১১:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

যে ৩ ধরনের নামাজ কবুল হয় না

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:৩৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১
  • / ৪২০৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: আমরা মুসলিম। ইমানদার মুসলমানের প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা— প্রতিটি মুসলমানের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ফরজ। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই পড়তে হবে সহিহ ও বিশুদ্ধ নিয়মে। পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশিত পন্থায় আদায় না হলে— কবুল হবে না।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউট

কেউ যদি মনগড়াভাবে নামাজ আদায় করেন, সেই নামাজ কোনোভাবেই আদায় হবে না। নামাজ যেমন বেহেশতের চাবি, অর্থাৎ নামাজ ছাড়া বেহেশতে যাওয়া যাবে না, তেমনি নামাজই কোনো কোনো ব্যক্তিকে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করতে পারে। কোনো কোনো ব্যক্তি কি কারণে নিয়মিত নামাজ আদায় করার পরও জান্নাতে যেতে পারবেন না তা নিচে উপস্থাপন করা হলো-

লোকদেখানো নামাজ আদায়

কিছু মানুষকে দেখানোর জন্য নামাজ পড়েন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়। যখন ওরা নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায় লোকদেখানোর উদ্দেশ্যে। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৪২)

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘আমি অংশীবাদিতা (শিরক) থেকে সব অংশীদারের তুলনায় বেশি মুখাপেক্ষীহীন। যে ব্যক্তি কোনো আমল করে এবং তাতে অন্যকে আমার সঙ্গে শরিক করে, আমি তাকে ও তার আমলকে বর্জন করি।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৯৮৫)

দায়সারাভাবে নামাজ আদায় করা

যারা দায়সারাভাবে নামাজ আদায় করেন অথবা নামাজের প্রয়োজনীয় বিধি-বিধানগুলো যথাযথভাবে পালন করেন না, তাদের নামাজ আদায় হবে না। এ ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদে প্রবেশ করেন। তখন জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে দায়সারাভাবে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ করে তিনি হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) সালাম দিলো। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সালামের জবাব দিয়ে বলেন, ‘তুমি যাও এবং পুনরায় নামাজ আদায় করো। কেননা, তুমি যথাযথভাবে নামাজ আদায় করোনি।’ এভাবে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথায় ওই লোকটি পরপর তিনবার নামাজ আদায় করলেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) লোকটিকে তিনবারই ফিরিয়ে দিলেন। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এর চেয়ে সুন্দরভাবে আমি নামাজ আদায় করতে জানি না। অতএব আমাকে নামাজ শিখিয়ে দিন! লোকটির মুখে এ কথা শুনার পর হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তুমি নামাজে দাঁড়াবে তখন তাকবির দেবে। তারপর পবিত্র কোরআন থেকে যা পাঠ করা তোমার কাছে সহজ মনে হয়, তা পাঠ করবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। অতঃপর সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। অতঃপর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫৭)

অলসতা করে নামাজ কাজা করা

নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেলেও কেউ কেউ অলসতা করে— সময়মতো নামাজ আদায় করেন না। অবহেলা করে নামাজ কাজা করেন। অথচ অলসতা করে যারা সময়মতো নামাজ আদায় করেন না, তাদের নামাজ কবুল হবে না। অলসতা করে নামাজ আদায় না করার শাস্তি ওই ব্যক্তিকে পরকালে ভোগ করতেই হবে।

এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর দুর্ভোগ ওই সব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে উদাসীন।’ (সুরা মাউন, আয়াত : ৪-৫)

নামাজে চুরি সবচেয়ে বড় চুরি

অনেকে নামাজে চুরি করে। নামাজে চুরি বলতে- রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে না। চোরের মতো তাড়াহুড়ো করে নামাজ আদায় করে। হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) তাদের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা বড় চোর যে ব্যক্তি তার নামাজ চুরি করে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল সে কিভাবে নামাজ চুরি করে?’ সাহাবিদের এ প্রশ্নের জবাবে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সে নামাজে রুকু ও সিজদা পূর্ণ করে না।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২২৬৯৫)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন। আমিন

ঢাকা/এমটি 

শেয়ার করুন

x
English Version

যে ৩ ধরনের নামাজ কবুল হয় না

আপডেট: ০৫:৩৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: আমরা মুসলিম। ইমানদার মুসলমানের প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা— প্রতিটি মুসলমানের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ফরজ। তবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই পড়তে হবে সহিহ ও বিশুদ্ধ নিয়মে। পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশিত পন্থায় আদায় না হলে— কবুল হবে না।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউট

কেউ যদি মনগড়াভাবে নামাজ আদায় করেন, সেই নামাজ কোনোভাবেই আদায় হবে না। নামাজ যেমন বেহেশতের চাবি, অর্থাৎ নামাজ ছাড়া বেহেশতে যাওয়া যাবে না, তেমনি নামাজই কোনো কোনো ব্যক্তিকে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করতে পারে। কোনো কোনো ব্যক্তি কি কারণে নিয়মিত নামাজ আদায় করার পরও জান্নাতে যেতে পারবেন না তা নিচে উপস্থাপন করা হলো-

লোকদেখানো নামাজ আদায়

কিছু মানুষকে দেখানোর জন্য নামাজ পড়েন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়। যখন ওরা নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায় লোকদেখানোর উদ্দেশ্যে। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৪২)

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘আমি অংশীবাদিতা (শিরক) থেকে সব অংশীদারের তুলনায় বেশি মুখাপেক্ষীহীন। যে ব্যক্তি কোনো আমল করে এবং তাতে অন্যকে আমার সঙ্গে শরিক করে, আমি তাকে ও তার আমলকে বর্জন করি।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৯৮৫)

দায়সারাভাবে নামাজ আদায় করা

যারা দায়সারাভাবে নামাজ আদায় করেন অথবা নামাজের প্রয়োজনীয় বিধি-বিধানগুলো যথাযথভাবে পালন করেন না, তাদের নামাজ আদায় হবে না। এ ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদে প্রবেশ করেন। তখন জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে দায়সারাভাবে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ করে তিনি হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) সালাম দিলো। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সালামের জবাব দিয়ে বলেন, ‘তুমি যাও এবং পুনরায় নামাজ আদায় করো। কেননা, তুমি যথাযথভাবে নামাজ আদায় করোনি।’ এভাবে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথায় ওই লোকটি পরপর তিনবার নামাজ আদায় করলেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) লোকটিকে তিনবারই ফিরিয়ে দিলেন। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এর চেয়ে সুন্দরভাবে আমি নামাজ আদায় করতে জানি না। অতএব আমাকে নামাজ শিখিয়ে দিন! লোকটির মুখে এ কথা শুনার পর হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তুমি নামাজে দাঁড়াবে তখন তাকবির দেবে। তারপর পবিত্র কোরআন থেকে যা পাঠ করা তোমার কাছে সহজ মনে হয়, তা পাঠ করবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। অতঃপর সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। অতঃপর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫৭)

অলসতা করে নামাজ কাজা করা

নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেলেও কেউ কেউ অলসতা করে— সময়মতো নামাজ আদায় করেন না। অবহেলা করে নামাজ কাজা করেন। অথচ অলসতা করে যারা সময়মতো নামাজ আদায় করেন না, তাদের নামাজ কবুল হবে না। অলসতা করে নামাজ আদায় না করার শাস্তি ওই ব্যক্তিকে পরকালে ভোগ করতেই হবে।

এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অতঃপর দুর্ভোগ ওই সব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে উদাসীন।’ (সুরা মাউন, আয়াত : ৪-৫)

নামাজে চুরি সবচেয়ে বড় চুরি

অনেকে নামাজে চুরি করে। নামাজে চুরি বলতে- রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে না। চোরের মতো তাড়াহুড়ো করে নামাজ আদায় করে। হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) তাদের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা বড় চোর যে ব্যক্তি তার নামাজ চুরি করে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল সে কিভাবে নামাজ চুরি করে?’ সাহাবিদের এ প্রশ্নের জবাবে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সে নামাজে রুকু ও সিজদা পূর্ণ করে না।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২২৬৯৫)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন। আমিন

ঢাকা/এমটি