০১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘দুর্বল ব্যাংকের তালিকা নিজস্ব রিসোর্সের জন্য করা হয়েছে’

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:১৫:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
  • / ৫১৮১ বার দেখা হয়েছে

ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ মোট ৩৮টি ব্যাংককে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৫৪ ব্যাংকের অবস্থা বিশ্লেষণ করে সবল ও দুর্বল ব্যাংক বের করা হয়। যেখানে ১২টি ব্যাংকের অবস্থান অত্যন্ত নাজুক, যার ৯টি এরই মধ্যে রেড জোনে চলে গেছে। ইয়েলো জোনে রয়েছে ২৯টি ব্যাংক। আর তিনটি ব্যাংক রেড জোনের খুব কাছাকাছি।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রিসার্সের জন্য দুর্বল ও সবল ব্যাংকের এই তালিকা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্টেবিলিটি ডিপার্টমেন্ট ব্যাংকগুলোর ছয়টি কম্পোনেন্ট নিয়ে এ তালিকা করে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ছয়টি কম্পোনেন্ট নিয়ে দুর্বল- সবল ব্যাংকের তালিকা করেছে। এটা আমাদের নিজস্ব রিসার্সের জন্য করা হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার জন্য আমাদের এ রেটিং করা হয়নি। এছাড়া কোন ব্যাংক দুর্বল এটাতো জানা। শেয়ারবাজার থেকেও চিত্র আপনারা দেখতে পান।

মুখপাত্র আরও বলেন, আমাদের সব রিপোর্ট পাবলিকের জন্য করা হয় না। বেশ কিছু রিপোর্ট জাতীয় স্বার্থে গোপন রাখতে হবে। ব্যাংকগুলোর ওপর ক্যামেলস রেটিং কখনো পাবলিক হওয়ার জন্য নয়, এটা গোপনীয় আমাদের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট বিভিন্ন কম্পোনেন্ট নিয়ে এসেসমেন্ট করে। রেগুলার করি ফাইনেন্সিয়াল রিক্স ম্যানেজমেন্টের জন্য করা হয়, এটা প্রকৃত হেলথ ইনডিকেটর নয়।

আরও পড়ুন: বিএসইসি’র কাছে খেলাপিদের তথ্য পাঠাবে বাংলাদেশ ব্যাংক

এসময় তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে শ্রেণিকরণ করতে একটা পিসিএ ফ্রেমওয়ার্ক করেছি। যেখানে চারটি ক্যাটাগরিতে ব্যাংকগুলোকে মূল্যায়ন করা হবে। চলতি বছরের ব্যালেন্স শিটের ওপর ভিত্তি করে এটা করা হবে। যেটা কার্যকর হবে ২০২৫ এর মে মাস থেকে।

একীভূত নিয়ে তিনি বলেন, আগামী এক বছরে ১০ ব্যাংকে মার্জারের (একীভূত) পরিকল্পনা রয়েছে। মার্জারের প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্বতাও থাকবে মার্জারের ক্ষেত্রে। এখানে দুর্বল ব্যাংক সবল ব্যাংক হতে পারে, আবার সবল ব্যাংক আরও সবল ব্যাংক হতে পারে।

প্রসঙ্গত, দেশের ১২ ব্যাংক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যে রেড জোনে চলে গেছে নয়টি ব্যাংক। সম্প্রতি ২০২৩ সালের জুন থেকে অর্ধ-বার্ষিক আর্থিক কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে ব্যাংকের স্বাস্থ্য সূচক তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা বিভাগ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১২টির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, যার নয়টি ইতিমধ্যে রেড জোনে চলে গেছে। ইয়েলো জোনে আছে ২৯টি ব্যাংক; এর মধ্যে তিনটি ব্যাংক রেড জোনের খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।

নয়টি ব্যাংক হলো- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ন্যাশনাল ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।

ইয়েলো জোনে রয়েছে দুটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক। এগুলো হলো- বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক।

১৯টি প্রচলিত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আটটি শরিয়াহ-ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক।

১৯টি প্রচলিত ব্যাংক হলো- আইএফআইসি ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইউনাইটেড বাণিজ্যিক ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি বাণিজ্যিক ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এসবিএসি ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংক।

আটটি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েলো জোন ব্যাংকগুলো শিল্প গড় তুলনায় তাদের স্বাস্থ্যের আপেক্ষিক অবনতির কারণে তদারকির মনোযোগ প্রয়োজন।

এতে আরও বলা হয়, রেড জোনে পড়া ব্যাংকগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মাত্র ১৬টি ব্যাংক গ্রিন জোনে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে আটটিই বিদেশি ব্যাংক। অর্থাৎ গ্রিন জোনে দেশীয় ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র আটটি।

এই ব্যাংকগুলো হলো- প্রাইম ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সীমান্ত ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক আলফালাহ, উরি ব্যাংক, এইচএসবিসি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, সিটি ব্যাংক এনএ, হাবিব ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।

ঢাকা/এসএ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

‘দুর্বল ব্যাংকের তালিকা নিজস্ব রিসোর্সের জন্য করা হয়েছে’

আপডেট: ১০:১৫:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ মোট ৩৮টি ব্যাংককে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৫৪ ব্যাংকের অবস্থা বিশ্লেষণ করে সবল ও দুর্বল ব্যাংক বের করা হয়। যেখানে ১২টি ব্যাংকের অবস্থান অত্যন্ত নাজুক, যার ৯টি এরই মধ্যে রেড জোনে চলে গেছে। ইয়েলো জোনে রয়েছে ২৯টি ব্যাংক। আর তিনটি ব্যাংক রেড জোনের খুব কাছাকাছি।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রিসার্সের জন্য দুর্বল ও সবল ব্যাংকের এই তালিকা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্টেবিলিটি ডিপার্টমেন্ট ব্যাংকগুলোর ছয়টি কম্পোনেন্ট নিয়ে এ তালিকা করে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ছয়টি কম্পোনেন্ট নিয়ে দুর্বল- সবল ব্যাংকের তালিকা করেছে। এটা আমাদের নিজস্ব রিসার্সের জন্য করা হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার জন্য আমাদের এ রেটিং করা হয়নি। এছাড়া কোন ব্যাংক দুর্বল এটাতো জানা। শেয়ারবাজার থেকেও চিত্র আপনারা দেখতে পান।

মুখপাত্র আরও বলেন, আমাদের সব রিপোর্ট পাবলিকের জন্য করা হয় না। বেশ কিছু রিপোর্ট জাতীয় স্বার্থে গোপন রাখতে হবে। ব্যাংকগুলোর ওপর ক্যামেলস রেটিং কখনো পাবলিক হওয়ার জন্য নয়, এটা গোপনীয় আমাদের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট বিভিন্ন কম্পোনেন্ট নিয়ে এসেসমেন্ট করে। রেগুলার করি ফাইনেন্সিয়াল রিক্স ম্যানেজমেন্টের জন্য করা হয়, এটা প্রকৃত হেলথ ইনডিকেটর নয়।

আরও পড়ুন: বিএসইসি’র কাছে খেলাপিদের তথ্য পাঠাবে বাংলাদেশ ব্যাংক

এসময় তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে শ্রেণিকরণ করতে একটা পিসিএ ফ্রেমওয়ার্ক করেছি। যেখানে চারটি ক্যাটাগরিতে ব্যাংকগুলোকে মূল্যায়ন করা হবে। চলতি বছরের ব্যালেন্স শিটের ওপর ভিত্তি করে এটা করা হবে। যেটা কার্যকর হবে ২০২৫ এর মে মাস থেকে।

একীভূত নিয়ে তিনি বলেন, আগামী এক বছরে ১০ ব্যাংকে মার্জারের (একীভূত) পরিকল্পনা রয়েছে। মার্জারের প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্বতাও থাকবে মার্জারের ক্ষেত্রে। এখানে দুর্বল ব্যাংক সবল ব্যাংক হতে পারে, আবার সবল ব্যাংক আরও সবল ব্যাংক হতে পারে।

প্রসঙ্গত, দেশের ১২ ব্যাংক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যে রেড জোনে চলে গেছে নয়টি ব্যাংক। সম্প্রতি ২০২৩ সালের জুন থেকে অর্ধ-বার্ষিক আর্থিক কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে ব্যাংকের স্বাস্থ্য সূচক তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা বিভাগ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১২টির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, যার নয়টি ইতিমধ্যে রেড জোনে চলে গেছে। ইয়েলো জোনে আছে ২৯টি ব্যাংক; এর মধ্যে তিনটি ব্যাংক রেড জোনের খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে।

নয়টি ব্যাংক হলো- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ন্যাশনাল ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।

ইয়েলো জোনে রয়েছে দুটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক। এগুলো হলো- বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক।

১৯টি প্রচলিত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আটটি শরিয়াহ-ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক।

১৯টি প্রচলিত ব্যাংক হলো- আইএফআইসি ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইউনাইটেড বাণিজ্যিক ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি বাণিজ্যিক ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, এসবিএসি ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংক।

আটটি শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েলো জোন ব্যাংকগুলো শিল্প গড় তুলনায় তাদের স্বাস্থ্যের আপেক্ষিক অবনতির কারণে তদারকির মনোযোগ প্রয়োজন।

এতে আরও বলা হয়, রেড জোনে পড়া ব্যাংকগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মাত্র ১৬টি ব্যাংক গ্রিন জোনে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে আটটিই বিদেশি ব্যাংক। অর্থাৎ গ্রিন জোনে দেশীয় ব্যাংকের সংখ্যা মাত্র আটটি।

এই ব্যাংকগুলো হলো- প্রাইম ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সীমান্ত ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক আলফালাহ, উরি ব্যাংক, এইচএসবিসি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, সিটি ব্যাংক এনএ, হাবিব ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।

ঢাকা/এসএ