০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে বিকনের শেয়ার দর বেড়েছে ৮’শ শতাংশের বেশি!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৯:২৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ অগাস্ট ২০২১
  • / ৪৪০১ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে ওষুধ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। গত দুই বছরে কোম্পানিটির ব্যবসায় ৩৬ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদিও এ সময়ে এর শেয়ারদর বেড়েছে ৮০৮ শতাংশ। ফলে ব্যবসায় পিছিয়ে থাকলেও এরই মধ্যে শেয়ারদরে বেক্সিমকো ও একমিকে ছাড়িয়ে গেছে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস। যে গতিতে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছে, তাতে শীর্ষ ওষুধ কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারকেও ছাড়িয়ে যাবে যেকোনো সময়। অবশ্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বলছে, কোম্পানিটির অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি তাদের নজরদারিতে রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারদর পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৪ টাকা ৪০ পয়সা। সর্বশেষ এ বছরের ৫ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ২২১ টাকা ৭০ পয়সায়। এ সময় কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৮০৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।

এদিকে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ব্যবসা ও মুনাফার তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৪৬৪ কোটি টাকা। এর বিপরীতে নিট মুনাফা হয়েছে ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর পরের ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় দাঁড়িয়েছে ৫৫৯ কোটি টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৩৮ কোটি টাকা। আর সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৬৩৩ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের আয়ের সঙ্গে ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের আয়ের তুলনা করলে দেখা যায়, এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। অবশ্য ২০২০-২১ হিসাব বছরের ১২ মাসের আয়ের তথ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি। আগের তিন প্রান্তিকের ব্যবসা প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বার্ষিক হিসাবেও কোম্পানিটির আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে ধারণা করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্য-প্রযুক্তি ও ক্লিনিক্যাল গবেষণার বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএ ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোর ব্যবসার ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে র্যাংকিং প্রকাশ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ র্যাংকিং অনুসারে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের অবস্থান ১৮ নম্বরে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের র্যাংকিংয়ে শীর্ষে রয়েছে। তাছাড়া বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস র্যাংকিংয়ে তিন ও একমি ল্যাবরেটরিজ ১১ নম্বরে রয়েছে। ডিএসইতে সর্বশেষ ৫ আগস্ট স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার ২২৬ টাকা ৮০ পয়সা, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার ১৮৯ টাকা ৮০ পয়সা ও একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ার ৮০ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার ডিএসইর পক্ষ থেকে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে এ বছরের মার্চে ডিএসইকে কোম্পানিটি জানায়, সিরিয়া সরকারের একটি কারিগরি দল গত ৮ মার্চ তাদের কারখানা পরিদর্শন করেছে। দলটির সদস্যরা কোম্পানিটির ওষুধ উৎপাদনের সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষও প্রকাশ করেছেন। সিরিয়া সরকার রাজি থাকলে তারা চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ ৫০ লাখ ডলারের ওষুধ রফতানি করতে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া এক বছরের মধ্যে এ রফতানি ১ কোটি ডলারে উন্নীত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটি হলে কোম্পানিটির আর্থিক পারফরম্যান্সে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। তাছাড়া কভিড-১৯ পরিস্থিতি পুনরায় খারাপ হতে শুরু করায় এ চুক্তি কবে নাগাদ হতে পারে, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ওষুধ রফতানির বিষয়ে সিরিয়া সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন হওয়া মাত্র বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস স্টক এক্সচেঞ্জ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে তা অবগত করবে বলে সে সময় জানিয়েছিল।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের কোম্পানি সচিব খলিলুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, আমাদের ব্যবসায় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে এবং সেটি দৃশ্যমান। তবে শেয়ারদর যে হারে বাড়ছে তা কিছুটা অস্বাভাবিক। বাজারের বেশকিছু বিনিয়োগকারী আমাদের শেয়ারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠার কারণেই এর দর বাড়ছে বলে আমার মনে হয়। সিরিয়ায় ওষুধ রফতানির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় ও মুনাফা বেড়েছে। পাশাপাশি সিরিয়া ওষুধ রফতানির বিষয়টি নিয়েও বাজারে আলোচনা রয়েছে। রফতানি চুক্তি হয়ে গেলে কোম্পানির আয় ও মুনাফা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। এটিকে পুঁজি করে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার কিনছেন। এতে প্রলুব্ধ হচ্ছেন অন্য বিনিয়োগকারীরাও। যার ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোম্পানিটির শেয়ারদর। ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধ উৎপাদনে এক ধরনের ব্র্যান্ড ইমেজ গড়ে উঠলেও ব্যবসার আকারের বিবেচনায় শীর্ষ ওষুধ কোম্পানিগুলোর তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বিকন। ওষুধ রফতানির নতুন বাজার খুললেও সেটি এখনই কোম্পানিটির ব্যবসাকে খুব বেশি স্ফীত করবে না, যা তাদের শেয়ারদর বাড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ার বিষয়টি দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। গত বছরের ২৬ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধি ও অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিশন। এরই মধ্যে এ কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি কোম্পানিটির সাম্প্রতিক শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টিও নজরে রয়েছে কমিশনের।

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি কমিশন নজরদারি করছে। কারা কারা কোম্পানিটির শেয়ার কিনছেন সেটি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কেউ যদি সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করে কোম্পানিটির শেয়ার কিনে এর দর বৃদ্ধির বিষয়টি প্রভাবিত করে, তাহলে সেক্ষেত্রে কমিশন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। সূত্র: বনিকবার্তা 

শেয়ার করুন

x
English Version

৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে বিকনের শেয়ার দর বেড়েছে ৮’শ শতাংশের বেশি!

আপডেট: ০৯:২৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ অগাস্ট ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে ওষুধ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। গত দুই বছরে কোম্পানিটির ব্যবসায় ৩৬ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদিও এ সময়ে এর শেয়ারদর বেড়েছে ৮০৮ শতাংশ। ফলে ব্যবসায় পিছিয়ে থাকলেও এরই মধ্যে শেয়ারদরে বেক্সিমকো ও একমিকে ছাড়িয়ে গেছে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস। যে গতিতে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছে, তাতে শীর্ষ ওষুধ কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারকেও ছাড়িয়ে যাবে যেকোনো সময়। অবশ্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বলছে, কোম্পানিটির অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি তাদের নজরদারিতে রয়েছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারদর পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৪ টাকা ৪০ পয়সা। সর্বশেষ এ বছরের ৫ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ২২১ টাকা ৭০ পয়সায়। এ সময় কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৮০৮ দশমিক ৬১ শতাংশ।

এদিকে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ব্যবসা ও মুনাফার তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৪৬৪ কোটি টাকা। এর বিপরীতে নিট মুনাফা হয়েছে ১১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর পরের ২০১৯-২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির আয় দাঁড়িয়েছে ৫৫৯ কোটি টাকায়। এ সময় কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৩৮ কোটি টাকা। আর সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৬৩৩ কোটি টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের আয়ের সঙ্গে ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের আয়ের তুলনা করলে দেখা যায়, এ সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। অবশ্য ২০২০-২১ হিসাব বছরের ১২ মাসের আয়ের তথ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি। আগের তিন প্রান্তিকের ব্যবসা প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বার্ষিক হিসাবেও কোম্পানিটির আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে ধারণা করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্য-প্রযুক্তি ও ক্লিনিক্যাল গবেষণার বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএ ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোর ব্যবসার ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে র্যাংকিং প্রকাশ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ র্যাংকিং অনুসারে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের অবস্থান ১৮ নম্বরে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের র্যাংকিংয়ে শীর্ষে রয়েছে। তাছাড়া বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস র্যাংকিংয়ে তিন ও একমি ল্যাবরেটরিজ ১১ নম্বরে রয়েছে। ডিএসইতে সর্বশেষ ৫ আগস্ট স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার ২২৬ টাকা ৮০ পয়সা, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার ১৮৯ টাকা ৮০ পয়সা ও একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ার ৮০ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার ডিএসইর পক্ষ থেকে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে এ বছরের মার্চে ডিএসইকে কোম্পানিটি জানায়, সিরিয়া সরকারের একটি কারিগরি দল গত ৮ মার্চ তাদের কারখানা পরিদর্শন করেছে। দলটির সদস্যরা কোম্পানিটির ওষুধ উৎপাদনের সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষও প্রকাশ করেছেন। সিরিয়া সরকার রাজি থাকলে তারা চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ ৫০ লাখ ডলারের ওষুধ রফতানি করতে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া এক বছরের মধ্যে এ রফতানি ১ কোটি ডলারে উন্নীত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটি হলে কোম্পানিটির আর্থিক পারফরম্যান্সে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে এ বিষয়ে কোনো লিখিত চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। তাছাড়া কভিড-১৯ পরিস্থিতি পুনরায় খারাপ হতে শুরু করায় এ চুক্তি কবে নাগাদ হতে পারে, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ওষুধ রফতানির বিষয়ে সিরিয়া সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন হওয়া মাত্র বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস স্টক এক্সচেঞ্জ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে তা অবগত করবে বলে সে সময় জানিয়েছিল।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের কোম্পানি সচিব খলিলুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, আমাদের ব্যবসায় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে এবং সেটি দৃশ্যমান। তবে শেয়ারদর যে হারে বাড়ছে তা কিছুটা অস্বাভাবিক। বাজারের বেশকিছু বিনিয়োগকারী আমাদের শেয়ারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠার কারণেই এর দর বাড়ছে বলে আমার মনে হয়। সিরিয়ায় ওষুধ রফতানির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় ও মুনাফা বেড়েছে। পাশাপাশি সিরিয়া ওষুধ রফতানির বিষয়টি নিয়েও বাজারে আলোচনা রয়েছে। রফতানি চুক্তি হয়ে গেলে কোম্পানির আয় ও মুনাফা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। এটিকে পুঁজি করে একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির শেয়ার কিনছেন। এতে প্রলুব্ধ হচ্ছেন অন্য বিনিয়োগকারীরাও। যার ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোম্পানিটির শেয়ারদর। ক্যান্সার প্রতিরোধী ওষুধ উৎপাদনে এক ধরনের ব্র্যান্ড ইমেজ গড়ে উঠলেও ব্যবসার আকারের বিবেচনায় শীর্ষ ওষুধ কোম্পানিগুলোর তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বিকন। ওষুধ রফতানির নতুন বাজার খুললেও সেটি এখনই কোম্পানিটির ব্যবসাকে খুব বেশি স্ফীত করবে না, যা তাদের শেয়ারদর বাড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ার বিষয়টি দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। গত বছরের ২৬ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধি ও অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিশন। এরই মধ্যে এ কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর ভিত্তিতে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি কোম্পানিটির সাম্প্রতিক শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টিও নজরে রয়েছে কমিশনের।

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি কমিশন নজরদারি করছে। কারা কারা কোম্পানিটির শেয়ার কিনছেন সেটি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কেউ যদি সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করে কোম্পানিটির শেয়ার কিনে এর দর বৃদ্ধির বিষয়টি প্রভাবিত করে, তাহলে সেক্ষেত্রে কমিশন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। সূত্র: বনিকবার্তা