দান–সদকার গুরুত্ব ও ফজিলত
- আপডেট: ০৩:৩৯:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২১
- / ৪৩৯০ বার দেখা হয়েছে
দান-খয়রাত ও সদকা-জাকাত ইসলামে বিধিবদ্ধ ইবাদত। মহাগ্রন্থ আল–কোরআনে দানের কথাটি সালাত বা নামাজের মতোই বিরাশিবার উল্লেখ হয়েছে। ‘জাকাত’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে বত্রিশবার, নামাজের সঙ্গে কোরআন মাজিদে আছে ছাব্বিশবার; স্বতন্ত্রভাবে কোরআন কারিমে আছে চারবার; পবিত্রতা অর্থে রয়েছে দুবার। জাকাত কখনো ‘সদাকাহ’ এবং কখনো ‘ইনফাক’ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইনফাক শব্দটি ব্যাপক, সদাকাহ শব্দটি সাধারণ ও জাকাত শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও হয়েছে, অর্থাৎ এ তিনটি শব্দ একে অন্যের স্থলে ব্যবহার হয়েছে।
দানের প্রাথমিক সুনির্দিষ্ট খাতগুলো কোরআন কারিমে উল্লেখ হয়েছে এভাবে, ‘মূলত সদাকাত হলো ফকির, মিসকিন, জাকাতকর্মী ১ (খলিফা কর্তৃক নিযুক্ত জাকাত ব্যবস্থাপনায় কর্মরত ব্যক্তির মজুরি), অনুরক্ত ব্যক্তি, ক্রীতদাস, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদ (মানবতা, মানবাধিকার ও মানবসভ্যতার সুরক্ষার জন্য) ও বিপদগ্রস্ত বিদেশি মুসাফিরের জন্য। এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও পরম কৌশলী।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ৬০)।
কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এমন অভাবী লোক, যারা আল্লাহর পথে (ইবাদত ও মানবকল্যাণে) নিজেদের নিয়োজিত রাখার কারণে (উপার্জনের জন্য) দুনিয়া চষে বেড়াতে পারে না। সম্ভ্রান্ততার কারণে অনভিজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবহীন মনে করে। আপনি তাদের চিহ্ন দেখে চিনতে পারবেন। তারা মানুষের কাছে নির্লজ্জভাবে ভিক্ষা করে না। আর তোমরা যেকোনো ভালো জিনিস ব্যয় করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সে বিষয়ে অবগত আছেন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৭৩)।
অনেকে নিজেদের জন্য দামি দামি পোশাক–আশাক কিনে থাকেন। নিজের জন্য কিনুন, আপনজনকে হাদিয়া দিন। কেউ হাদিয়া বা উপহার দিলে তা সাদরে গ্রহণ করুন, তা যতই সামান্য হোক না কেন। উপহারদাতাকে উপহার দিয়ে সম্মানিত করুন।
দান করে খোঁটা দিতে নেই। এতে দানের ফজিলত বিনষ্ট হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সদ্ব্যবহার, সুন্দর কথা ওই দান অপেক্ষা উত্তম, যার পেছনে আসে যন্ত্রণা। আল্লাহ তাআলা ঐশ্বর্যশালী ও পরম সহিষ্ণু। হে মুমিনগণ! তোমরা খোঁটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে তোমাদের দানকে বাতিল কোরো না। তাদের মতো যারা তাদের সম্পদ ব্যয় করে লোকদেখানোর জন্য এবং তারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৬৩-২৬৪)।
নবীজি (সা.) বলেন, ‘খোঁটাদানকারী বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (তিরমিজি)।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম