১০:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

অগ্রহণযোগ্য কর হার ব্যবসা বানিজ্য প্রসারের অন্তরায়

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:০৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১৪০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে, তা ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

শনিবার (১০ এপ্রিল) ‘প্রাক-বাজেট আলোচনা : অর্থবছর ২০২১-২২’ শীর্ষক ওয়েবিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল ২৪ যৌথভাবে এ প্রাক-বাজেট সভা আয়োজন করে।

ড. মসিউর রহমান বলেন, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং এটিকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে, তা ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত না করে কী হারে রাজস্ব বাড়ানো যায়, তার একটি দিক-নির্দেশনা সরকারের ঠিক করা উচিত।

তিনি বলেন, ৭ থেকে ১০ বছরের জন্য একটি টেকসই ও সহনশীল কর কাঠামো দেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশের জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করে তিনি জানান, বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন হারে কর অব্যাহতি দেওয়ার কারণে জিডিপিতে করের অবদান কমছে।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ট্যাক্সের হার নির্ধারণ ও সরকারের ব্যয়ের বিষয়ে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের ওপর আরোপিত ট্যাক্স সেই নাগরিকের নিকট গ্রহণযোগ্য কি না, সে বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন পর্যায়ে মূসক আদায়ের ফলে অনেক ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে এর হার বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ঘন ঘন করের হার বাড়ানো-কমানো ঠিক নয়।

ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাজেট শুধুমাত্র কর আহরণের বিষয় নয়, এটি সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের একটি রূপরেখা। বর্তমানে আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছি, যেটা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। বাজেটে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের একটি সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের এসএমই খাতকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে এবং এসএমই খাতের জন্য আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকল্পে মাইক্রো ফাইন্যান্স ইন্সটিটিউটগুলোকে (এমএফআই) বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রণোদনা প্যাকেজ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের নিকট পৌঁছানো যায় তা বিবেচনায় রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক ও রেমিট্যান্সের পর আমাদের প্রবৃদ্ধির নিয়ামকগুলো কী হবে, সেগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। সেই সঙ্গে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে আমাদের একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য খাত নিয়েও চিন্তা করতে হবে এবং বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ খুবই জরুরি।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সরকার ব্যবসাবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থা, শিল্পায়নের বিকাশ এবং উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে যেতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

করোনা পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব বিবেচনায় বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা পূরণে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ যেমন- আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর, আর্থিক খাত, শিল্প ও বাণিজ্য এবং জ্বালানি, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো প্রভৃতি খাতসমূহকে বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। ওয়েবিনারে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে চারটি খাতের ওপর তাদের মত দেন।

ঢাকা/জেএইচ 

শেয়ার করুন

x
English Version

অগ্রহণযোগ্য কর হার ব্যবসা বানিজ্য প্রসারের অন্তরায়

আপডেট: ১১:০৪:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে, তা ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

শনিবার (১০ এপ্রিল) ‘প্রাক-বাজেট আলোচনা : অর্থবছর ২০২১-২২’ শীর্ষক ওয়েবিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল ২৪ যৌথভাবে এ প্রাক-বাজেট সভা আয়োজন করে।

ড. মসিউর রহমান বলেন, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং এটিকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে, তা ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত না করে কী হারে রাজস্ব বাড়ানো যায়, তার একটি দিক-নির্দেশনা সরকারের ঠিক করা উচিত।

তিনি বলেন, ৭ থেকে ১০ বছরের জন্য একটি টেকসই ও সহনশীল কর কাঠামো দেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশের জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করে তিনি জানান, বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন হারে কর অব্যাহতি দেওয়ার কারণে জিডিপিতে করের অবদান কমছে।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ট্যাক্সের হার নির্ধারণ ও সরকারের ব্যয়ের বিষয়ে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের ওপর আরোপিত ট্যাক্স সেই নাগরিকের নিকট গ্রহণযোগ্য কি না, সে বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন পর্যায়ে মূসক আদায়ের ফলে অনেক ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে এর হার বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ঘন ঘন করের হার বাড়ানো-কমানো ঠিক নয়।

ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাজেট শুধুমাত্র কর আহরণের বিষয় নয়, এটি সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের একটি রূপরেখা। বর্তমানে আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছি, যেটা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। বাজেটে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের একটি সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের এসএমই খাতকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে এবং এসএমই খাতের জন্য আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকল্পে মাইক্রো ফাইন্যান্স ইন্সটিটিউটগুলোকে (এমএফআই) বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রণোদনা প্যাকেজ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের নিকট পৌঁছানো যায় তা বিবেচনায় রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক ও রেমিট্যান্সের পর আমাদের প্রবৃদ্ধির নিয়ামকগুলো কী হবে, সেগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। সেই সঙ্গে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে আমাদের একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য খাত নিয়েও চিন্তা করতে হবে এবং বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ খুবই জরুরি।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সরকার ব্যবসাবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থা, শিল্পায়নের বিকাশ এবং উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে যেতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

করোনা পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব বিবেচনায় বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা পূরণে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ যেমন- আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর, আর্থিক খাত, শিল্প ও বাণিজ্য এবং জ্বালানি, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো প্রভৃতি খাতসমূহকে বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। ওয়েবিনারে সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করে চারটি খাতের ওপর তাদের মত দেন।

ঢাকা/জেএইচ