০১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ছয় বছরে ১৭২ বাংলাদেশিকে নাগরিকত্ব দিয়েছি: ভারতের মন্ত্রী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:১৪:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০
  • / ৪৪৬৪ বার দেখা হয়েছে

গত ছয় বছরে অন্তত ১৭২ বাংলাদেশিকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। একই সময়ে ভারতের প্রতিবেশী দুই দেশ পাকিস্তানের ২৮৩৮ জন ও আফগানিস্তানের ৯১৪ জনকেও নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে জানিয়েছেন মোদি সরকারের এই মন্ত্রী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানায়, রবিবার নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্মলা সীতারামণ।

অনুষ্ঠানে নির্মলা সীতারামণ বলেন, ১৯৬৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চার লাখের বেশি শ্রীলঙ্কান (তামিল) ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আগত ৫৬৬ জনের বেশি মুসলিমকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ২০১৬ থেকে ১৮ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার ১৫৯৫ জন পাকিস্তানি এবং ৩৯১ জন আফগানিস্তানের মুসলিমকেও ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে।

দেশটির পার্লামেন্টে পাস হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী তিন দেশ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে যারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, সেসব নির্যাতিতকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। তবে মুসলিমরা এই নাগরিকত্ব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

বিতর্কিত এই নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের ‘সেক্যুলার’ নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের।

মুসলমানদের দাবি, নাগরিকত্ব আইনের কারণে তারা ভারতে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে মূল্যায়িত হবেন।

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, বর্তমানে ভারতের অর্থনীতি নাজুক। বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, জিডিপি ক্রমাগত নিম্নমুখীসহ সরকারের নানামুখী ব্যর্থতা আড়াল করতেই মোদি সরকার ধর্মীয় বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে।

অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন-এর মতেও নাগরিকত্ব আইন ‘অসাংবিধানিক’। গত মাসে বেঙ্গালুরুতে ইনফোসিস সায়েন্স ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে সেন বলেন, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের উচিত এই আইন বাতিল করে দেওয়া। নাগরিকত্বের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এমন মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে কখনও ধর্মীয় ভেদাভেদের গণ্ডি কেটে দেওয়া যায় না। তার বদলে এক্ষেত্রে সত্যিই যেটা দরকার সেটা হচ্ছে, একজন কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন বা কী ধরনের নাগরিকত্ব আইন প্রয়োজন।’

অন্যদিকে নাগরিকত্ব আইন কেরালায় কার্যকর করা হবে না মর্মে একটি প্রস্তাব রাজ্য বিধানসভায় পাস হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের দাবি, এই আইন অসাংবিধানিক। আমাদের রাজ্যে গ্রিক, রোমান, আরবীয়, খ্রিস্টান, মুসলিম সব সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রে বাস করছেন। এটা আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে কখনোই নষ্ট হতে দেব না।’

শেয়ার করুন

x
English Version

ছয় বছরে ১৭২ বাংলাদেশিকে নাগরিকত্ব দিয়েছি: ভারতের মন্ত্রী

আপডেট: ১১:১৪:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০

গত ছয় বছরে অন্তত ১৭২ বাংলাদেশিকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। একই সময়ে ভারতের প্রতিবেশী দুই দেশ পাকিস্তানের ২৮৩৮ জন ও আফগানিস্তানের ৯১৪ জনকেও নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে জানিয়েছেন মোদি সরকারের এই মন্ত্রী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানায়, রবিবার নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্মলা সীতারামণ।

অনুষ্ঠানে নির্মলা সীতারামণ বলেন, ১৯৬৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চার লাখের বেশি শ্রীলঙ্কান (তামিল) ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আগত ৫৬৬ জনের বেশি মুসলিমকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ২০১৬ থেকে ১৮ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার ১৫৯৫ জন পাকিস্তানি এবং ৩৯১ জন আফগানিস্তানের মুসলিমকেও ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে।

দেশটির পার্লামেন্টে পাস হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী তিন দেশ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে যারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, সেসব নির্যাতিতকে ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। তবে মুসলিমরা এই নাগরিকত্ব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

বিতর্কিত এই নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের ‘সেক্যুলার’ নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের।

মুসলমানদের দাবি, নাগরিকত্ব আইনের কারণে তারা ভারতে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে মূল্যায়িত হবেন।

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, বর্তমানে ভারতের অর্থনীতি নাজুক। বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, জিডিপি ক্রমাগত নিম্নমুখীসহ সরকারের নানামুখী ব্যর্থতা আড়াল করতেই মোদি সরকার ধর্মীয় বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে।

অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন-এর মতেও নাগরিকত্ব আইন ‘অসাংবিধানিক’। গত মাসে বেঙ্গালুরুতে ইনফোসিস সায়েন্স ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে সেন বলেন, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের উচিত এই আইন বাতিল করে দেওয়া। নাগরিকত্বের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এমন মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে কখনও ধর্মীয় ভেদাভেদের গণ্ডি কেটে দেওয়া যায় না। তার বদলে এক্ষেত্রে সত্যিই যেটা দরকার সেটা হচ্ছে, একজন কোথায় জন্মগ্রহণ করেছেন বা কী ধরনের নাগরিকত্ব আইন প্রয়োজন।’

অন্যদিকে নাগরিকত্ব আইন কেরালায় কার্যকর করা হবে না মর্মে একটি প্রস্তাব রাজ্য বিধানসভায় পাস হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের দাবি, এই আইন অসাংবিধানিক। আমাদের রাজ্যে গ্রিক, রোমান, আরবীয়, খ্রিস্টান, মুসলিম সব সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রে বাস করছেন। এটা আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে কখনোই নষ্ট হতে দেব না।’