১০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

‘মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আগ্রহ বাড়াতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ’

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:৩৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১০৮৪৪ বার দেখা হয়েছে

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে হেড অব ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট এবং মতিঝিল ব্রাঞ্চ ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত আছেন কাজী আরিফ মাহমুদ ইকবাল তিনি বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রাতিষ্ঠানিক এবং একক বিনিয়োগকারীদের তহবিল সংগ্রহ, বিক্রয় এবং বিনিয়োগ সেবা প্রদান করে যাচ্ছেনতিনি প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন এর আগে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং বিল্ডিং ফর ফিউচার লিমিটেডে বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগসহ সামগ্রিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিজনেস জার্নাল-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হলো

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিজনেস জার্নাল: মিউচুয়াল ফান্ডের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে পাঠকদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন।

কাজী আরিফ: প্রাতিষ্ঠানিক  এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ নিয়ে সমন্বিত ফান্ড তৈরি করা হয়, এটাকেই মিউচ্যুয়াল ফান্ড বলে। ফান্ড ম্যানেজমেন্ট টিম রিসার্চের মাধ্যমে ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে থাকে। সেটা ক্যাপিটাল মার্কেটেও হতে পারে, আবার মানি মার্কেটেও হতে পারে। এসব জায়গায় বিনিয়োগ করে যে রিটার্ন আসে, সেটা বিনিয়োগকারীদের মাঝেই বিতরণ করা হয়।

বিজনেস জার্নাল: মিউচ্যুয়াল ফান্ড মূলত কত প্রকার হয়ে থাকে?

কাজী আরিফ: মিউচ্যুয়াল ফান্ড মূলত দুই প্রকার হয়ে থাকে। ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং ক্লোজড এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ক্লোজড এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়। আর ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারে লেনদেন হয় না। বিনিয়োগকারীরা ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর ইউনিট সরাসরি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছ থেকে কিনে থাকেন। বিনিয়োগকারীরা যদি ইউনিটগুলো বিক্রি করতে চান সেক্ষেত্রে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছেই বিক্রি করতে হয়।

বিজনেস জার্নাল: বর্তমানে আপনারা কি ধরনের মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করছেন? এখান থেকে বিনিয়োগকারীরা কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন?

কাজী আরিফ: শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করছেন। ফান্ডগুলো হচ্ছে- শান্তা ফার্স্ট ইনকাম ইউনিট ফান্ড, শান্তা আমানাহ্ শরিয়াহ্ ফান্ড ও শান্তা ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। এসব ফান্ডের প্রত্যাশিত রিটার্ন বছরে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ, যদি বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদের জন্য বিনিয়োগ করেন। তারা লভ্যাংশ আকারে ও ক্যাপিটাল গেইনের মাধ্যমে মুনাফা পাচ্ছেন। বর্তমানে শান্তা ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের বেশ চাহিদা রয়েছে। এই ফান্ড দিয়ে আমরা সরকারি ট্রেজারি বিল, বন্ড, এফডিআরে বিনিয়োগ করে থাকি। আমদের শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে একটা প্রফেশনাল টিম রয়েছে। আমাদের ফান্ডে বিনিয়োগ করে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন- আকর্ষনীয় এক্সপেক্টেড রিটার্ন, তারল্য সুবিধা, ট্যাক্স বেনিফিট, সহজলভ্যতা ও আইপিও সুবিধা। আমাদের রিলেশনশীপ ম্যানেজাররা কায়েন্টদের মুনাফা প্রত্যাশা, রিস্ক টেকিং ক্যাপাসিটি এবং বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের বিনিয়োগ পরামর্শ দিয়ে থাকি।

মানুষ পুঁজিবাজারের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী। কিন্তু তাদের মধ্যে এ ব্যাপারে ভয়ও কাজ করে। এখানে ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সুবিধাটা হচ্ছে- প্রফেশনাল একটি টিম ফান্ড ম্যানেজ করে। এখানে  বিনিয়োগকারীরা স্কিলড প্রফেশনালদের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারছে।

বিজনেস জার্নাল: আগামীতে আপনারা ক্লোজড এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করবেন কি-না?

কাজী আরিফ:  আপতত আমরা ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়েই কাজ করছি। ভবিষ্যতে গ্রাহকদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন নতুন প্রডাক্ট ডিজাইন করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ নীতিমালায় পরিবর্তন

বিজনেস জার্নাল: বিনিয়োগকারীদের মাঝে মিউচ্যুয়াল ফান্ড সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কি ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

কাজী আরিফ: আমাদের দেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাইজ প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার। উন্নত দেশে এমনটি আমাদের পার্শবর্তী দেশেও এই ইন্ডাস্ট্রির  সাইজ আমাদের থেকে অনেক বেশি। মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বেনিফিট যদি বিনিয়োগকারীদের দিতে হয়, তাহলে প্রচারণা দরকার। এওয়ারনেস ক্রিয়েট করা দরকার যে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের আরেকটা মাধ্যম হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই আমরা অল্প কিছু প্রোডাক্টের সাথে বেশি পরিচিত। যেমন এফডিআর, সঞ্চয়পত্রের সাথে আমরা বেশি পরিচিত।

কিন্তু মিউচ্যুয়াল ফান্ডেও যে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, এখানে বিনিয়োগে কি কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকতে পারে, সেসব ব্যাপারে আমরা আসলে অতোটা জানি না। আমরা যারা এই মার্কেট নিয়ে কাজ করছি, তাদের জন্য এই বিষয়গুলো বেশ চ্যালেঞ্জিং। এসব থেকে ‍উত্তরণের জন্য আমাদের অনেক ধরনের এক্টিভিটিস থাকে।

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট থেকে আমরা বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজে রোড শো করে থাকি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এর উপর আমরা সেশন নেই। মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে সবার কাছে জনপ্রিয় করা আমাদের লক্ষ্য যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সব অ্যাসেট মেনেজমেন্ট কোম্পানি এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেন, তবে সেটি আরও ভালো হবে। তখন আরও বেশি মানুষ এ সম্পর্কে জানতে পারবেন। বিনিয়োগ শিক্ষার মাধ্যমেও এর প্রচারণা চালানো যেতে পারে। সমন্বিত উদ্যোগ এখানে কার্যকরি ভূমিকা নিতে পারে।

বিজনেস জার্নাল: আপনাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করতে চান তাদেরকে কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা আপনারা দেবেন?

কাজী আরিফ: গ্রাহকের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই আমরা বিভিন্ন মিউচ্যুয়াল ফান্ড অফার করেছি। আমাদের চমৎকার কিছু বিনিয়োগ ভ্যায়িক্যাল রয়েছে। যেমন- সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি) রয়েছে। এর মাধ্যমে একজন বিনিযোগকারী প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অ্যামাউন্টের বিনিময়ে আমাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট কিনতে পারেন। এই বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদি হলে আরও বেশি ফ্রুটফুল হয়। অনেক চাকরিজীবি মানুষ রয়েছেন, স্যালারি বেজড,  এটা তাদের জন্য খুবই সহায়ক ও প্রয়োজনীয়। এতে করে তাদের সঞ্চয় ও বিনিয়োগের অভ্যাস তৈরি হয়।

বিজনেস জার্নাল: এই সেক্টরের বিস্তারের জন্য কি কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে?

কাজী আরিফ: এই সেক্টরের বিস্তারের জন্য প্রথমেই যেটি দরকার তা হলো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রচার এবং আস্থা তৈরি করা। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যত বেশি ট্রান্সপারেন্ট হবে, প্রত্যাশা অনুযায়ী রিটার্ন এবং মানসম্পন্ন গ্রাহক সেবা দিতে পারবে ততেই বিনিয়োগকারীদের মাঝে আগ্রহ বাড়বে। তাহলে এই সেক্টরের আকারও বেড়ে যাবে।

বিজনেস জার্নাল: আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আপনাদের অ্যাসেট মেনেজমেন্টকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান?

আমাদের একটা ভিশন রয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে রিলায়েবল ফান্ড ম্যানেজার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা। আমরা যখন আমাদের গ্রাহকদের প্রত্যাশাগুলো পুরোপুরি পূরণ করতে পারবো, কেবল তখনই আমরা এই পর্যায়ে যেতে পারবো। কর্পোরেট গভর্নেসের প্রাকটিস আমরা অতিতেও করেছি ভবিষ্যতেও করবো। আমাদের ফান্ড ম্যানেজমেন্ট, ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, অপারেশন্সসহ সবগুলো টিম যথেষ্ট স্কিলড। ক্লায়েন্টকে কেন্দ্র করেই তারা কর্ম পরিকল্পনা করে থাকেন। আশা করি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো।

বিজনেস জার্নাল: পাঠক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য বিজনেস জার্নালকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

কাজী আরিফ: আপনাকেও ধন্যবাদ।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

x

‘মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আগ্রহ বাড়াতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ’

আপডেট: ০৫:৩৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে হেড অব ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট এবং মতিঝিল ব্রাঞ্চ ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত আছেন কাজী আরিফ মাহমুদ ইকবাল তিনি বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রাতিষ্ঠানিক এবং একক বিনিয়োগকারীদের তহবিল সংগ্রহ, বিক্রয় এবং বিনিয়োগ সেবা প্রদান করে যাচ্ছেনতিনি প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন এর আগে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং বিল্ডিং ফর ফিউচার লিমিটেডে বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগসহ সামগ্রিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিজনেস জার্নাল-এর মুখোমুখি হয়েছিলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হলো

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিজনেস জার্নাল: মিউচুয়াল ফান্ডের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে পাঠকদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন।

কাজী আরিফ: প্রাতিষ্ঠানিক  এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ নিয়ে সমন্বিত ফান্ড তৈরি করা হয়, এটাকেই মিউচ্যুয়াল ফান্ড বলে। ফান্ড ম্যানেজমেন্ট টিম রিসার্চের মাধ্যমে ফিন্যান্সিয়াল সেক্টরের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে থাকে। সেটা ক্যাপিটাল মার্কেটেও হতে পারে, আবার মানি মার্কেটেও হতে পারে। এসব জায়গায় বিনিয়োগ করে যে রিটার্ন আসে, সেটা বিনিয়োগকারীদের মাঝেই বিতরণ করা হয়।

বিজনেস জার্নাল: মিউচ্যুয়াল ফান্ড মূলত কত প্রকার হয়ে থাকে?

কাজী আরিফ: মিউচ্যুয়াল ফান্ড মূলত দুই প্রকার হয়ে থাকে। ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং ক্লোজড এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ক্লোজড এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়। আর ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুঁজিবাজারে লেনদেন হয় না। বিনিয়োগকারীরা ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর ইউনিট সরাসরি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছ থেকে কিনে থাকেন। বিনিয়োগকারীরা যদি ইউনিটগুলো বিক্রি করতে চান সেক্ষেত্রে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছেই বিক্রি করতে হয়।

বিজনেস জার্নাল: বর্তমানে আপনারা কি ধরনের মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করছেন? এখান থেকে বিনিয়োগকারীরা কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন?

কাজী আরিফ: শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করছেন। ফান্ডগুলো হচ্ছে- শান্তা ফার্স্ট ইনকাম ইউনিট ফান্ড, শান্তা আমানাহ্ শরিয়াহ্ ফান্ড ও শান্তা ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। এসব ফান্ডের প্রত্যাশিত রিটার্ন বছরে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ, যদি বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদের জন্য বিনিয়োগ করেন। তারা লভ্যাংশ আকারে ও ক্যাপিটাল গেইনের মাধ্যমে মুনাফা পাচ্ছেন। বর্তমানে শান্তা ফিক্সড ইনকাম ফান্ডের বেশ চাহিদা রয়েছে। এই ফান্ড দিয়ে আমরা সরকারি ট্রেজারি বিল, বন্ড, এফডিআরে বিনিয়োগ করে থাকি। আমদের শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টে একটা প্রফেশনাল টিম রয়েছে। আমাদের ফান্ডে বিনিয়োগ করে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন- আকর্ষনীয় এক্সপেক্টেড রিটার্ন, তারল্য সুবিধা, ট্যাক্স বেনিফিট, সহজলভ্যতা ও আইপিও সুবিধা। আমাদের রিলেশনশীপ ম্যানেজাররা কায়েন্টদের মুনাফা প্রত্যাশা, রিস্ক টেকিং ক্যাপাসিটি এবং বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের বিনিয়োগ পরামর্শ দিয়ে থাকি।

মানুষ পুঁজিবাজারের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী। কিন্তু তাদের মধ্যে এ ব্যাপারে ভয়ও কাজ করে। এখানে ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সুবিধাটা হচ্ছে- প্রফেশনাল একটি টিম ফান্ড ম্যানেজ করে। এখানে  বিনিয়োগকারীরা স্কিলড প্রফেশনালদের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারছে।

বিজনেস জার্নাল: আগামীতে আপনারা ক্লোজড এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়ে কাজ করবেন কি-না?

কাজী আরিফ:  আপতত আমরা ওপেন এন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড নিয়েই কাজ করছি। ভবিষ্যতে গ্রাহকদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন নতুন প্রডাক্ট ডিজাইন করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ নীতিমালায় পরিবর্তন

বিজনেস জার্নাল: বিনিয়োগকারীদের মাঝে মিউচ্যুয়াল ফান্ড সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কি ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

কাজী আরিফ: আমাদের দেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাইজ প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার। উন্নত দেশে এমনটি আমাদের পার্শবর্তী দেশেও এই ইন্ডাস্ট্রির  সাইজ আমাদের থেকে অনেক বেশি। মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বেনিফিট যদি বিনিয়োগকারীদের দিতে হয়, তাহলে প্রচারণা দরকার। এওয়ারনেস ক্রিয়েট করা দরকার যে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিনিয়োগের আরেকটা মাধ্যম হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই আমরা অল্প কিছু প্রোডাক্টের সাথে বেশি পরিচিত। যেমন এফডিআর, সঞ্চয়পত্রের সাথে আমরা বেশি পরিচিত।

কিন্তু মিউচ্যুয়াল ফান্ডেও যে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, এখানে বিনিয়োগে কি কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকতে পারে, সেসব ব্যাপারে আমরা আসলে অতোটা জানি না। আমরা যারা এই মার্কেট নিয়ে কাজ করছি, তাদের জন্য এই বিষয়গুলো বেশ চ্যালেঞ্জিং। এসব থেকে ‍উত্তরণের জন্য আমাদের অনেক ধরনের এক্টিভিটিস থাকে।

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট থেকে আমরা বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজে রোড শো করে থাকি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এর উপর আমরা সেশন নেই। মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে সবার কাছে জনপ্রিয় করা আমাদের লক্ষ্য যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সব অ্যাসেট মেনেজমেন্ট কোম্পানি এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেন, তবে সেটি আরও ভালো হবে। তখন আরও বেশি মানুষ এ সম্পর্কে জানতে পারবেন। বিনিয়োগ শিক্ষার মাধ্যমেও এর প্রচারণা চালানো যেতে পারে। সমন্বিত উদ্যোগ এখানে কার্যকরি ভূমিকা নিতে পারে।

বিজনেস জার্নাল: আপনাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করতে চান তাদেরকে কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা আপনারা দেবেন?

কাজী আরিফ: গ্রাহকের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই আমরা বিভিন্ন মিউচ্যুয়াল ফান্ড অফার করেছি। আমাদের চমৎকার কিছু বিনিয়োগ ভ্যায়িক্যাল রয়েছে। যেমন- সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি) রয়েছে। এর মাধ্যমে একজন বিনিযোগকারী প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অ্যামাউন্টের বিনিময়ে আমাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট কিনতে পারেন। এই বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদি হলে আরও বেশি ফ্রুটফুল হয়। অনেক চাকরিজীবি মানুষ রয়েছেন, স্যালারি বেজড,  এটা তাদের জন্য খুবই সহায়ক ও প্রয়োজনীয়। এতে করে তাদের সঞ্চয় ও বিনিয়োগের অভ্যাস তৈরি হয়।

বিজনেস জার্নাল: এই সেক্টরের বিস্তারের জন্য কি কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে?

কাজী আরিফ: এই সেক্টরের বিস্তারের জন্য প্রথমেই যেটি দরকার তা হলো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রচার এবং আস্থা তৈরি করা। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যত বেশি ট্রান্সপারেন্ট হবে, প্রত্যাশা অনুযায়ী রিটার্ন এবং মানসম্পন্ন গ্রাহক সেবা দিতে পারবে ততেই বিনিয়োগকারীদের মাঝে আগ্রহ বাড়বে। তাহলে এই সেক্টরের আকারও বেড়ে যাবে।

বিজনেস জার্নাল: আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আপনাদের অ্যাসেট মেনেজমেন্টকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান?

আমাদের একটা ভিশন রয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে রিলায়েবল ফান্ড ম্যানেজার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা। আমরা যখন আমাদের গ্রাহকদের প্রত্যাশাগুলো পুরোপুরি পূরণ করতে পারবো, কেবল তখনই আমরা এই পর্যায়ে যেতে পারবো। কর্পোরেট গভর্নেসের প্রাকটিস আমরা অতিতেও করেছি ভবিষ্যতেও করবো। আমাদের ফান্ড ম্যানেজমেন্ট, ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, অপারেশন্সসহ সবগুলো টিম যথেষ্ট স্কিলড। ক্লায়েন্টকে কেন্দ্র করেই তারা কর্ম পরিকল্পনা করে থাকেন। আশা করি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো।

বিজনেস জার্নাল: পাঠক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য বিজনেস জার্নালকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

কাজী আরিফ: আপনাকেও ধন্যবাদ।

ঢাকা/টিএ