০৮:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সহজে এলডিসি উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:১৯:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
  • / ১০৩৫৮ বার দেখা হয়েছে

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের সহজ উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এলডিসি থেকে সহজভাবে উত্তরণের জন্য সুইডেনের  সমর্থন ও সহযোগিতা চাইছি।’ বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে মঙ্গলবার (২৫ জুন) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করার সময় প্রধানমন্ত্রী এ সমর্থন কামনা করেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই উত্তরণের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানে সুইডেনকে অনুরোধ করেছেন।

জবাবে সুইডেনের দূত প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাদেরও এ ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে। সুইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে এবং এর বেশিরভাগই তৈরি পোশাকের (আরএমজি)। রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ এই খাতে (আরএমজি) সহযোগিতা প্রসারিত করবে এবং বিশেষ করে তারা জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশে তাদের প্রতিশ্রুতির কারণে সামাজিক ও পরিবেশগত দিকগুলিকে টেকসই রাখাকে অগ্রাধিকার দিতে চায়।

প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১ সম্পর্কে আলেকজান্দ্রা বলেন, এই ডিজিটাল যাত্রায় সুইডেন বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

এসময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সুইডেনের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু উঠলে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা সেখানকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, তারাও অনুকূল পরিবেশ বিরাজ না করলে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে বলবে না।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না করা পর্যন্ত তারা তাদের ফিরে যেতে বলতে পারবেন না।’

আরও পড়ুন: লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাদের চাকরি হারাচ্ছে এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থানে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ ভালো ব্যবস্থা করায় ভাষানচরে রোহিঙ্গারা উন্নত জীবনযাপন করতে পারছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায় উভয়ের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে তারা কক্সবাজারে আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ প্রকল্প নিশ্চিত করেছেন। প্রায় সাত বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উদারতারও প্রশংসা করেন তিনি।

করোনা মহামারি চলাকালে বাংলাদেশে এসেছিলেন উল্লেখ করে আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ মহামারি মোকাবিলায় দুর্দান্ত ব্যবস্থাপনা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সফল কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেছি, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’ তিনি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশি নারীরা অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও শক্ত-সামর্থ।

রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার তাদের আগ্রহের খাত এবং তারা এসব খাতে আরও উন্নতি ও স্বচ্ছতা আনার উপায় খুঁজে বের করতে সহযোগিতা বাড়াতে চান। তিনি বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এসময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

সহজে এলডিসি উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: ১১:১৯:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের সহজ উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এলডিসি থেকে সহজভাবে উত্তরণের জন্য সুইডেনের  সমর্থন ও সহযোগিতা চাইছি।’ বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে মঙ্গলবার (২৫ জুন) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করার সময় প্রধানমন্ত্রী এ সমর্থন কামনা করেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই উত্তরণের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানে সুইডেনকে অনুরোধ করেছেন।

জবাবে সুইডেনের দূত প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাদেরও এ ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে। সুইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে এবং এর বেশিরভাগই তৈরি পোশাকের (আরএমজি)। রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ এই খাতে (আরএমজি) সহযোগিতা প্রসারিত করবে এবং বিশেষ করে তারা জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশে তাদের প্রতিশ্রুতির কারণে সামাজিক ও পরিবেশগত দিকগুলিকে টেকসই রাখাকে অগ্রাধিকার দিতে চায়।

প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১ সম্পর্কে আলেকজান্দ্রা বলেন, এই ডিজিটাল যাত্রায় সুইডেন বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

এসময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সুইডেনের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু উঠলে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা সেখানকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, তারাও অনুকূল পরিবেশ বিরাজ না করলে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে বলবে না।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি না করা পর্যন্ত তারা তাদের ফিরে যেতে বলতে পারবেন না।’

আরও পড়ুন: লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাদের চাকরি হারাচ্ছে এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থানে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ ভালো ব্যবস্থা করায় ভাষানচরে রোহিঙ্গারা উন্নত জীবনযাপন করতে পারছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায় উভয়ের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে তারা কক্সবাজারে আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ প্রকল্প নিশ্চিত করেছেন। প্রায় সাত বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উদারতারও প্রশংসা করেন তিনি।

করোনা মহামারি চলাকালে বাংলাদেশে এসেছিলেন উল্লেখ করে আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ মহামারি মোকাবিলায় দুর্দান্ত ব্যবস্থাপনা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সফল কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেছি, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’ তিনি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশি নারীরা অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও শক্ত-সামর্থ।

রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার তাদের আগ্রহের খাত এবং তারা এসব খাতে আরও উন্নতি ও স্বচ্ছতা আনার উপায় খুঁজে বের করতে সহযোগিতা বাড়াতে চান। তিনি বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এসময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এসএইচ