০৩:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪

বিলাসবহুল খাবার ক্যাভিয়ার, এর উপকারিতা জানেন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:৪৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৪১৮৪ বার দেখা হয়েছে

পৃথিবীতে নানা স্বাদের ও দামের খাবার রয়েছে। এমনকী সোনার তৈরি বার্গার, চকলেট, মিষ্টি, সুসিসহ রয়েছে নানা আজব খাবার। তবে সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে দামি খাবার স্টার্জন প্রজাতির মাছের ডিম। যা ক্যাভিয়ার নামে পরিচিত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

স্টার্জন মাছ প্রায় ২৬ প্রজাতির হলেও ক্যাভিয়ারের জন্য প্রয়োজন শুধু নারী মাছগুলো। একটি নারী স্টার্জন মাছ থেকে ক্যাভিয়ার সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ১০ থেকে ১৫ বছর। তবে একটি নারী মাছ থেকেই একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ডিম সংগ্রহ করা যায়। এই  মাছগুলো ৬ মিটার এবং ১০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এছাড়া মাছগুলো ১০০ বছরের বেশি সময়ও বেঁচে থাকতে পারে। অল্প পরিমাণে নন-আয়োডিনযুক্ত লবণ দিয়ে সংরক্ষিত এই ডিমগুলোই হচ্ছে মহামূল্যবান ক্যাভিয়ার। এই মাছগুলো শুধু কাস্পিয়ান সাগর এবং কৃষ্ণ সাগরেই পাওয়া যায়। আর ক্যাভিয়ারের ৯০ শতাংশ আসে কাম্পিয়ান সাগর থেকে। তাই মাছগুলো বিরল প্রজাতিরও বটে।

অন্যদিকে এক সময় মাছগুলো মেরে তাদের ডিম সংগ্রহ করা হতো বলে এই মাছের সংখ্যা খুবই কমে গেছে। বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে মাছবান্ধব প্রক্রিয়ায় ডিম সংগ্রহ করা হয়। মাছগুলো বিরল প্রজাতি হওয়ায় ডিম খুবই কম বৈধভাবে বিক্রি হয়। আর দিন দিন এর দাম বেড়েই চলেছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা মোটেও কমেনি।

আরও পড়ুন: সকালে দুই তিনটে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস আছে, জানেন এর উপকারিতা

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাছের প্রজাতি ভেদে ক্যাভিয়ারের আকার ও রং ভিন্ন হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে দাম ও ভিন্ন হয়ে থাকে। ক্যাভিয়ার কালো, ধূসর, হলুদ, কমলা, সবুজসহ নানা রঙের হয়ে থাকে। যা দেখতে রঙিন মুক্তার মতো। নানা ধরণের ক্যাভিয়ার থাকলেও সব থেকে দামি ক্যাভিয়ার হচ্ছে কালো বর্ণের ডিমগুলো। পুরো দেশেই রয়েছে এর চাহিদা। যা বেলুজা স্টারজিওন মাছে ডিম। বেলুজা স্টারজিওন এখন বিলুপ্ত প্রায়। এই মাছটি পরিপক্ক হতেই ২০ বছর কিংবা আরও বেশি সময় নেয়। ১ কেজি ক্যাভিয়ারের দাম প্রায় ৮ লাখ টাকা। এমনকী ৪০ হাজার ডলারেও ক্যাভিয়ার বিক্রির রেকর্ড রয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা।

বর্তমানে ক্যাভিয়ার শুধু ধনীদের খাবারের তালিকায় থাকলেও একসময় তা ছিল সাধারণ একটি খাবার। রাশিয়া থেকে আসা জেলেরা নিয়মিতই আলুর সঙ্গে খেত ক্যাভিয়ার। তবে তাদের কাছে ক্যাভিয়ার ‘রো’ নামে পরিচিত। আর ‘রো’ নামকরণ করা হয়েছিল জেলেদের নামানুসারে। বর্তমানে ক্যাভিয়ার খাওয়া হয় টোস্ট , বিস্কুট, কাটা পেয়াজ, সেদ্ধ ডিম, তাজা গুল্ম, ক্রিমসহ নানা খাবারের সঙ্গে।

রান্না করা খাবারের সঙ্গে ক্যাভিয়ার খাওয়া হলেও সেই রান্না করা খাবারগুলোর সঙ্গে ডিমগুলোকে কাচা মিশিয়েই খাওয়া হয়। তাই পরিবেশনের সময়ও বরফের বাটি বা ট্রেতে পরিবেশন করা হয়। আর সংরক্ষণ করার জন্য দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা হয়। তবে দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের জন্য শূন্য থেকে মাইনাস চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ডিমগুলো রাখা হয়।

ভারতের সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, ক্যাভিয়ার শুধু স্বাদ ও দামের জন্যই বিখ্যাত নয় বরং খাবারটিতে রয়েছে নানা উপকারিতাও। ক্যাভিয়ারে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, পটাশিয়াম, আয়রন, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়ামসহ নানা উপাদান। যা হাড়ের উন্নতি, রক্তাল্পতা প্রতিরোধ, ত্বকের মান উন্নত,মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেন হ্রাস, রক্তের কোলেস্টেরল কমানোসহ নানা উপকার করে।

সব খাবারের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি অপরিমাপিত গ্রহণে অপকারিতাও রয়েছে। ক্যাভিয়ারেও ব্যতিক্রম নয়। বিশেষ করে লাল ক্যাভিয়ার একজন সুস্থ ব্যক্তির দুই থেকে তিন চামচের বেশি খাওয়া উচিত নয়। এতে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকায় শরীর থেকে তরল অপসারণের প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে।

এছাড়া গুরুতর জটিলতাযুক্ত রোগীদের জন্য এটি ক্ষতিকারক। কেননা, ক্যাভিয়ারে বর্ধিত কোলেস্টেরল রয়েছে। তাই ক্যাভিয়ার গ্রহণে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বণ করতে হবে।

ঢাকা/এসএম

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

বিলাসবহুল খাবার ক্যাভিয়ার, এর উপকারিতা জানেন

আপডেট: ০৩:৪৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

পৃথিবীতে নানা স্বাদের ও দামের খাবার রয়েছে। এমনকী সোনার তৈরি বার্গার, চকলেট, মিষ্টি, সুসিসহ রয়েছে নানা আজব খাবার। তবে সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে দামি খাবার স্টার্জন প্রজাতির মাছের ডিম। যা ক্যাভিয়ার নামে পরিচিত।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

স্টার্জন মাছ প্রায় ২৬ প্রজাতির হলেও ক্যাভিয়ারের জন্য প্রয়োজন শুধু নারী মাছগুলো। একটি নারী স্টার্জন মাছ থেকে ক্যাভিয়ার সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ১০ থেকে ১৫ বছর। তবে একটি নারী মাছ থেকেই একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে ডিম সংগ্রহ করা যায়। এই  মাছগুলো ৬ মিটার এবং ১০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এছাড়া মাছগুলো ১০০ বছরের বেশি সময়ও বেঁচে থাকতে পারে। অল্প পরিমাণে নন-আয়োডিনযুক্ত লবণ দিয়ে সংরক্ষিত এই ডিমগুলোই হচ্ছে মহামূল্যবান ক্যাভিয়ার। এই মাছগুলো শুধু কাস্পিয়ান সাগর এবং কৃষ্ণ সাগরেই পাওয়া যায়। আর ক্যাভিয়ারের ৯০ শতাংশ আসে কাম্পিয়ান সাগর থেকে। তাই মাছগুলো বিরল প্রজাতিরও বটে।

অন্যদিকে এক সময় মাছগুলো মেরে তাদের ডিম সংগ্রহ করা হতো বলে এই মাছের সংখ্যা খুবই কমে গেছে। বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে মাছবান্ধব প্রক্রিয়ায় ডিম সংগ্রহ করা হয়। মাছগুলো বিরল প্রজাতি হওয়ায় ডিম খুবই কম বৈধভাবে বিক্রি হয়। আর দিন দিন এর দাম বেড়েই চলেছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা মোটেও কমেনি।

আরও পড়ুন: সকালে দুই তিনটে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস আছে, জানেন এর উপকারিতা

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাছের প্রজাতি ভেদে ক্যাভিয়ারের আকার ও রং ভিন্ন হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে দাম ও ভিন্ন হয়ে থাকে। ক্যাভিয়ার কালো, ধূসর, হলুদ, কমলা, সবুজসহ নানা রঙের হয়ে থাকে। যা দেখতে রঙিন মুক্তার মতো। নানা ধরণের ক্যাভিয়ার থাকলেও সব থেকে দামি ক্যাভিয়ার হচ্ছে কালো বর্ণের ডিমগুলো। পুরো দেশেই রয়েছে এর চাহিদা। যা বেলুজা স্টারজিওন মাছে ডিম। বেলুজা স্টারজিওন এখন বিলুপ্ত প্রায়। এই মাছটি পরিপক্ক হতেই ২০ বছর কিংবা আরও বেশি সময় নেয়। ১ কেজি ক্যাভিয়ারের দাম প্রায় ৮ লাখ টাকা। এমনকী ৪০ হাজার ডলারেও ক্যাভিয়ার বিক্রির রেকর্ড রয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৫ লাখ টাকা।

বর্তমানে ক্যাভিয়ার শুধু ধনীদের খাবারের তালিকায় থাকলেও একসময় তা ছিল সাধারণ একটি খাবার। রাশিয়া থেকে আসা জেলেরা নিয়মিতই আলুর সঙ্গে খেত ক্যাভিয়ার। তবে তাদের কাছে ক্যাভিয়ার ‘রো’ নামে পরিচিত। আর ‘রো’ নামকরণ করা হয়েছিল জেলেদের নামানুসারে। বর্তমানে ক্যাভিয়ার খাওয়া হয় টোস্ট , বিস্কুট, কাটা পেয়াজ, সেদ্ধ ডিম, তাজা গুল্ম, ক্রিমসহ নানা খাবারের সঙ্গে।

রান্না করা খাবারের সঙ্গে ক্যাভিয়ার খাওয়া হলেও সেই রান্না করা খাবারগুলোর সঙ্গে ডিমগুলোকে কাচা মিশিয়েই খাওয়া হয়। তাই পরিবেশনের সময়ও বরফের বাটি বা ট্রেতে পরিবেশন করা হয়। আর সংরক্ষণ করার জন্য দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা হয়। তবে দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের জন্য শূন্য থেকে মাইনাস চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ডিমগুলো রাখা হয়।

ভারতের সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, ক্যাভিয়ার শুধু স্বাদ ও দামের জন্যই বিখ্যাত নয় বরং খাবারটিতে রয়েছে নানা উপকারিতাও। ক্যাভিয়ারে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই, পটাশিয়াম, আয়রন, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়ামসহ নানা উপাদান। যা হাড়ের উন্নতি, রক্তাল্পতা প্রতিরোধ, ত্বকের মান উন্নত,মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেন হ্রাস, রক্তের কোলেস্টেরল কমানোসহ নানা উপকার করে।

সব খাবারের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি অপরিমাপিত গ্রহণে অপকারিতাও রয়েছে। ক্যাভিয়ারেও ব্যতিক্রম নয়। বিশেষ করে লাল ক্যাভিয়ার একজন সুস্থ ব্যক্তির দুই থেকে তিন চামচের বেশি খাওয়া উচিত নয়। এতে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকায় শরীর থেকে তরল অপসারণের প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে।

এছাড়া গুরুতর জটিলতাযুক্ত রোগীদের জন্য এটি ক্ষতিকারক। কেননা, ক্যাভিয়ারে বর্ধিত কোলেস্টেরল রয়েছে। তাই ক্যাভিয়ার গ্রহণে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বণ করতে হবে।

ঢাকা/এসএম