০৪:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিট মুনাফার ১ শতাংশ সিএসআরে বরাদ্দের নির্দেশ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৫৫:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১৬২ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ছবি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাংকের নিট মুনাফার ১ শতাংশ অতিরিক্ত হিসেবে করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমে বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বাজেট থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। আজ সোমবার (২৬ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি (বিআরপিডি) বিভাগ।

দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো এ সার্কুলারে বলা হয়েছে, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সংক্রমণজনিত কারণে দরিদ্রতার হার বৃদ্ধির ফলে বিপদগ্রস্ত, কর্মহীন দরিদ্র, ছিন্নমূল, দুস্থ, অসহায় জনগোষ্ঠীর নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক দায়বদ্ধতা পরিপালনের উদ্দেশ্যে তফসিলি ব্যাংকসমূহের ২০২১ সালের সিএসআর বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দের মাধ্যমে বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে।

বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ব্যাংকসমূহ ২০২০ সালের নিরীক্ষিত (হিসাব বিবরণী চূড়ান্ত না হওয়ার ক্ষেত্রে অনিরীক্ষিত) হিসাব অনুযায়ী যে পরিমাণ নিট মুনাফা অর্জন করেছে তার ১ (এক) শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ ২০২১ সালের সিএসআর খাতের বাজেটে ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসেবে বরাদ্দ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিজ নিজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। বরাদ্দকৃত অতিরিক্ত অর্থ জুন ২০২১ মাসের মধ্যে অনুচ্ছেদ ৪ এ বর্ণিত ক্ষেত্রে সিএসআর হিসেবে ব্যয় করতে হবে। সিএসআর খাতে বরাদ্দকৃত অতিরিক্ত অর্থ স্থানান্তর নিশ্চিত করে তা আগামী ১৫ মে’র মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টকে অবহিত করতে হবে।

অতিরিক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যাংকসমূহ কর্তৃক ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিন বছরে সিএসআর খাতে বরাদ্দ/ব্যয়িত অর্থের সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে।

বিশেষ সিএসআর বাজেট থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে সমাজের নিমোক্ত অংশের জন্য ব্যয় করতে হবে:

ক. সিটি করপোরেশন এলাকাসমূহের বস্তিবাসী, ছিন্নমূল এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সাময়িকভাবে বেকার হয়ে পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য।
খ. বিভিন্ন জেলার হতদরিদ্র, সাময়িক কর্মহীন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা করোনাভাইরাসজনিত রোগ বিস্তারের কারণে স্বাভাবিক জীবন-জীবিকা নির্বাহে অসমর্থ বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এমন মানুষ।

বিশেষ সিএসআর খাতে বরাদ্দের ৫০ শতাংশ অর্থ সিটি করপোরেশন এলাকাসমূহে এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ জেলা/উপজেলা/ ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যয় করতে হবে। উক্ত অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে তা যাতে কোনো বিশেষ এলাকায় কেন্দ্রীভূত না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সহায়তায় অথবা শীর্ষ পর্যায়ের এনজিও/এমএফআইসমূহের মাধ্যমে অথবা উভয় প্রকারে প্রস্তাবিত বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। উভয় ক্ষেত্রেই ব্যাংকসমূহ কর্তৃক এসব বিষয়ে পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে। জেলা প্রশাসকের সহায়তায় আলোচ্য সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুকূলে পরিচালিত হিসাব এবং এনজিও/এমএফআই’র মাধ্যমে পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এনজিও/এমএফআই’র নামে রক্ষিত হিসাবে টাকা জমা/স্থানান্তর করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রদত্ত টাকার পরিমাণ, উপকারভোগীর সংখ্যা, সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা/ইউনিয়নের নামসহ বিস্তারিত তথ্যাদি ব্যাংক কর্তৃক সংরক্ষণ করতে হবে।

বিশেষ সিএসআরের আওতায় বর্ণিত কার্যক্রমটি যথাসময়ে ও যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) সমন্বয়ক ও সহায়তাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও শীর্ষ পর্যায়ের এনজিও/এমএফআইসমূহের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এবিবির সহায়তা গ্রহণ করবে এবং এবিবি সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবে।

বর্ণিত বিশেষ সিএসআর সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে এই সংক্রান্ত বাস্তবায়ন প্রতিবেদন আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে মহাব্যবস্থাপক, সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর দাখিল করতে হবে।

এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা/জেএইচ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

নিট মুনাফার ১ শতাংশ সিএসআরে বরাদ্দের নির্দেশ

আপডেট: ০৭:৫৫:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যাংকের নিট মুনাফার ১ শতাংশ অতিরিক্ত হিসেবে করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমে বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বাজেট থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। আজ সোমবার (২৬ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি (বিআরপিডি) বিভাগ।

দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো এ সার্কুলারে বলা হয়েছে, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সংক্রমণজনিত কারণে দরিদ্রতার হার বৃদ্ধির ফলে বিপদগ্রস্ত, কর্মহীন দরিদ্র, ছিন্নমূল, দুস্থ, অসহায় জনগোষ্ঠীর নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক দায়বদ্ধতা পরিপালনের উদ্দেশ্যে তফসিলি ব্যাংকসমূহের ২০২১ সালের সিএসআর বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দের মাধ্যমে বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে।

বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ব্যাংকসমূহ ২০২০ সালের নিরীক্ষিত (হিসাব বিবরণী চূড়ান্ত না হওয়ার ক্ষেত্রে অনিরীক্ষিত) হিসাব অনুযায়ী যে পরিমাণ নিট মুনাফা অর্জন করেছে তার ১ (এক) শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ ২০২১ সালের সিএসআর খাতের বাজেটে ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসেবে বরাদ্দ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিজ নিজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। বরাদ্দকৃত অতিরিক্ত অর্থ জুন ২০২১ মাসের মধ্যে অনুচ্ছেদ ৪ এ বর্ণিত ক্ষেত্রে সিএসআর হিসেবে ব্যয় করতে হবে। সিএসআর খাতে বরাদ্দকৃত অতিরিক্ত অর্থ স্থানান্তর নিশ্চিত করে তা আগামী ১৫ মে’র মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টকে অবহিত করতে হবে।

অতিরিক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যাংকসমূহ কর্তৃক ২০২২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিন বছরে সিএসআর খাতে বরাদ্দ/ব্যয়িত অর্থের সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে।

বিশেষ সিএসআর বাজেট থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে সমাজের নিমোক্ত অংশের জন্য ব্যয় করতে হবে:

ক. সিটি করপোরেশন এলাকাসমূহের বস্তিবাসী, ছিন্নমূল এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সাময়িকভাবে বেকার হয়ে পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য।
খ. বিভিন্ন জেলার হতদরিদ্র, সাময়িক কর্মহীন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা করোনাভাইরাসজনিত রোগ বিস্তারের কারণে স্বাভাবিক জীবন-জীবিকা নির্বাহে অসমর্থ বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এমন মানুষ।

বিশেষ সিএসআর খাতে বরাদ্দের ৫০ শতাংশ অর্থ সিটি করপোরেশন এলাকাসমূহে এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ জেলা/উপজেলা/ ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যয় করতে হবে। উক্ত অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে তা যাতে কোনো বিশেষ এলাকায় কেন্দ্রীভূত না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সহায়তায় অথবা শীর্ষ পর্যায়ের এনজিও/এমএফআইসমূহের মাধ্যমে অথবা উভয় প্রকারে প্রস্তাবিত বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। উভয় ক্ষেত্রেই ব্যাংকসমূহ কর্তৃক এসব বিষয়ে পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে। জেলা প্রশাসকের সহায়তায় আলোচ্য সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুকূলে পরিচালিত হিসাব এবং এনজিও/এমএফআই’র মাধ্যমে পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এনজিও/এমএফআই’র নামে রক্ষিত হিসাবে টাকা জমা/স্থানান্তর করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রদত্ত টাকার পরিমাণ, উপকারভোগীর সংখ্যা, সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা/ইউনিয়নের নামসহ বিস্তারিত তথ্যাদি ব্যাংক কর্তৃক সংরক্ষণ করতে হবে।

বিশেষ সিএসআরের আওতায় বর্ণিত কার্যক্রমটি যথাসময়ে ও যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) সমন্বয়ক ও সহায়তাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও শীর্ষ পর্যায়ের এনজিও/এমএফআইসমূহের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এবিবির সহায়তা গ্রহণ করবে এবং এবিবি সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবে।

বর্ণিত বিশেষ সিএসআর সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে এই সংক্রান্ত বাস্তবায়ন প্রতিবেদন আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে মহাব্যবস্থাপক, সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর দাখিল করতে হবে।

এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা/জেএইচ