০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

নতুন দিগন্তে পুঁজিবাজার: চীনা কনসোর্টিয়ামের সাথে ডিএসই’র চুক্তি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:০০:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮
  • / ৪৪২০ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজার নতুন মাত্রায় পৌছেছে এবং মাইলফলকের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (১৪ মে) রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ডিএসইর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান, শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ওয়াং জেনজুন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সুপারভাইজারি বোর্ডের চেয়ারম্যান পেন শুয়েশিয়ান স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদসহ শেয়ারহোল্ডারগন,শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম বলেন, ২০১৫ সালে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খোজা শুরু করি। এক্ষেত্রে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্কের মাধ্যমে শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৩৯টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরমধ্যে যাছাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে নির্বাচন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ বিশ্বের চতুর্থ ও শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জ অষ্টম বৃহৎ স্টক এক্সচেঞ্জ। এরা কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে ডিএসইর প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করবে। এছাড়া নতুন পণ্যের আনয়ন ও শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
এর আগে ৩০ এপ্রিল দুপুর আড়াইটায় চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে অনুমোদন দেয় ডিএসই শেয়ারহোল্ডাররা। একইদিন বিকালে অনুমোদনের জন্য বিএসইসিতে প্রস্তাব জমা দেয় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। এরপরে ৩ মে চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, চীনের কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আজকের দিনটি শেয়ারবাজারের জন্য ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। যা শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে এর সঙ্গে জড়িত সবার জন্যই সুখবর। এই কৌশলগত বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজার এগিয়ে যাবে।

ডিএসইর পরিচালক শরীফ আতাউর রহমান বলেন, চীনা কৌশলগত বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে। তাদের টাকার অভাব নাই। শুধু বিনিয়োগের জায়গায় দরকার। যাতে শেয়ারবাজারের পাশাপাশি পুরো দেশে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে।

ডিএসইর নবনির্বাচিত পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে মাইলফলকের সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চীনের কনসোর্টিয়াম ডিএসইর প্রতিটি শেয়ারের দাম ২২ টাকা করে দর প্রস্তাব করে। তবে শর্তানুযায়ি, ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা এরইমধ্যে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা লভ্যাংশ নেওয়ায়, সমপরিমাণ দর কমে এসেছে। এক্ষেত্রে ডিএসইর মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ বা ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার প্রতিটি ২১ টাকা দামে ৯৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৬ হাজার ৬২৫ টাকায় কিনবে। পাশাপাশি ডিএসইর কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা (৩৭ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করবে। যাতে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হতে মোট ১ হাজার ২৪৬ কোটিরও বেশি টাকা পাবে ডিএসই।

শেয়ার করুন

x
English Version

নতুন দিগন্তে পুঁজিবাজার: চীনা কনসোর্টিয়ামের সাথে ডিএসই’র চুক্তি

আপডেট: ০৪:০০:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজার নতুন মাত্রায় পৌছেছে এবং মাইলফলকের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (১৪ মে) রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ডিএসইর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান, শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ওয়াং জেনজুন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সুপারভাইজারি বোর্ডের চেয়ারম্যান পেন শুয়েশিয়ান স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদসহ শেয়ারহোল্ডারগন,শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল হাশেম বলেন, ২০১৫ সালে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খোজা শুরু করি। এক্ষেত্রে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে সম্পর্কের মাধ্যমে শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৩৯টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরমধ্যে যাছাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে নির্বাচন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ বিশ্বের চতুর্থ ও শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জ অষ্টম বৃহৎ স্টক এক্সচেঞ্জ। এরা কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে ডিএসইর প্রযুক্তিগত উন্নয়ন করবে। এছাড়া নতুন পণ্যের আনয়ন ও শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।
এর আগে ৩০ এপ্রিল দুপুর আড়াইটায় চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে অনুমোদন দেয় ডিএসই শেয়ারহোল্ডাররা। একইদিন বিকালে অনুমোদনের জন্য বিএসইসিতে প্রস্তাব জমা দেয় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ। এরপরে ৩ মে চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, চীনের কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে আজকের দিনটি শেয়ারবাজারের জন্য ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। যা শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে এর সঙ্গে জড়িত সবার জন্যই সুখবর। এই কৌশলগত বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজার এগিয়ে যাবে।

ডিএসইর পরিচালক শরীফ আতাউর রহমান বলেন, চীনা কৌশলগত বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে। তাদের টাকার অভাব নাই। শুধু বিনিয়োগের জায়গায় দরকার। যাতে শেয়ারবাজারের পাশাপাশি পুরো দেশে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে।

ডিএসইর নবনির্বাচিত পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে মাইলফলকের সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসাবে চীনের কনসোর্টিয়াম ডিএসইর প্রতিটি শেয়ারের দাম ২২ টাকা করে দর প্রস্তাব করে। তবে শর্তানুযায়ি, ডিএসইর শেয়ারহোল্ডাররা এরইমধ্যে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা লভ্যাংশ নেওয়ায়, সমপরিমাণ দর কমে এসেছে। এক্ষেত্রে ডিএসইর মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ বা ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার প্রতিটি ২১ টাকা দামে ৯৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৬ হাজার ৬২৫ টাকায় কিনবে। পাশাপাশি ডিএসইর কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ৩০০ কোটিরও বেশি টাকা (৩৭ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করবে। যাতে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হতে মোট ১ হাজার ২৪৬ কোটিরও বেশি টাকা পাবে ডিএসই।