১১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

অর্থনীতি পুনঃরুদ্ধারের বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছে ডিসিসিআই

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৫১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুন ২০২১
  • / ৪১৭৯ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বাজেটে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষি পুনর্বাসন, সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বৃদ্ধিকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে ডিসিসিআই। বিশেষত আয়কর ও ভ্যাট হার হ্রাস, গ্রস রিসিট, গবেষণা এবং আমদানি কাঁচামালের উপর অগ্রিম কর হ্রাস করা, স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করায় ধন্যবাদ জানিয়েছে ব্যাবসায়ীদের এই সংগঠনটি। তাছাড়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি সময়োপযোগী বলে মনে করছে ডিসিসিআই।

তবে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঘোষিত সরকারি সহায়তা সহজতর উপায়ে ব্যবসায়ীদের প্রদান করা গেলে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঘোষিত বাজেট সহায়ক হবে বলে ডিসিসিআই মনে করে। পাশাপাশি, অর্থনৈতিক ক্ষতি যথাযথভাবে নিরুপণ করে প্রণোদনা প্যাকেজের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছে। বর্তমান বাজেটে রাজস্ব ঘাটতি ও অর্থায়ন একটি চ্যালেঞ্জ।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপির এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে করোনা সংক্রমণ রোধ করা এবং সবার জন্য করোনা টিকা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী। যদিও এটি একটি ব্যয়বহুল বাজেট, এর মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের আর্থিক প্রণোদনা, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় বৃদ্ধি ও জনগণকে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় বরাদ্দে উদ্যোগ থাকার কারণে জীবন জীবিকার ভারসাম্য রক্ষায় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেট হয়েছে বলে ডিসিসিআই বিশ্বাস করে। তবে এত বড় বাজেট বাস্তবায়ন অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হবে, তাই রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানায় ঢাকা চেম্বার। এই অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণের জন্য করের আওতা বাড়ানো, অনাদায়ী কর আদায়, জেলা শহরের রাজস্ব আদায় বাড়ানো, স্বচ্ছতা ও কর প্রদান প্রক্রিয়ায় অটোমেশন প্রয়োজন। বেসরকারি বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান করদাতাদের উপর নতুন করে করের বোঝা আরোপ না করে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। সেভিংস সার্টিফিকেট, সমবায় নিবন্ধন, পোস্টাল সেভিংস এর ক্ষেত্রে ই-টিন বাধ্যতামূলক করায় কর সংগ্রহের আওতা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করে ডিসিসিআই।

নতুন বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ রয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। সাধারণত ঘাটতি বাজেট ৫% হয়ে থাকে, যা গত বছর ৬ দশমিক ১ শতাংশ ছিল। তাই করোনাকালীন সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে এই ঘাটতি বাজেট সহনশীল বলে ঢাকা চেম্বার মনে করে, যা জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যয় হতে পারে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেট পূরণে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নিবে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা কোটি টাকা যা বিগত অর্থবছরে সংশোধিত ঘাটতি বাজেটের ঋণের তুলনায় ১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ কম।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে এ অর্থবছরে লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির ২দশমিক ৫ শতাংশ কর্পোরেট কর হার হ্রাস করা হয়েছে। এই ব্যবসা বান্ধব উদ্যোগের জন্য ডিসিসিআই সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছে। তবে কর্পোরেট কর হার পর্যায়ক্রমে আরও হ্রাস করা প্রয়োজন যাতে কোভিড পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারে। পাশাপাশি, বাজেটে নতুন শিল্পে যেমন: হোম অ্যাপলায়েন্স, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোবাইল, তথ্যপ্রযুক্তি কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ওয়ান পার্সন কোম্পানির ক্ষেত্রে কর্পোরেট কর হার ২৫ শতাংশ র্নিধারণ করা হয়েছে। ডিসিসিআই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়, তবে পর্যায়ক্রমে এই কর হার আরও কমানোর জোর দাবি জানায়। তাতে করে ক্ষুদ্র ও ছোট বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবে।

বাজেটে দেশীয় শিল্পের বিকাশে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশে হোম এপ্লায়েন্স সামগ্রী তথ্যপ্রযুক্তি, সিমেন্ট, স্টিল, ইলেকট্রনিক ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

করোনাকালীন সময়ে বিশ্বব্যাপী রপ্তানি চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। তাই রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প, চামড়া, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতপণ্য এবং ঔষধ পণ্যসমূহের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম আয়কর অব্যহতি যৌক্তিককরনের পাশাপাশি আমদানিকৃত ফল ও সবজিতে ৫ শতাংশ হারে কর বাড়ানো হয়েছে তা হ্রাস করার প্রস্তাব করেছে ডিসিসিআই।

এসএমইর প্রতিষ্ঠানের মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে ১ শতাংশ কর ছাড় দেওয়া হবে। সিএমএসএমই খাতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম প্রনোদনা প্যাকেজের মতো আরও বড় আকারের প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা করা উচিত বলে সংগঠনটি মনে করে। একইসঙ্গে তারা মনে করে, এসকল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণ পৌছানোর জন্য প্রয়োজনীয় বাধাসমূহ দূর করে তা সহজীকরণ করা প্রয়োজন। সকল সিএমএসএমইদের মাঝে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে একটি সিএমএসএমই ন্যাশনাল ডাটাবেজ প্রণয়ন ও সিএমএসএমই’র সংজ্ঞা পুনঃসংজ্ঞায়ন করা দরকার।

ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণ বাজেটের ঘাটতি ব্যয় মেটাতে আর্থিক খাতের উপর নির্ভরতা তৈরি করবে উল্লেখ করে সংগঠনটি অনুরোধ জানায়, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণপ্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও খেলাপি ঋণ আদায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত ব্যতীত বিকল্প অর্থ সংস্থানের জন্য শক্তিশালী পুঁজিবাজার ও বন্ড মার্কেট গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

ডিসিসিআই মনে করে, ব্যক্তি শ্রেণী উদ্যোক্তাদের সুবিধা দেওয়ার জন্য সর্বনিন্ম টার্নওভার কর হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে মূন্য দশমিক ২৫শতাংশ করা হয়েছে যা উদ্যোক্তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখবে। বাজেটে অটোমোবাইল শিল্পের সম্প্রসারণে ২০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা অটোমোবাইল (থ্রি হুইলার ও ফোর হুইলার) শিল্পের বিকাশ এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। তবে বাজেটে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা মোট বিনিয়োগ জিডিপির ২৩ শতাংশ এবং তা ২৫ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যে এই খাতের ঋণ প্রবাহ আরো বাড়ানো প্রয়োজন।

এবারের বাজেটে অধিক খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরন, সেচ ও বীজ প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন এবং সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা হয়েছে যা দেশের খাদ্য উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ডিসিসিআই বিশ্বাস করে।

কোভিড-১৯ মোকাবেলায় টিকাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য ২৫ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্য পণ্য ও ঔষধ শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে হ্রাসকৃত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বাজেটে ২০০-২৫০ বেডের হাসপাতাল করার উদ্যোগ গ্রহনকারীদের ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধার বিধান রাখা হয়েছে। ঢাকা চেম্বার আশা করে, এ অতিরিক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ এবং করঅবকাশ স্বাস্থ্যখাতের চলমান অবকাঠামোগত অবস্থানের সার্বিক উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে।

ঢাকা/এসআর

শেয়ার করুন

x
English Version

অর্থনীতি পুনঃরুদ্ধারের বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছে ডিসিসিআই

আপডেট: ০৭:৫১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুন ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: বাজেটে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষি পুনর্বাসন, সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বৃদ্ধিকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে ডিসিসিআই। বিশেষত আয়কর ও ভ্যাট হার হ্রাস, গ্রস রিসিট, গবেষণা এবং আমদানি কাঁচামালের উপর অগ্রিম কর হ্রাস করা, স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করায় ধন্যবাদ জানিয়েছে ব্যাবসায়ীদের এই সংগঠনটি। তাছাড়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি সময়োপযোগী বলে মনে করছে ডিসিসিআই।

তবে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঘোষিত সরকারি সহায়তা সহজতর উপায়ে ব্যবসায়ীদের প্রদান করা গেলে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঘোষিত বাজেট সহায়ক হবে বলে ডিসিসিআই মনে করে। পাশাপাশি, অর্থনৈতিক ক্ষতি যথাযথভাবে নিরুপণ করে প্রণোদনা প্যাকেজের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছে। বর্তমান বাজেটে রাজস্ব ঘাটতি ও অর্থায়ন একটি চ্যালেঞ্জ।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপির এই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে করোনা সংক্রমণ রোধ করা এবং সবার জন্য করোনা টিকা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী। যদিও এটি একটি ব্যয়বহুল বাজেট, এর মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ব্যবসায়ীদের আর্থিক প্রণোদনা, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যয় বৃদ্ধি ও জনগণকে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় বরাদ্দে উদ্যোগ থাকার কারণে জীবন জীবিকার ভারসাম্য রক্ষায় এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেট হয়েছে বলে ডিসিসিআই বিশ্বাস করে। তবে এত বড় বাজেট বাস্তবায়ন অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হবে, তাই রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানায় ঢাকা চেম্বার। এই অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণের জন্য করের আওতা বাড়ানো, অনাদায়ী কর আদায়, জেলা শহরের রাজস্ব আদায় বাড়ানো, স্বচ্ছতা ও কর প্রদান প্রক্রিয়ায় অটোমেশন প্রয়োজন। বেসরকারি বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান করদাতাদের উপর নতুন করে করের বোঝা আরোপ না করে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। সেভিংস সার্টিফিকেট, সমবায় নিবন্ধন, পোস্টাল সেভিংস এর ক্ষেত্রে ই-টিন বাধ্যতামূলক করায় কর সংগ্রহের আওতা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করে ডিসিসিআই।

নতুন বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ রয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। সাধারণত ঘাটতি বাজেট ৫% হয়ে থাকে, যা গত বছর ৬ দশমিক ১ শতাংশ ছিল। তাই করোনাকালীন সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে এই ঘাটতি বাজেট সহনশীল বলে ঢাকা চেম্বার মনে করে, যা জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যয় হতে পারে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেট পূরণে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার ঋণ নিবে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা কোটি টাকা যা বিগত অর্থবছরে সংশোধিত ঘাটতি বাজেটের ঋণের তুলনায় ১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ কম।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে এ অর্থবছরে লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির ২দশমিক ৫ শতাংশ কর্পোরেট কর হার হ্রাস করা হয়েছে। এই ব্যবসা বান্ধব উদ্যোগের জন্য ডিসিসিআই সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছে। তবে কর্পোরেট কর হার পর্যায়ক্রমে আরও হ্রাস করা প্রয়োজন যাতে কোভিড পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ীরা টিকে থাকতে পারে। পাশাপাশি, বাজেটে নতুন শিল্পে যেমন: হোম অ্যাপলায়েন্স, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোবাইল, তথ্যপ্রযুক্তি কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ওয়ান পার্সন কোম্পানির ক্ষেত্রে কর্পোরেট কর হার ২৫ শতাংশ র্নিধারণ করা হয়েছে। ডিসিসিআই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়, তবে পর্যায়ক্রমে এই কর হার আরও কমানোর জোর দাবি জানায়। তাতে করে ক্ষুদ্র ও ছোট বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবে।

বাজেটে দেশীয় শিল্পের বিকাশে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশে হোম এপ্লায়েন্স সামগ্রী তথ্যপ্রযুক্তি, সিমেন্ট, স্টিল, ইলেকট্রনিক ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, যা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

করোনাকালীন সময়ে বিশ্বব্যাপী রপ্তানি চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। তাই রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প, চামড়া, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতপণ্য এবং ঔষধ পণ্যসমূহের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম আয়কর অব্যহতি যৌক্তিককরনের পাশাপাশি আমদানিকৃত ফল ও সবজিতে ৫ শতাংশ হারে কর বাড়ানো হয়েছে তা হ্রাস করার প্রস্তাব করেছে ডিসিসিআই।

এসএমইর প্রতিষ্ঠানের মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে ১ শতাংশ কর ছাড় দেওয়া হবে। সিএমএসএমই খাতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম প্রনোদনা প্যাকেজের মতো আরও বড় আকারের প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা করা উচিত বলে সংগঠনটি মনে করে। একইসঙ্গে তারা মনে করে, এসকল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কাছে ঋণ পৌছানোর জন্য প্রয়োজনীয় বাধাসমূহ দূর করে তা সহজীকরণ করা প্রয়োজন। সকল সিএমএসএমইদের মাঝে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে একটি সিএমএসএমই ন্যাশনাল ডাটাবেজ প্রণয়ন ও সিএমএসএমই’র সংজ্ঞা পুনঃসংজ্ঞায়ন করা দরকার।

ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণ বাজেটের ঘাটতি ব্যয় মেটাতে আর্থিক খাতের উপর নির্ভরতা তৈরি করবে উল্লেখ করে সংগঠনটি অনুরোধ জানায়, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণপ্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও খেলাপি ঋণ আদায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাত ব্যতীত বিকল্প অর্থ সংস্থানের জন্য শক্তিশালী পুঁজিবাজার ও বন্ড মার্কেট গঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

ডিসিসিআই মনে করে, ব্যক্তি শ্রেণী উদ্যোক্তাদের সুবিধা দেওয়ার জন্য সর্বনিন্ম টার্নওভার কর হার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে মূন্য দশমিক ২৫শতাংশ করা হয়েছে যা উদ্যোক্তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখবে। বাজেটে অটোমোবাইল শিল্পের সম্প্রসারণে ২০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা অটোমোবাইল (থ্রি হুইলার ও ফোর হুইলার) শিল্পের বিকাশ এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। তবে বাজেটে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা মোট বিনিয়োগ জিডিপির ২৩ শতাংশ এবং তা ২৫ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যে এই খাতের ঋণ প্রবাহ আরো বাড়ানো প্রয়োজন।

এবারের বাজেটে অধিক খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরন, সেচ ও বীজ প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন এবং সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা হয়েছে যা দেশের খাদ্য উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ডিসিসিআই বিশ্বাস করে।

কোভিড-১৯ মোকাবেলায় টিকাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য ২৫ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্য পণ্য ও ঔষধ শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে হ্রাসকৃত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বাজেটে ২০০-২৫০ বেডের হাসপাতাল করার উদ্যোগ গ্রহনকারীদের ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধার বিধান রাখা হয়েছে। ঢাকা চেম্বার আশা করে, এ অতিরিক্ত বরাদ্দকৃত অর্থ এবং করঅবকাশ স্বাস্থ্যখাতের চলমান অবকাঠামোগত অবস্থানের সার্বিক উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে।

ঢাকা/এসআর