১০:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৩৬:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ৪১৪৬ বার দেখা হয়েছে

ক্যান্সারে আক্রান্ত অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)। শনিবার সকালে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি এ খবর নিশ্চিত করেছেন। আবদুল কাদেরের বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। 

জাহিদা ইসলাম জেমি জানান, হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবদুল কাদেরের মরদেহ মিরপুর ডিওএইচএসের বাসায় নেওয়া হবে। তার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেননি জেমি।

শারীরিকভাবে অসুস্থ আবদুল কাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে নেওয়া হয়। সেখানকার হাসপাতালে পরীক্ষার পর ১৫ ডিসেম্বর তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসকরা জানান, সারা শরীরে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। শারীরিক দুর্বলতার কারণে তাকে কেমোথেরাপিও দেওয়া যায়নি।

২০ ডিসেম্বর রোববার আবদুল কাদেরকে নিয়ে দেশে ফেরেন স্বজনরা। এরপর দিন তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২১ ডিসেম্বর তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে।

১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল কাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগ দেন। বিটপী ছাড়ার পর তিনি ৩৫ বছর বাটায় কাজ করেন।

১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ডাকসু নাট্যচক্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন আবদুল কাদের। তিনি থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীর যুগ্ম-সম্পাদকের ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। পরে ছিলেন থিয়েটারের পরিচালক (প্রশিক্ষণ)।

তার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’। বিটিভিতে শিশুকিশোরদের জন্য নাটক ‘এসো গল্পের দেশে’র মাধ্যমে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু তার। টিভিতে তিন হাজারের মতো নাটকে অভিনয় করেছেন। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’রও প্রিয় মুখ ছিলেন এ অভিনেতা।

এছাড়া টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদের (টেনাশিনাস) সহ-সভাপতি ছিলেন আবদুল কাদের। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মাটির কোলে’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘সবুজ সাথী’, ‘আগুন লাগা সন্ধ্যা’, ‘এই সেই কণ্ঠস্বর’, ‘আমার দেশের লাগি’, ‘সবুজ ছায়া’, ‘দীঘল গায়ের কন্যা’, ‘ভালমন্দ মানুষেরা’, ‘দূরের আকাশ’ অন্যতম। ‘রং নাম্বার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় ছাড়াও বেশকিছু বিজ্ঞাপনের কাজ করেছেন গুণী এ অভিনেতা।

অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ টেনাশিনাস পদক, মহানগরী সাংস্কৃতিক ফোরাম পদক, অগ্রগামী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, যাদুকর পি.সি. সরকার পদক, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, মহানগরী অ্যাওয়ার্ডসহ বেশকিছু পদক পেয়েছেন আবদুল কাদের।

শেয়ার করুন

x
English Version

অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই

আপডেট: ১০:৩৬:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০

ক্যান্সারে আক্রান্ত অভিনেতা আবদুল কাদের আর নেই (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)। শনিবার সকালে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি এ খবর নিশ্চিত করেছেন। আবদুল কাদেরের বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। 

জাহিদা ইসলাম জেমি জানান, হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবদুল কাদেরের মরদেহ মিরপুর ডিওএইচএসের বাসায় নেওয়া হবে। তার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেননি জেমি।

শারীরিকভাবে অসুস্থ আবদুল কাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৮ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে নেওয়া হয়। সেখানকার হাসপাতালে পরীক্ষার পর ১৫ ডিসেম্বর তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসকরা জানান, সারা শরীরে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। শারীরিক দুর্বলতার কারণে তাকে কেমোথেরাপিও দেওয়া যায়নি।

২০ ডিসেম্বর রোববার আবদুল কাদেরকে নিয়ে দেশে ফেরেন স্বজনরা। এরপর দিন তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২১ ডিসেম্বর তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে।

১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী থানার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল কাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর সিঙ্গাইর কলেজ ও লৌহজং কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগ দেন। বিটপী ছাড়ার পর তিনি ৩৫ বছর বাটায় কাজ করেন।

১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ডাকসু নাট্যচক্রের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন আবদুল কাদের। তিনি থিয়েটার নাট্যগোষ্ঠীর যুগ্ম-সম্পাদকের ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। পরে ছিলেন থিয়েটারের পরিচালক (প্রশিক্ষণ)।

তার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’। বিটিভিতে শিশুকিশোরদের জন্য নাটক ‘এসো গল্পের দেশে’র মাধ্যমে টিভি নাটকে অভিনয় শুরু তার। টিভিতে তিন হাজারের মতো নাটকে অভিনয় করেছেন। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’রও প্রিয় মুখ ছিলেন এ অভিনেতা।

এছাড়া টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদের (টেনাশিনাস) সহ-সভাপতি ছিলেন আবদুল কাদের। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মাটির কোলে’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘শীর্ষবিন্দু’, ‘সবুজ সাথী’, ‘আগুন লাগা সন্ধ্যা’, ‘এই সেই কণ্ঠস্বর’, ‘আমার দেশের লাগি’, ‘সবুজ ছায়া’, ‘দীঘল গায়ের কন্যা’, ‘ভালমন্দ মানুষেরা’, ‘দূরের আকাশ’ অন্যতম। ‘রং নাম্বার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় ছাড়াও বেশকিছু বিজ্ঞাপনের কাজ করেছেন গুণী এ অভিনেতা।

অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ টেনাশিনাস পদক, মহানগরী সাংস্কৃতিক ফোরাম পদক, অগ্রগামী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, যাদুকর পি.সি. সরকার পদক, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম অ্যাওয়ার্ড, মহানগরী অ্যাওয়ার্ডসহ বেশকিছু পদক পেয়েছেন আবদুল কাদের।