০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪

‘লকডাউনের’ খবরে বাজারে ক্রেতাদের ভিড়

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:১৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১
  • / ৪১৩৭ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: লকডাউনের খবরে তেল-চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার হিড়িক পড়েছে রাজধানীরে কাঁচাবাজার ও মুদি দোকানে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপণ্যের দামও বেড়ে গেছে। 

রোববার (২৭ জুন) রাজধানীর মতিঝিল, মালিবাগ, রামপুরা এবং বাড্ডা এলাকার বাজারে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের খবরে বেচা-কেনা ভালো হয়েছে। সকাল থেকে পেঁয়াজ-রসুন, চাল-ডাল, আটা-ময়দা, আলু-চিনি এবং তেল বেশি বিক্রি হয়েছে। সকালে যে মাল কিনেছি সেগুলো বেশি দামে বিক্রি করছি।

মতিঝিল এজিবি কলোনি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুই বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। আরও দুই বস্তা নিয়ে এসেছি, এগুলোও শেষ হয়ে যাবে। 

তিনি বলেন, সাধারণত দিনে একবস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করি। তবে কাল সোমবার থেকে লকডাউন হবে, পেঁয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সবাই বেশি করে পেঁয়াজ কিনছেন। দেশি পেঁয়াজ সকালে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। কারণ এই পেঁয়াজ বেশি দামে কেনা। বাজারটিতে পেঁয়াজের পাশাপাশি রসুনও বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে।

মলিবাগ বাজারে তালিকা নিয়ে (চুতা) বাজার করতে আসা অসিম কুমার হাওলাদার বলেন, কাল থেকে লকডাউন। তাই আগামী এ সপ্তাহের বাজার করছি। তিনি বলেন, চার লিটারে দুই বোতল সয়াবিন তেল নিয়েছি। চাল নিয়েছি এক বস্তা, আলু নিয়েছি ১০ কেজি। আবারও করোনা বাড়ছে। লকডাউন কত দিন থাকবে, কেউ বলতে পারছে না। তাই বেশি করে তেল, চাল-ডাল কিনে রাখছি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

চাল ব্যবসায়ী মনিরুল আলম বলেন, লকডাউনের খবরে চালের চাহিদা বাড়ছে। সাধারণ দিনে দুপুর পর্যন্ত ৫-১০ বস্তা চাল বিক্রি হয়। আজ সকাল থেকে ৪০ বস্তা চাল বিক্রি করেছি। বস্তা প্রতি চালের দামও বেড়েছে বলে জানান তিনি। বাজারগুলোতে চাল বিক্রি ৫০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা কেজি পর্যন্ত। ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি থেকে ১২০ টাকা কেজিতে।

চাল-ডালের পাশাপাশি মাছের বাজারে ক্রেতাদের ভিড় অনেক বেশি। কেউ দুই কেজি, কেউ পাঁচ কেজি আবার কেউ সাত কেজি করে রুই, কতলা, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া মাছ কিনেছেন। রাজধানীর বাজারগুলোতে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শ টাকা থেকে ৭০০ টাকা কেজি, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা কেজিতে। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে।

মাংসের মধ্যে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০-৬০০ টাকা কেজিতে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকা কেজিতে। মুরগির মাংসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা কেজিতে। 

বাড্ডা কাঁচা বাজারে গরুর মাংস ব্যবসায়ী টিপু হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে দুটি গরু জবাই করেছি। দুপুরের আগেই মাংস বিক্রি করে ফেলেছি। একই কথা বলেন পাশের আরেক মাংস ব্যবসায়ী নুরুল হাসান। তিনি বলেন, গরুর মাংস সকালে ৫৭০-৫৮০ টাকা বিক্রি করেছি। তবে দুপুরে ৬০০টাকা কেজি বিক্রি করেছি। ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে সব বিক্রি শেষ।

বাজারগুলোতে কাঁচামালের মধ্যে ঢ্যাঁড়স, পটল, কাঁকরোল, বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। বেগুন ঝিঙ্গা, কচুর মুখী, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে আর করলা এবং টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। 

উল্লেখ্য, দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা হাসপাতালগুলোতে বেড়ে চলছে করোনা রোগীর সংখ্যা, একই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এ পরিস্থিতিতে আগামীকাল সোমবার (২৮ জুন) থেকে লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রথম তিন দিন কিছুটা শিথিল থাকলেও বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x

‘লকডাউনের’ খবরে বাজারে ক্রেতাদের ভিড়

আপডেট: ০৮:১৩:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: লকডাউনের খবরে তেল-চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার হিড়িক পড়েছে রাজধানীরে কাঁচাবাজার ও মুদি দোকানে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপণ্যের দামও বেড়ে গেছে। 

রোববার (২৭ জুন) রাজধানীর মতিঝিল, মালিবাগ, রামপুরা এবং বাড্ডা এলাকার বাজারে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনের খবরে বেচা-কেনা ভালো হয়েছে। সকাল থেকে পেঁয়াজ-রসুন, চাল-ডাল, আটা-ময়দা, আলু-চিনি এবং তেল বেশি বিক্রি হয়েছে। সকালে যে মাল কিনেছি সেগুলো বেশি দামে বিক্রি করছি।

মতিঝিল এজিবি কলোনি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুই বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। আরও দুই বস্তা নিয়ে এসেছি, এগুলোও শেষ হয়ে যাবে। 

তিনি বলেন, সাধারণত দিনে একবস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করি। তবে কাল সোমবার থেকে লকডাউন হবে, পেঁয়াজের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সবাই বেশি করে পেঁয়াজ কিনছেন। দেশি পেঁয়াজ সকালে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। কারণ এই পেঁয়াজ বেশি দামে কেনা। বাজারটিতে পেঁয়াজের পাশাপাশি রসুনও বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে।

মলিবাগ বাজারে তালিকা নিয়ে (চুতা) বাজার করতে আসা অসিম কুমার হাওলাদার বলেন, কাল থেকে লকডাউন। তাই আগামী এ সপ্তাহের বাজার করছি। তিনি বলেন, চার লিটারে দুই বোতল সয়াবিন তেল নিয়েছি। চাল নিয়েছি এক বস্তা, আলু নিয়েছি ১০ কেজি। আবারও করোনা বাড়ছে। লকডাউন কত দিন থাকবে, কেউ বলতে পারছে না। তাই বেশি করে তেল, চাল-ডাল কিনে রাখছি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

চাল ব্যবসায়ী মনিরুল আলম বলেন, লকডাউনের খবরে চালের চাহিদা বাড়ছে। সাধারণ দিনে দুপুর পর্যন্ত ৫-১০ বস্তা চাল বিক্রি হয়। আজ সকাল থেকে ৪০ বস্তা চাল বিক্রি করেছি। বস্তা প্রতি চালের দামও বেড়েছে বলে জানান তিনি। বাজারগুলোতে চাল বিক্রি ৫০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা কেজি পর্যন্ত। ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি থেকে ১২০ টাকা কেজিতে।

চাল-ডালের পাশাপাশি মাছের বাজারে ক্রেতাদের ভিড় অনেক বেশি। কেউ দুই কেজি, কেউ পাঁচ কেজি আবার কেউ সাত কেজি করে রুই, কতলা, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া মাছ কিনেছেন। রাজধানীর বাজারগুলোতে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শ টাকা থেকে ৭০০ টাকা কেজি, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা কেজিতে। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে।

মাংসের মধ্যে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০-৬০০ টাকা কেজিতে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৮৫০ টাকা কেজিতে। মুরগির মাংসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা কেজিতে। 

বাড্ডা কাঁচা বাজারে গরুর মাংস ব্যবসায়ী টিপু হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে দুটি গরু জবাই করেছি। দুপুরের আগেই মাংস বিক্রি করে ফেলেছি। একই কথা বলেন পাশের আরেক মাংস ব্যবসায়ী নুরুল হাসান। তিনি বলেন, গরুর মাংস সকালে ৫৭০-৫৮০ টাকা বিক্রি করেছি। তবে দুপুরে ৬০০টাকা কেজি বিক্রি করেছি। ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে সব বিক্রি শেষ।

বাজারগুলোতে কাঁচামালের মধ্যে ঢ্যাঁড়স, পটল, কাঁকরোল, বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। বেগুন ঝিঙ্গা, কচুর মুখী, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে আর করলা এবং টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। 

উল্লেখ্য, দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা হাসপাতালগুলোতে বেড়ে চলছে করোনা রোগীর সংখ্যা, একই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এ পরিস্থিতিতে আগামীকাল সোমবার (২৮ জুন) থেকে লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রথম তিন দিন কিছুটা শিথিল থাকলেও বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে।

ঢাকা/এনইউ

আরও পড়ুন: