০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:০২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪১৭৩ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

চিকিৎসকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেওয়ার পরও নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

সারা দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করায় তলবাদেশে তিনি হাজির হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন। ডিজির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে তলবাদেশে হাজির হওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, এই বিষয়টি অনেকবার এসেছে। কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেওয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে (তলব) লজ্জা লাগে। এটা শোভনীয় না। আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি।

এ সময় ডিজির পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এটা কনসিডার (বিবেচনা) করেন। স্বাস্থ্যের সমস্যা কোভিডের জন্য হয়েছে।’ তখন আদালত বলেন, সরকার তো কোনও খাতেই টাকা কম দেয় না।

আদালত ফরিদপুর মেডিক্যালের দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ৪০০ গুণ একটি জিনিসের দাম হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না। এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সব জায়গায় ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

আদালত বলেন, গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। ডিজিকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনও কিছু (আদেশ) গেলে রেসপন্স করবেন।

পরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আদালতে বলেন, ‘কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে যে বিলম্ব হয়েছে, এটা অনিচ্ছাকৃত। আমার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি খুবই দুঃখিত। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এমন হবে না।’

পরে আদালত এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ মে দিন ঠিক করে দেন এবং ডিজিকে তার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে ডাক্তার নিয়োগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে গত ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়। অন্যথায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও সে আদেশ বাস্তবায়ন না করায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে তলব করেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, কারা চিকিৎসক সংকট নিয়ে দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে রিট দায়ের করেছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন (রবিন)।

আরও পড়ুন: ডিসিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২৫ নির্দেশনা

পরে ২০১৯ সালের ২৩ জুন জারি করা রুলে কারাগারে আইনগত অধিকার নিশ্চিত, মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কারা চিকিৎসকের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

এছাড়াও অপর এক আদেশে আদালত সারা দেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট

আপডেট: ০৬:০২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩

চিকিৎসকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেওয়ার পরও নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

সারা দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করায় তলবাদেশে তিনি হাজির হওয়ার পর মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন। ডিজির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এর আগে তলবাদেশে হাজির হওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, এই বিষয়টি অনেকবার এসেছে। কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্যসেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেওয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে (তলব) লজ্জা লাগে। এটা শোভনীয় না। আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি।

এ সময় ডিজির পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এটা কনসিডার (বিবেচনা) করেন। স্বাস্থ্যের সমস্যা কোভিডের জন্য হয়েছে।’ তখন আদালত বলেন, সরকার তো কোনও খাতেই টাকা কম দেয় না।

আদালত ফরিদপুর মেডিক্যালের দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, ৪০০ গুণ একটি জিনিসের দাম হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না। এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সব জায়গায় ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

আদালত বলেন, গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। ডিজিকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনও কিছু (আদেশ) গেলে রেসপন্স করবেন।

পরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আদালতে বলেন, ‘কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে যে বিলম্ব হয়েছে, এটা অনিচ্ছাকৃত। আমার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি খুবই দুঃখিত। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এমন হবে না।’

পরে আদালত এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২ মে দিন ঠিক করে দেন এবং ডিজিকে তার ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে ডাক্তার নিয়োগ দিতে কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে গত ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়। অন্যথায়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও সে আদেশ বাস্তবায়ন না করায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে তলব করেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, কারা চিকিৎসক সংকট নিয়ে দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আদালতে রিট দায়ের করেছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খাঁন (রবিন)।

আরও পড়ুন: ডিসিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২৫ নির্দেশনা

পরে ২০১৯ সালের ২৩ জুন জারি করা রুলে কারাগারে আইনগত অধিকার নিশ্চিত, মানসম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না এবং বন্দিদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কারা চিকিৎসকের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও কারা মহাপরিদর্শককে এসব রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

এছাড়াও অপর এক আদেশে আদালত সারা দেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ঢাকা/এসএ