০৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আইসিইউ বেডের জন্য স্বজনদের হাহাকার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:১৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১১৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন একাধিক রোগী। দরকার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) একটি বেড। কিন্তু হাসপাতালে আইসিইউর সব বেডই রোগীতে পরিপূর্ণ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, একটি বেডের রোগী মারা গেলে তবেই আরেকজন আইসিউতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

রাজধানীর উত্তরা ৬নং সেক্টরে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের চিত্র এটি। যেন একজনের সুচিকিৎসার জন্য আরেকজনের মৃত্যুর অপেক্ষা। কঠিন এ সময়ের মধ্য দিয়ে স্বজনদের দিন পার হচ্ছে দেশের প্রথম কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালটিতে।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্বজনরা হাহাকার করছেন একটি আইসিউ বেডের জন্য। আইসিইউ বেডের জন্য মরিয়া হয়ে ছুটে চলছেন তারা, যেন কারও সঙ্গে কথা বলার সময় নেই তাদের। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা ব্যস্ত রোগীর সেবায়। পুরো আঙিনা জুড়ে সারাক্ষণই অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের আওয়াজ আর মৃত রোগীদের নিয়ে যাওয়ার ব্যস্ততা। মাঝেমধ্যেই ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। হাসপাতাল করিডোরের বাইরে রোগীর স্বজনদের অপেক্ষার প্রহর। এ সবকিছুই যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে ওই হাসপাতালে অবস্থান করা চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের কাছে।

হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত আইসিইউতে বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। কেবল চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসাসেবা দিতে সেখানে যাচ্ছেন।

কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের দায়িত্বে রয়েছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও ক্রিটিক্যাল কেয়ারের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. আসাদুজ্জামান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইসিইউর চাহিদা অনেক বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে, রাতে বেড ফাঁকা হচ্ছে সকালেই আরেকজনকে ভর্তি করাতে হচ্ছে। একজন মারা গেলে আরেকজন এসে তা পূরণ করছেন।

কবে থেকে আইসিইউ বেডের চাহিদা বেড়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইসিইউ বেডের চাহিদা বেড়েছে মার্চ থেকে। সম্প্রতি ১০টি নতুন বেড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটিতে বর্তমানে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ২৬টি। দেখা যাচ্ছে, চলতি মাস থেকে প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচজন রোগী মারা যাচ্ছেন। কিন্তু আইসিইউ বেডের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে সাত থেকে আটজনকে। এর মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইসিইউ বেডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এ চিকিৎসক মনে করেন, হাসপাতালটিতে আরও ১০টির বেশি আইসিইউ বেড দরকার। ১০টি বেড যুক্ত করা গেলে তবেই রোগীর চাপ কিছুটা সামাল দেওয়া যাবে।

হাসপাতালের কন্ট্রোল রুমে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রতিনিয়ত আইসিইউ বেডের খোঁজ করছেন স্বজনরা। কিন্তু বেড স্বল্পতার কারণে সবাইকে সেই সেবা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা/এনইউ

শেয়ার করুন

x
English Version

আইসিইউ বেডের জন্য স্বজনদের হাহাকার

আপডেট: ১০:১৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন একাধিক রোগী। দরকার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) একটি বেড। কিন্তু হাসপাতালে আইসিইউর সব বেডই রোগীতে পরিপূর্ণ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, একটি বেডের রোগী মারা গেলে তবেই আরেকজন আইসিউতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

রাজধানীর উত্তরা ৬নং সেক্টরে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের চিত্র এটি। যেন একজনের সুচিকিৎসার জন্য আরেকজনের মৃত্যুর অপেক্ষা। কঠিন এ সময়ের মধ্য দিয়ে স্বজনদের দিন পার হচ্ছে দেশের প্রথম কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালটিতে।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্বজনরা হাহাকার করছেন একটি আইসিউ বেডের জন্য। আইসিইউ বেডের জন্য মরিয়া হয়ে ছুটে চলছেন তারা, যেন কারও সঙ্গে কথা বলার সময় নেই তাদের। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা ব্যস্ত রোগীর সেবায়। পুরো আঙিনা জুড়ে সারাক্ষণই অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের আওয়াজ আর মৃত রোগীদের নিয়ে যাওয়ার ব্যস্ততা। মাঝেমধ্যেই ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। হাসপাতাল করিডোরের বাইরে রোগীর স্বজনদের অপেক্ষার প্রহর। এ সবকিছুই যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে ওই হাসপাতালে অবস্থান করা চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের কাছে।

হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত আইসিইউতে বাইরের কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। কেবল চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসাসেবা দিতে সেখানে যাচ্ছেন।

কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের দায়িত্বে রয়েছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও ক্রিটিক্যাল কেয়ারের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. আসাদুজ্জামান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আইসিইউর চাহিদা অনেক বেড়েছে। দেখা যাচ্ছে, রাতে বেড ফাঁকা হচ্ছে সকালেই আরেকজনকে ভর্তি করাতে হচ্ছে। একজন মারা গেলে আরেকজন এসে তা পূরণ করছেন।

কবে থেকে আইসিইউ বেডের চাহিদা বেড়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইসিইউ বেডের চাহিদা বেড়েছে মার্চ থেকে। সম্প্রতি ১০টি নতুন বেড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটিতে বর্তমানে আইসিইউ বেডের সংখ্যা ২৬টি। দেখা যাচ্ছে, চলতি মাস থেকে প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচজন রোগী মারা যাচ্ছেন। কিন্তু আইসিইউ বেডের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে সাত থেকে আটজনকে। এর মধ্যে যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইসিইউ বেডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এ চিকিৎসক মনে করেন, হাসপাতালটিতে আরও ১০টির বেশি আইসিইউ বেড দরকার। ১০টি বেড যুক্ত করা গেলে তবেই রোগীর চাপ কিছুটা সামাল দেওয়া যাবে।

হাসপাতালের কন্ট্রোল রুমে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুমূর্ষু অবস্থায় থাকা করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রতিনিয়ত আইসিইউ বেডের খোঁজ করছেন স্বজনরা। কিন্তু বেড স্বল্পতার কারণে সবাইকে সেই সেবা দিতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা/এনইউ