১১:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঘাত-প্রতিঘাতের বাজারে এখনও তলানীতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:০০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪২৮২ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ দীর্ঘদিনের পতনের জের ধরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর অনেক কমে গেছে। তবে সম্প্রতি বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর কারণে প্রায় সব শেয়ার ও ইউনিটদর বাড়তে দেখা গেছে। কিন্তু তারপরও এখনও তলানিতে রয়েছে অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটদর। অর্থাৎ ক্রয়যোগ্য অবস্থানে রয়েছে এসব শেয়ারদর। এর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ড ও ব্যাংক।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বর্তমানে বিনিয়োগযোগ্য শেয়ার বা ইউনিটের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড। বর্তমানে এ খাতের ইউনিটের গড় মূল্য আয় অনুপাত অবস্থান করছে দুই পয়েন্টে। মূলত ২০১০ সালে পুঁজিবাজারের ধসের পর মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটদর ক্রমেই কমতে থাকে, যার জের ধরে কমতে থাকে ফান্ডগুলোর পিই-রেশিও বা ইউনিটের মূল্য আয় অনুপাত। সম্প্রতি এ খাতের ইউনিটদর কিছুটা বাড়লেও এখনও ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে ৩১টির ইউনিটদর অভিহিত দরের নিচে রয়েছে, যার জের ধরে ফান্ডগুলোর মূল্য আয় অনুপাত নিম্ন অবস্থানে রয়েছে। নিয়মানুযায়ী এ ধরনের পিই-রেশিওধারী কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে খুব অল্প সময়ে মুনাফা করা সম্ভব।

বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে পরের অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। বর্তমানে এর পিই-রেশিও অবস্থান করছে ৭.৫০ পয়েন্টে। বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০১০ সালের ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকারীরা। কারণ ওইসব শেয়ারের দর সবচেয়ে বেশি কমে গিয়েছিল। অথচ দুটি খাতই পুঁজিবাজারের শক্তিশালী খাত। অনেক আগেই এসব শেয়ার ও ইউনিট বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে চলে এসেছে। আর সম্প্রতি পতনে দরে আরও কমে গেছে। এই অবস্থান থেকে শেয়ার ক্রয় করলে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তারা বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজার বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, শুধু ব্যাংক বা মিউচুয়াল ফান্ডেরই নয়, এখন পুঁজিবাজারে বেশিরভাগ শেয়ারই ক্রয়যোগ্য অবস্থানে রয়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারদর অনেক কম। এখান থেকে দেখেশুনে বিনিয়োগ করলে ইনভেস্টরদের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাদের বিনিয়োগ করতে হবে ধৈর্য ধারণ করে। দ্রুত মুনাফা তুলব-তাদের এমন প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

এদিকে সিংহভাগ শেয়ার বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে থাকলেও গড় হিসাবে ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে কাগজ ও প্রকাশনা এবং বিবিধ খাতে। বর্তমানে কাগজ ও প্রকাশনা খাতের পিই-রেশিও ৬৬ দশমিক শূন্য চার পয়েন্টে এবং বিবিধ খাতের পিই-রেশিও অবস্থান করছে ৫০ দশমিক ২০ পয়েন্টে।

অন্যদিকে বর্তমানে ডিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার এবং ইউনিটের মূল্য আয় অনুপাত ১৬ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১৪ দশমিক ৬২ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ২৪ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৭ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ১৮ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে, বিমা খাতের ২০ দশমিক ১৯ পয়েন্টে এবং খাদ্য খাতের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ১২ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। একইভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, সিমেন্ট খাতের ৪১ দশমিক শূন্য ছয় পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ৪৭ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতের ১৩ দশমিক ১২ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ১৫ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে এবং সিরামিক খাতের ২৭ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ১৫-এর নিচে থাকলে তাকে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ বলে অ্যাখায়িত করা হয়। এটি ২০-এর ওপরে গেলে ওই কোম্পানির শেয়ার ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর ৪০-এর ওপরে পিই-রেশিও গেলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ওই শেয়ারে মার্জিন সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়।

সংবাদ সূত্রঃ শেয়ার বিজ

শেয়ার করুন

x
English Version

ঘাত-প্রতিঘাতের বাজারে এখনও তলানীতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর

আপডেট: ০৪:০০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ দীর্ঘদিনের পতনের জের ধরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর অনেক কমে গেছে। তবে সম্প্রতি বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর কারণে প্রায় সব শেয়ার ও ইউনিটদর বাড়তে দেখা গেছে। কিন্তু তারপরও এখনও তলানিতে রয়েছে অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটদর। অর্থাৎ ক্রয়যোগ্য অবস্থানে রয়েছে এসব শেয়ারদর। এর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ড ও ব্যাংক।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বর্তমানে বিনিয়োগযোগ্য শেয়ার বা ইউনিটের মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড। বর্তমানে এ খাতের ইউনিটের গড় মূল্য আয় অনুপাত অবস্থান করছে দুই পয়েন্টে। মূলত ২০১০ সালে পুঁজিবাজারের ধসের পর মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটদর ক্রমেই কমতে থাকে, যার জের ধরে কমতে থাকে ফান্ডগুলোর পিই-রেশিও বা ইউনিটের মূল্য আয় অনুপাত। সম্প্রতি এ খাতের ইউনিটদর কিছুটা বাড়লেও এখনও ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে ৩১টির ইউনিটদর অভিহিত দরের নিচে রয়েছে, যার জের ধরে ফান্ডগুলোর মূল্য আয় অনুপাত নিম্ন অবস্থানে রয়েছে। নিয়মানুযায়ী এ ধরনের পিই-রেশিওধারী কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে খুব অল্প সময়ে মুনাফা করা সম্ভব।

বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে পরের অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। বর্তমানে এর পিই-রেশিও অবস্থান করছে ৭.৫০ পয়েন্টে। বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০১০ সালের ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকারীরা। কারণ ওইসব শেয়ারের দর সবচেয়ে বেশি কমে গিয়েছিল। অথচ দুটি খাতই পুঁজিবাজারের শক্তিশালী খাত। অনেক আগেই এসব শেয়ার ও ইউনিট বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে চলে এসেছে। আর সম্প্রতি পতনে দরে আরও কমে গেছে। এই অবস্থান থেকে শেয়ার ক্রয় করলে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তারা বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজার বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, শুধু ব্যাংক বা মিউচুয়াল ফান্ডেরই নয়, এখন পুঁজিবাজারে বেশিরভাগ শেয়ারই ক্রয়যোগ্য অবস্থানে রয়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারদর অনেক কম। এখান থেকে দেখেশুনে বিনিয়োগ করলে ইনভেস্টরদের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাদের বিনিয়োগ করতে হবে ধৈর্য ধারণ করে। দ্রুত মুনাফা তুলব-তাদের এমন প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

এদিকে সিংহভাগ শেয়ার বিনিয়োগযোগ্য অবস্থানে থাকলেও গড় হিসাবে ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে কাগজ ও প্রকাশনা এবং বিবিধ খাতে। বর্তমানে কাগজ ও প্রকাশনা খাতের পিই-রেশিও ৬৬ দশমিক শূন্য চার পয়েন্টে এবং বিবিধ খাতের পিই-রেশিও অবস্থান করছে ৫০ দশমিক ২০ পয়েন্টে।

অন্যদিকে বর্তমানে ডিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার এবং ইউনিটের মূল্য আয় অনুপাত ১৬ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১৪ দশমিক ৬২ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ২৪ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৭ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ১৮ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে, বিমা খাতের ২০ দশমিক ১৯ পয়েন্টে এবং খাদ্য খাতের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ১২ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। একইভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ, সিমেন্ট খাতের ৪১ দশমিক শূন্য ছয় পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ৪৭ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতের ১৩ দশমিক ১২ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ১৫ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে এবং সিরামিক খাতের ২৭ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত ১৫-এর নিচে থাকলে তাকে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ বলে অ্যাখায়িত করা হয়। এটি ২০-এর ওপরে গেলে ওই কোম্পানির শেয়ার ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর ৪০-এর ওপরে পিই-রেশিও গেলে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ওই শেয়ারে মার্জিন সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়।

সংবাদ সূত্রঃ শেয়ার বিজ