ওই নানকে রীতিমত কঠোর স্বরে বলেন, ‘যদি তুমি এরপর কখনও আমার ছেলের সঙ্গে এমন ঠাট্টা করো, তাহলে তোমার মাথার কাপড় আমি টেনে ছুড়ে ফেলে দেবো, বুঝেছো?’

নিজের পূর্বসূরি আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প আসলে আমার সঙ্গে মজা করে, কিন্তু মুখোমুখি লড়াই করতে ভয় পায়।’ সূত্র: ইউএস উইকলি, হিন্দুস্তান টাইমস

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x

যে কারণে একবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন: বাইডেন

আপডেট: ০৬:১৫:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পৃথিবীর অন্য অনেক মানুষের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও একবার আত্মহত্যা করেতে চেয়েছিলেন। বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক হাওয়ার্ড স্টার্নকে সম্প্রতি দেওয়া এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাইডেন বলেন, ‘আমার প্রথম স্ত্রী নিহত হওয়ার মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। সারাক্ষণ বিষন্ন থাকতাম। এক রাতে মদ্যপ অবস্থায় আমার মনে হলো এই জীবনের কোনো অর্থ নেই। এ কথা মনে হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ডেলাওয়্যার মেমোরিয়াল ব্রিজের উদ্দেশে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। ইচ্ছে ছিল ব্রিজের ওপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করব।’

‘কিন্তু ব্রিজে পৌঁছানোর পর হঠাৎ আমার মনে হলো, আমার দু’টি ছোটো সন্তান আছে। যদি আমি আত্মহত্যা করি, তাহলে তাদের দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না। সন্তানদের মুখ চোখের সামনে ফেসে ওঠামাত্র আমি আবার বাড়ি ফিরে এলাম।’

১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর জন্ম নেওয়া বাইডেন আইনজীবী হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে প্রথমবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিলো নেইলিয়া হান্টার। এই দম্পতির তিন সন্তান ছিল— জোসেফ আর. বিউ বাইডেন, রবার্ট হান্টার বাইডেন এবং নাওমি ক্রিস্টিনা অ্যামি বাইডেন।

১৯৭২ সালে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন নেইলিয়া এবং তাদের কন্যাসন্তান অ্যামি। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে বিউ এবং হান্টারও ছিলেন, তবে তাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় বেঁচে যান তারা।

কাকতালীয়ভাবে ওই বছরই মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বাইডেনই সবচেয়ে কম বয়সে সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ডটি এখনও বাইডেনের অধিকারে। মাত্র ৩০ বছর বয়সে সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

‘আসলে আমার মনে হয়, প্রত্যেক মানুষের জীবনেই এমন মুহূর্ত আসে, যখন তার আত্মহত্যা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে। কিন্তু ওই সময়টায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং বলতে হয়, আত্মহত্যা হলো সবচেয়ে বোকামিপূর্ণ কাজ।’

সাক্ষাৎকারে বাইডেন জানান, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দুই ছেলে বিউ এবং হান্টারকে একাই বড় করেছেন তিনি। পাশাপাশি সিনেটর হিসেবে রাজনৈতিক দায়িত্বও পালন করেছেন। পরে ১৯৭৮ সালে জিল ট্রেসি জ্যাকবকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর তার নাম হয় জিল বাইডেন।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে ভর্তি সৌদি বাদশাহ

বাইডেন জানান, সিনেটের সদস্য হওয়ার আগে একবার কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য কারাগারেও যেতে হয়েছিল তাকে।

সাক্ষাৎকারে হাওয়ার্ড স্টার্ন তাকে শৈশবের কোনো স্মৃতিচারণের অনুরোধ জানালে বাইডেন বলেন, ‘আমি ছোটোবেলায় কিছুটা তোতলা ছিলাম। আমার বয়স যখন আট কিংবা নয়, একদিন গির্জায় একজন নান আমার তোতলামি নিয়ে আমার সঙ্গে ঠাট্টা করছিল। আমার মায়ের চোখে তা পড়তেই তিনি আমার দিকে ছুটে আসেন এবং ওই নানকে রীতিমত কঠোর স্বরে বলেন, ‘যদি তুমি এরপর কখনও আমার ছেলের সঙ্গে এমন ঠাট্টা করো, তাহলে তোমার মাথার কাপড় আমি টেনে ছুড়ে ফেলে দেবো, বুঝেছো?’

নিজের পূর্বসূরি আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প আসলে আমার সঙ্গে মজা করে, কিন্তু মুখোমুখি লড়াই করতে ভয় পায়।’ সূত্র: ইউএস উইকলি, হিন্দুস্তান টাইমস

ঢাকা/এসএইচ