০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

যাত্রাকালীন বমির সমস্যা প্রতিরোধে যা করবেন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২০
  • / ৪১৭৬ বার দেখা হয়েছে

অনেকেই আছেন গাড়িতে উঠলেই জার্নির সময় বমি করেন বা বমি বমি ভাবের জন্য অস্বস্তিকর অবস্থায় থাকেন। মোশন সিকনেস সাধারণত বাস/কার/ট্র্র্রেন/ উড়োজাহাজে যাত্রাকালীন অসুস্থতাকে বোঝায়। এ কারণে যারা এই সমস্যায় ভোগেন তারা আতঙ্কে লম্বা জার্নি করতে চান না বা পরিবারের অন্যদের কাছে বিব্রত বোধ করেন। যদিও বাচ্চাদের মাঝে এই সমস্যা তুলনামূলক বেশি দেখা যায়, তবে বড়দের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা কমবেশি সব পরিবারেই দেখা যায়।

ভ্রমণে বমি কেন হয়?

বমির জন্য দায়ী আমাদের অন্তঃকর্ণের সমন্বয়হীনতা। চলন্ত বাসের ঝাঁকুনিতে আমাদের কানের ভেতরের ফ্লুইড নড়াচড়া করে। যার কারণে অন্তঃকর্ণ ব্রেনকে ইনফরমেশন দেয়, বডি মুভ করে, কিন্তু এদিকে আমাদের চোখ আবার ব্রেনকে ইনফরমেশন দেয় যে বডি স্থির আছে। শরীর নড়াচড়া করছে না। দুই রকম ইনফরমেশনের জন্য মস্তিস্কের সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি হয়! আর এ ধরনের অবস্থাকে ব্রেন বিষ হিসেবে শনাক্ত করে! তাই বিষকে বডি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য যাত্রাকালে বমি হয় বা বমি বমি ভাব হয়। ভ্রমণকালীন অসুস্থতার উপসর্গগুলো পরিলক্ষিত হয় যখন কান, চোখ এবং জয়েন্টগুলোর মতো সংবেদনশীল অঙ্গ থেকে মস্তিস্ক অসংলগ্ন বার্তা পায়।

মোশন সিকনেস/জার্নিতে বমির সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

১. বাসে বসে ঘুমিয়ে গেলে আর বমি আসে না কারণ চোখ তখন ইনফরমেশন দেয় না ফলে ব্রেনে কোনো কনফিউশন তৈরি হয় না!

ঘুম না এলেও হালকাভাবে দু’চোখ বন্ধ করে রাখুন। অথবা একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে আসুন। উপকারে আসবে।

২. চলন্ত অবস্থায় যানবাহনের ভেতরে দৃষ্টি নিবদ্ধ না রেখে জানালা দিয়ে বাইরে তাকান। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সামনের দিকে বা জানালার কাছে আসন নিন। জানালাটা খুলে দিন, ঠান্ডা বাতাস লাগবে শরীরে। ভালো লাগবে।

৩. যাদের জার্নির সময় বমির সমস্যা আছে তারা চলন্ত গাড়িতে বই, পত্রিকা ইত্যাদি পড়তে থাকলে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

৪. গাড়িতে আড়াআড়িভাবে বা যেদিকে গাড়ি চলছে, সেদিকে পেছন দিয়ে বসবেন না। সিটে উল্টো হয়ে বসবেন না কখনও। এতে বমি বা বমি বমি ভাবের আশঙ্কা থাকে। অনেকে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে জার্নিতে আড্ডা দেওয়ার জন্য ঘুরে বসেন সিটে। কিন্তু গাড়ি যেদিকে মুখ করে এগোচ্ছে তার বিপরীত দিকে মুখ করে থাকা শুধু মোশন সিকনেসই দেবে না, তা বিপজ্জনকও। এছাড়া অনেক গাড়িতে বিপরীতমুখী সিট থাকে, আপনার যদি ঘন ঘন মোশন সিকনেস হয় তাহলে সেসব সিটে বসবেন না। এছাড়া পেছনের সিটে বসা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যানবাহনের পেছনের অংশই বেশি ঝাঁকি খায়, তা থেকে মোশন সিকনেস হতে পারে।

৫. যাদের এই সমস্যা আছে তারা যাত্রা শুরুর আগে ভরপেট খাবেন না।

৬. কিছু ওষুধ আছে যেগুলো বমি বা বমি বমিভাব বন্ধ করতে পারে, চিকিৎসকের পরামর্শমতো বমিভাব দূর করার জন্য বাহনে ওঠার আগেই এই জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। যদি আপনার যাত্রাকালে ঘন ঘন এই সমস্যা হতে থাকে তাহলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন। এই ওষুধগুলো সাধারণত ভ্রমণের ২০-৩০ মিনিট আগে খেতে হয়।

৭. গাড়িতে বসে আদা কিংবা চুইংগাম চিবালেও উপকার পাওয়া যায়। তবে ভ্রমণের সময় ধূমপান করবেন না।

৮. গাড়িতে উঠলেই আমার বমি হবে- এমন চিন্তা জার্নির সময় কখনও মনে আনা যাবে না। যাদের এই সমস্যা আছে তারা ব্যাগে কয়েকটা লেবু পাতা রাখতে পারেন ও গাড়িতে চড়ে তা নাকের কাছে ধরতে পারেন।

শেয়ার করুন

x
English Version

যাত্রাকালীন বমির সমস্যা প্রতিরোধে যা করবেন

আপডেট: ১২:১৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২০

অনেকেই আছেন গাড়িতে উঠলেই জার্নির সময় বমি করেন বা বমি বমি ভাবের জন্য অস্বস্তিকর অবস্থায় থাকেন। মোশন সিকনেস সাধারণত বাস/কার/ট্র্র্রেন/ উড়োজাহাজে যাত্রাকালীন অসুস্থতাকে বোঝায়। এ কারণে যারা এই সমস্যায় ভোগেন তারা আতঙ্কে লম্বা জার্নি করতে চান না বা পরিবারের অন্যদের কাছে বিব্রত বোধ করেন। যদিও বাচ্চাদের মাঝে এই সমস্যা তুলনামূলক বেশি দেখা যায়, তবে বড়দের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা কমবেশি সব পরিবারেই দেখা যায়।

ভ্রমণে বমি কেন হয়?

বমির জন্য দায়ী আমাদের অন্তঃকর্ণের সমন্বয়হীনতা। চলন্ত বাসের ঝাঁকুনিতে আমাদের কানের ভেতরের ফ্লুইড নড়াচড়া করে। যার কারণে অন্তঃকর্ণ ব্রেনকে ইনফরমেশন দেয়, বডি মুভ করে, কিন্তু এদিকে আমাদের চোখ আবার ব্রেনকে ইনফরমেশন দেয় যে বডি স্থির আছে। শরীর নড়াচড়া করছে না। দুই রকম ইনফরমেশনের জন্য মস্তিস্কের সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি হয়! আর এ ধরনের অবস্থাকে ব্রেন বিষ হিসেবে শনাক্ত করে! তাই বিষকে বডি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য যাত্রাকালে বমি হয় বা বমি বমি ভাব হয়। ভ্রমণকালীন অসুস্থতার উপসর্গগুলো পরিলক্ষিত হয় যখন কান, চোখ এবং জয়েন্টগুলোর মতো সংবেদনশীল অঙ্গ থেকে মস্তিস্ক অসংলগ্ন বার্তা পায়।

মোশন সিকনেস/জার্নিতে বমির সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়

১. বাসে বসে ঘুমিয়ে গেলে আর বমি আসে না কারণ চোখ তখন ইনফরমেশন দেয় না ফলে ব্রেনে কোনো কনফিউশন তৈরি হয় না!

ঘুম না এলেও হালকাভাবে দু’চোখ বন্ধ করে রাখুন। অথবা একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে আসুন। উপকারে আসবে।

২. চলন্ত অবস্থায় যানবাহনের ভেতরে দৃষ্টি নিবদ্ধ না রেখে জানালা দিয়ে বাইরে তাকান। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সামনের দিকে বা জানালার কাছে আসন নিন। জানালাটা খুলে দিন, ঠান্ডা বাতাস লাগবে শরীরে। ভালো লাগবে।

৩. যাদের জার্নির সময় বমির সমস্যা আছে তারা চলন্ত গাড়িতে বই, পত্রিকা ইত্যাদি পড়তে থাকলে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

৪. গাড়িতে আড়াআড়িভাবে বা যেদিকে গাড়ি চলছে, সেদিকে পেছন দিয়ে বসবেন না। সিটে উল্টো হয়ে বসবেন না কখনও। এতে বমি বা বমি বমি ভাবের আশঙ্কা থাকে। অনেকে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে জার্নিতে আড্ডা দেওয়ার জন্য ঘুরে বসেন সিটে। কিন্তু গাড়ি যেদিকে মুখ করে এগোচ্ছে তার বিপরীত দিকে মুখ করে থাকা শুধু মোশন সিকনেসই দেবে না, তা বিপজ্জনকও। এছাড়া অনেক গাড়িতে বিপরীতমুখী সিট থাকে, আপনার যদি ঘন ঘন মোশন সিকনেস হয় তাহলে সেসব সিটে বসবেন না। এছাড়া পেছনের সিটে বসা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যানবাহনের পেছনের অংশই বেশি ঝাঁকি খায়, তা থেকে মোশন সিকনেস হতে পারে।

৫. যাদের এই সমস্যা আছে তারা যাত্রা শুরুর আগে ভরপেট খাবেন না।

৬. কিছু ওষুধ আছে যেগুলো বমি বা বমি বমিভাব বন্ধ করতে পারে, চিকিৎসকের পরামর্শমতো বমিভাব দূর করার জন্য বাহনে ওঠার আগেই এই জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। যদি আপনার যাত্রাকালে ঘন ঘন এই সমস্যা হতে থাকে তাহলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাবেন। এই ওষুধগুলো সাধারণত ভ্রমণের ২০-৩০ মিনিট আগে খেতে হয়।

৭. গাড়িতে বসে আদা কিংবা চুইংগাম চিবালেও উপকার পাওয়া যায়। তবে ভ্রমণের সময় ধূমপান করবেন না।

৮. গাড়িতে উঠলেই আমার বমি হবে- এমন চিন্তা জার্নির সময় কখনও মনে আনা যাবে না। যাদের এই সমস্যা আছে তারা ব্যাগে কয়েকটা লেবু পাতা রাখতে পারেন ও গাড়িতে চড়ে তা নাকের কাছে ধরতে পারেন।