ইসির খসড়া আচরণবিধি
নির্বাচনে প্রচারের ক্ষেত্রে পোস্টার বাদ দেওয়ার প্রস্তাব

- আপডেট: ০৫:৩২:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
- / ১০৩০৯ বার দেখা হয়েছে
নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধি সংশোধন করে খসড়া অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা ও করণীয় নানা বিষয় পরিবর্তন করেছে ইসি। খসড়ায় নির্বাচনী প্রচারে প্রার্থীদের পোস্টার বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া এতে দলীয় অঙ্গীকারনামা, এক প্ল্যাটফর্মে সব প্রার্থীর ইশতেহার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়াকড়ি এবং জরিমানা তিন গুণ বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকার বিধান রাখা হয়েছে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সভাকক্ষে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিলবোর্ডের ব্যবহার অতীতে ছিল না। এটাকে ইন (অন্তর্ভুক্ত) করা হচ্ছে। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আমরাও নির্বাচনে পোস্টার ব্যবহার বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। ব্যানার, ফেস্টুন, প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ইত্যাদি নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।’
আবুল ফজল বলেন, গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল করার আরপিও–এর ধারা ৯১ (ঙ) আচরণবিধিতে সন্নিবেশিত করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো, রেস্ট হাউস ব্যবহারের ওপরে কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রার্থীরা এখন এসব সুযোগ-সুবিধা অবাধে গ্রহণ করতে পারবেন না।
খসড়া আচরণবিধিতে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিও যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারের ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারে মাইকের শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবলের মধ্যে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নির্বাচন কমশিনার আবুল ফজল বলেন, ‘এ ছাড়া ভোটার স্লিপ প্রণয়নের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। টি-শার্ট, জ্যাকেট ইত্যাদির ব্যাপারে যে অতীতে বিধিনিষেধ ছিল, সেটার ব্যাপারে একটু শিথিল মনোভাব পোষণ করা হয়েছে। আর্মসের সংজ্ঞার মধ্যে দেশীয় অস্ত্রও যুক্ত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপরে বিশদভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ডিফাইন করা হয়েছে।’
নির্বাচনী প্রচারের সময় তিন সপ্তাহই থাকবে উল্লেখ করে আবুল ফজল আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব প্রার্থী সভাপতি বা সদস্য হিসেবে পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন বা মনোনীত হয়েছেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাঁদেরকে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পরে সেখান থেকে পদত্যাগ করতে হবে।
আচরণবিধিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে কোনো ধরনের বৈদেশিক বিনিয়োগ ‘না’ করা হয়েছে। এতে অভিন্নভাবে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে সব প্রার্থী যাতে ইশতেহার ঘোষণা করতে পারেন বা করেন, সেটির বিধান করা হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমের সংলাপে অংশগ্রহণ এবং আয়োজনে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির ঘোষণা আসছে
খসড়ায় আচরণবিধি ভঙ্গ করলে আগের তুলনায় জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিধিমালা লঙ্ঘনে ৬ মাস কারাদণ্ড এবং জরিমানা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় লাখ টাকা করা হয়েছে। এটি সংস্কার কমিশনের একটা প্রস্তাব ছিল। আর প্রার্থী ও দলের জন্য অঙ্গীকারনামা নতুনভাবে সংযোজিত করা হয়েছে এই বিধিমালা মেনে চলার ব্যাপারে।
খসড়া আচরণবিধিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তদারকিসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব রয়েছে ।
সংসদ নির্বাচনের আগে সীমানা নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা থাকায় ৩০০ আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশ করেছে ইসি। এ খসড়া প্রস্তাবের ওপর দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত ১২ মে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে সরকার। এখন পর্যন্ত সংসদের ৭৫টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য ৬০৭টি আবেদন পেয়েছে ইসি।
বিজনেস জার্নাল/টিএ